অজন্তাকে সাসপেন্ড করবে সিপিএম! জাগো বাংলায় লেখায় কেউ ব্যথিত হলে দুঃখিত, পার্টিকে চিঠি অনিল কন্যার

সিপিএমের প্রয়াত রাজ্য সম্পাদক অনিল বিশ্বাসের মেয়ে অজন্তাকে কি পার্টি থেকে সাময়িক সাসপেন্ড করতে চলেছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট? এই প্রশ্ন জোরালো হচ্ছে পার্টির অন্দরে। কারণ, তৃণমূলের মুখপত্র জাগো বাংলায় প্রকাশিত অজন্তা বিশ্বাসের ধারাবাহিক লেখা।
২১ জুলাই তৃণমূলের শহিদ দিবসের দিন থেকে দলীয় মুখপত্র জাগো বাংলা দৈনিক সংবাদপত্র হিসেবে প্রকাশ পাচ্ছে। তারপর থেকে একটি বিশেষ কারণে তা বিতর্কের কেন্দ্রে। যে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু সিপিএমের প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক প্রয়াত অনিল বিশ্বাসের মেয়ে অজন্তার কলম।

তৃণমূলের মুখপত্র জাগো বাংলায় দীর্ঘ উত্তর সম্পাদকীয় লিখেছেন রবীন্দ্রভারতীর অধ্যাপক ডক্টর অজন্তা বিশ্বাস, যা ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছে। লেখার উপজীব্য রাজনীতিতে বাঙালি নারীর প্রভাব ও অবদান। স্বাধীনতার আগে ও পরে রাজ্য রাজনীতিতে নারীর অবদান সহ অনিল বিশ্বাসের মেয়ের লেখায় উঠে এসেছে সমসাময়িক ঘটনাপ্রবাহের ভিত্তিতে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির মূল্যায়ন। প্রেসিডেন্সির প্রাক্তনী রবীন্দ্রভারতীর ইতিহাসের অধ্যাপকের মতে সক্রিয় রাজনীতিতে মমতার উত্থান বাংলার রাজনৈতিক পরিসরে মহিলাদের সামগ্রিক অবস্থানে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছে। কন্যাশ্রী, রুপশ্রী প্রভৃতি প্রকল্পের মাধ্যমে মমতা বাংলার মেয়েদের আরও কাছে এসেছেন।

রবীন্দ্রভারতীর ইতিহাসের অধ্যাপক বাংলার রাজনীতিতে নারীর প্রভাব নিয়ে নিবন্ধ লিখছেন তাতে আপাতদৃষ্টিতে আপত্তির কিছু নেই। কিন্তু নিবন্ধকারের নাম সিপিএম সদস্য অজন্তা বিশ্বাস এবং নিবন্ধটি তৃণমূলের মুখপত্রে প্রকাশ পাওয়ায় ঝড় উঠেছে সিপিএমের অন্দরে। জাগো বাংলায় অজন্তা বিশ্বাসের লেখা প্রকাশ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছেন আলিমুদ্দিনের নেতারা। সিপিএম পার্টি সদস্য অজন্তা বিনা অনুমতিতে তৃণমূলের মুখপত্রে কীভাবে লেখেন তা জানতে চান তাঁরা। দলের এক শীর্ষ নেতা এ নিয়ে কথাও বলেন অজন্তার সঙ্গে। সূত্রের খবর, ক্ষমা চাওয়ার প্রসঙ্গ কার্যত উড়িয়ে অজন্তা একটি চিঠি দিয়েছেন পার্টিকে। তাতে তিনি লিখেছেন, আমার লেখায় কেউ ব্যথিত হলে বা আঘাত পেয়ে থাকলে আমি দুঃখিত। অজন্তা যে ভুল স্বীকার বা ক্ষমা চাওয়ার পথে হাঁটবেন না তা চিঠির ভাষা দেখেই বুঝেছেন সিপিএম নেতৃত্ব। তাই সিদ্ধান্ত হয়েছে তৃণমূলের মুখপত্রের লেখার জন্য অনিল কন্যাকে শোকজ করা হবে।

প্রেসিডেন্সিতে পড়াকালীন সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন অজন্তা বিশ্বাস। কলকাতা জেলা থেকে এখনও সিপিএমের পার্টি সদস্য তিনি।

এই পরিস্থিতিতে জাগো বাংলায় লেখার জন্য পার্টি সদস্য অজন্তা বিশ্বাস ক্ষমা না চাইলে তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সিপিএম সূত্রে খবর। যদিও ক্ষমা চাওয়ার রাস্তায় অনিল বিশ্বাসের মেয়ে হাঁটবেন না বলেই তাঁর সঙ্গে কথা বলে ও তাঁর চিঠি পড়ে পার্টি নেতৃত্বের ধারণা। তবে তাঁরা অপেক্ষা করছেন অজন্তা শোকজের কী জবাব দেন তার জন্য। জানা যাচ্ছে, অনিল কন্যা ভুল স্বীকার না করলে তাঁকে দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সর্বোচ্চ এক বছর পর্যন্ত সাসপেন্ড করা হতে পারে।

Comments are closed.