সংযুক্ত মোর্চা পাবে ১৯০ আসন, নাড়ি টিপে বলছেন গরিবের ডাক্তার ফুয়াদ হালিম
নিজের নার্সিংহোমে ৫০ টাকার বিনিময়ে ডায়ালিসিস করে খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিলেন
নাম তাঁর ফুয়াদ হালিম। কিন্তু ওই নামে কেউ চিনলে হয়! বরং গরিবের ডাক্তার নামেই তাঁকে চেনেন মানুষ। সেই গরিবের ডাক্তারবাবু নিজে রাজনীতি এবং ডাক্তারিকে আলাদা করে দেখতে রাজি নন। ডাক্তারিটা আমার মতাদর্শের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে, জানালেন বালিগঞ্জের সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত সিপিএম প্রার্থী ডাক্তার ফুয়াদ হালিম।
লকডাউনে চিকিৎসা ব্যবস্থা যখন বিপর্যস্ত, সেই সময় নিজের নার্সিংহোমে ৫০ টাকার বিনিময়ে ডায়ালিসিস করে খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিলেন। এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে জানালেন, ২৫ বছর আগে যখন প্র্যাকটিস শুরু করেছিলাম তখনই জানতাম কী করতে চাই। রাজনীতি এবং ডাক্তারির দিশা একটাই, মানুষ।
২৬ এপ্রিল বালিগঞ্জে ভোট। প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণার পরেই কোমর বেঁধে প্রচারে নেমে পড়েছেন। পার্টি কমরেডেদের সঙ্গে নিয়ে ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে মিটিং করছেন। সেই সঙ্গে মানুষের বাড়ি গিয়েও কথা বলছেন। প্রত্যেকের সমস্যা শুনছেন মন দিয়ে, নথিভুক্ত করছেন। জোর দিয়েছেন সামাজিক মাধ্যমে প্রচারেও।
বিপরীতে বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ তৃণমূলের প্রার্থী সুব্রত মুখার্জি। ১৯৭১ সালে প্রথম বালিগঞ্জ থেকে নির্বাচিত হয়ে বিধানসভায় যান সুব্রত মুখার্জি। এমন এক হেভিওয়েটের বিরুদ্ধে আপনি, জয়ের ব্যাপারে কতটা নিশ্চিত? সিপিএম প্রার্থীর কটাক্ষ, আমার চিন্তা এখানে তৃণমূল, বিজেপির যাঁরা প্রার্থী হয়েছেন তাঁরা শেষ পর্যন্ত নিজের দলে থাকবেন তো!
একজন চিকিৎসক হিসেবে রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের প্রশংসা করার কথা আপনার। তৃণমূল, এবং বিজেপিকে একযোগে আক্রমণ করে সিপিএম প্রার্থীর দাবি, এই ধরণের প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারি কোষাগার থেকে একটি বড় অঙ্কের টাকা বেসরকারি হাসপাতালগুলোর কাছে চলে যাচ্ছে। তাঁর অভিযোগ, সাধারণ মানুষের প্রিমিয়ামের টাকায় ইন্সুরেন্স কোম্পানিগুলোর যথেষ্ট মুনাফা হচ্ছে না, তাই সরকারি টাকায় প্রাইভেট কোম্পনিগুলোকে মুনাফা পাইয়ে দিতে কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকার এই পরিকল্পনা করছে। সেই সঙ্গে তিনি এও বলেন, সরকারের আগে উচিত প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র গুলির পরিকাঠামোর উন্নয়ন করা, যাতে প্রান্তিক মানুষের কাছে চিকিৎসা পৌঁছায়।
[আরও পড়ুন- শাহের পঞ্চবাণেই বাংলায় BJP বধের ব্লু-প্রিন্ট পিকের! জানেন কোন পাঁচ কৌশল?]
২০১৯ এর লোকসভা ভোটে সিপিএমের ভোট শতাংশ কার্যত তলানিতে ঠেকে, এই বিষয়ে বলতে গিয়ে সিপিএম প্রার্থী রামের ভোট বামে যাওয়ার তথ্যটি এক প্রকার মেনেই নিলেন। বললেন, তৃণমূল থেকে বাঁচতে মানুষ বিজেপিকে ভোট দিয়েছিলেন, বিজেপি থেকে বাঁচতে তৃণমূলকে। সেইসঙ্গে তাঁর দাবি, কিন্তু বাস্তবে তো দুটো দল আলাদা নয়। মানুষ এখন তা বুঝে গিয়েছেন, বলছেন গরিবের ডাক্তারবাবু।
ডাক্তারি, ভোট প্রচার, দলের কাজ সবই সামলাচ্ছেন দক্ষ হাতে। অবসর কার্যত নেই তাঁর রোজনামচায়। জানালেন, যেটুকু সময় পান তা পরিবারের সঙ্গেই কাটান। নিজের পরীক্ষার পাশাপাশি মেয়েরও পরীক্ষা সামনে। সময় পেলে তাই মেয়েকেও পড়াচ্ছেন একুশের নির্বাচনে আলিমুদ্দিনের অন্যতম সৈনিক। ২ মে’র ফলাফল কী হবে? গরিবের ডাক্তারবাবুর আত্মবিশ্বাসী উত্তর, সংযুক্ত মোর্চা ১৮০ থেকে ১৯০ টি আসন পাচ্ছে।
Comments are closed.