স্বাস্থ্যভবন থেকে সঙ্কটজনক রোগীদের ২৪ ঘণ্টা নজরদারি, তিন শিফটে দায়িত্বে ২৫ চিকিৎসক, নয়া উদ্যোগ নবান্নের
রাজ্যে করোনা মোকাবিলায় নয়া পরিকল্পনা নিল মমতা ব্যানার্জি সরকার। এবার পোর্টালের মাধ্যমে করোনা সংক্রমিত সঙ্কটজনক রোগীর উপর নিয়মিত নজরদারি করবে স্বাস্থ্য দফতর। তিন শিফটে ২৫ জন করে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার কন্ট্রোল রুম থেকে নির্ধারণ করবেন গুরুতর অসুস্থ কোভিড রোগীদের চিকিৎসার গাইডলাইন।
করোনা মোকাবিলায় রাজ্যে বিশেষ দল বা টাস্ক ফোর্স তৈরি হয়েছে। তাছাড়া রয়েছে বিশেষজ্ঞ কমিটি, কন্ট্রোল রুম এবং ক্যুইক রেসপন্স টিম। কিন্তু তা সত্ত্বেও সঙ্কটজনক রোগীদের নজরদারির ক্ষেত্রে কিছু সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছিল রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। সেই সমস্যা দূর করতে নবান্ন এবার ক্রিটিক্যাল পেশেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম শুরু করছে। এই ব্যবস্থায় স্বাস্থ্যভবনে বসে একটি ওয়েব পোর্টালের সাহায্যে সঙ্কটজনক রোগীদের উপর ধারাবাহিক নজরদারি চালাবেন বিশেষজ্ঞরা। এ জন্য রাজ্যের প্রতিটি হাসপাতালকে নির্দিষ্ট সময় অন্তর রিপোর্ট করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার সেই পোর্টাল আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হওয়ার কথা।
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রাজ্যে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ১ হাজার ৫৩৬। গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলায় করোনা পজিটিভ পাওয়া গিয়েছে প্রায় আড়াই হাজার মানুষের। মৃত্যু হয়েছে ৪৬ জনের। তবে এমন পরিস্থিতিতেও আশা জাগাচ্ছেন কোভিডজয়ীরা। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে সুস্থ হয়েছেন প্রায় ২ হাজার ১৪০ জন। ফলে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রাজ্যে কোভিডকে জয় করে ঘরে ফিরলেন মোট ৪৬ হাজার ২৫৬ জন। নবান্ন সূত্রে খবর, হাসপাতালে ভর্তি ৫ থেকে ১০ শতাংশ করোনা রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। রাজ্যের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে এমন ১ হাজার ৪০০ জন সঙ্কটাপন্ন রোগী রয়েছেন। যাদের ২৪ ঘণ্টা বিশেষজ্ঞদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে। নবান্নের একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, করোনায় অধিকাংশ মৃত্যু হয়েছে সকালবেলা। ঠিকঠাক নজরদারির অভাবে এমন বেশ কিছু মৃত্যুর ঘটনা হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। বেশ কিছু ক্ষেত্রে সঙ্কটজনক রোগীদের প্রোটোকল মেনে চলাতেও খামতি চোখে পড়েছে প্রোটোকল ম্যানেজমেন্ট টিমের বিশেষজ্ঞদের। তাই আশঙ্কাজনক কোভিড রোগীদের কথা ভেবে আলাদা করে কোভিড পেশেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম চালু করছে রাজ্য সরকার।
কীভাবে কাজ করবে পোর্টাল?
নবান্ন সূত্রে খবর, প্রতিটি হাসপাতালে নির্দিষ্ট সময় অন্তর সঙ্কটজনক রোগীর কাছে গিয়ে তাঁর শারীরিক অবস্থার বিবরণ ট্যাব এর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট পোর্টালে তুলে ধরবেন চিকিৎসক বা নার্স। স্বাস্থ্যভবনের কন্ট্রোল রুমে থাকা বিশেষজ্ঞরা সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে চিকিৎসার গাইডলাইন নির্ধারণ করবেন। মোট তিন শিফটে ২৫ জন করে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার থাকবেন কন্ট্রোল রুমে। সমগ্র ব্যবস্থার উপর সরাসরি নজরদারি করবে নবান্ন।
Comments are closed.