আমফানের চেয়েও বড় হতে চলেছে ঘূর্ণিঝড় যশ, বললেন মুখ্যমন্ত্রী, চূড়ান্ত প্রস্তুতি প্রশাসনে
যশ মোকাবিলায় রাজ্য প্রশাসনের প্রস্তুতির সম্পূর্ণ খতিয়ান তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি
বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় যশ বুধবার দুপুর নাগাদ ওড়িশার পারাদ্বীপ এবং বাংলার সাগরদ্বীপের মাঝে আছড়ে পড়তে চলেছে। ইতিমধ্যেই উপকূলীয় অঞ্চলে শুরু হয়ে গেছে ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে ভারি বৃষ্টি এবং দমকা হাওয়া।
সোমবার সাংবাদিক সম্মেলনে যশ মোকাবিলায় রাজ্য প্রশাসনের প্রস্তুতির সম্পূর্ণ খতিয়ান তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
সাংবাদিকদের তিনি জানান, সরকারের সব এজেন্সিকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে সেনা বাহিনীকেও। বুধবার দুপুরে ল্যান্ডফল হবে ঘূর্ণিঝড় যশের। আমরা ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় তৈরি আছি। মুখ্যমন্ত্রী জানান, আমফানের চেয়েও বড় হতে চলেছে ঘূর্ণিঝড় যশ।
আরও পড়ুনঃ যশ মোকাবিলায় প্রশাসনের নেতৃত্বে মমতা, মঙ্গল ও বুধে থাকবেন উপান্নর কন্ট্রোল রুমে
মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, উপকূলীয় এলাকা থেকে ১০ লক্ষ মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। কী করবেন আর কী করবেন না, লোকাল চ্যানেল ও রেডিওয় সাধারণ মানুষকে সতর্ক বার্তায় তা জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন মমতা ব্যানার্জি। লাগাতার ৪৮ ঘণ্টা পরিস্থিতির উপর তিনি নজর রাখছেন বলে জানিয়েছেন। মঙ্গলবার রাত থেকে তিনি নবান্নেই থাকবেন টানা দু’দিন। সাংবাদিকদেরও সেখানে থাকার কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রসঙ্গত আমফানের সময় সারা রাত নবান্নের কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জেনেশুনে জীবনের ঝুঁকি নেবেন না। দু’তিনটে দিন ত্রাণ শিবিরে থাকুন। মমতার কথায়, প্রাণ গেলে সব গেল। তাই প্রাণ বাঁচানোই আমাদের অগ্রাধিকার। পাশাপাশি সংবাদ মাধ্যমের বন্ধুদের বলব, আপনাদের কাছ থেকে পুরো সহযোগিতা চাই। দয়া করে মানুষকে আতঙ্কিত করবেন না। ঝড় শেষ হয়ে যাওয়ার পর আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কাজে নেমে পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টায় কোনও ত্রুটি রাখব না।
যশের প্রভাবে সবচেয়ে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, দুই মেদিনীপুর, কলকাতা, দুই চব্বিশ পরগনায় ঝড়ের প্রকোপ তো পড়বেই। তবে মালদহ, দুই দিনাজপুর, দার্জিলিং এবং কালিম্পংয়ে বৃষ্টি চলবে। পাশাপাশি জানান, নবান্ন এবং উপান্ন কাল থেকে ৪৮ ঘণ্টা সারাক্ষণ নজরদারি চলবে। উদ্ধারকার্য চালানোর জন্য দল তৈরি করা হয়েছে।
আমফানের সময় শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ে সমস্যা হয়েছিল। এবার যাতে তা না হয় সেজন্য আগে থেকেই তৈরি ১ হাজারটি টিম। মোবাইল ও ইন্টারনেট পরিষেবা স্বাভাবিক করতে ৪৫০ টি টেলিকম টিম গঠন করা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগকেও এই কাজে মোতায়েন করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, কলকাতায় মোতায়েন করা হয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ১০ টি, সিভিল ডিফেন্সের ১০ টি, বন দফতরের ১৬ টি এবং কলকাতা পুলিশের ২২ টি দল।
Comments are closed.