কলকাতার রাস্তায় ফিরল দোতলা বাস, পুজোর মরসুমে লন্ডনের আদলে হুড খোলা দোতলা বাস পরিষেবার সূচনা মুখ্য মন্ত্রীর
শহরবাসীকে পুজো উপহার দিল রাজ্য সরকার। কলকাতার রাস্তায় ফিরে এল দোতলা বাস। এবার নীল-সাদা দোতলা বাসের হুড খোলা। পুজোর দিনগুলোতে শহরবাসীকে সাইট সিয়িং করানো হবে এই বাস ব্যবহার করে। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে পর্যটনের প্রসারে ঐতিহ্যের সঙ্গে সমন্বয় ঘটানো হবে আধুনিকতার। প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে কলকাতা কানেক্ট। রাজ্য পর্যটন দফতরের এই উদ্যোগ ইতিমধ্যেই সাড়া ফেলেছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।
মঙ্গলবার দোতলা বাস পরিষেবার সূচনা করেন মুখ্য মন্ত্রী। বাসে করে কলকাতার ঐতিহ্যকে সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশে শহরের ঐতিহ্যবাহী জায়গাগুলো ঘুরিয়ে দেখানো হবে। মমতা ব্যানার্জি বলেন, ২৩ অক্টোবর, সপ্তমীর দিন থেকে অনলাইনে বুকিং করা যাবে। পর্যটন দফতর সূত্রে খবর, টিকিটের দাম রাখা হবে সাধারণের সাধ্যের মধ্যেই।
আপাতত ২ টি ৪৫ আসন বিশিষ্ট হুড খোলা দোতলা বাসে শহর সফর করতে পারবেন সাধারণ মানুষ। পরবর্তীতে চাহিদার উপর নির্ভর করে আরও বাড়বে বাসের সংখ্যা। দোতলা বাসের ছাদ থাকছে না। তার বদলে মাথার উপর স্বচ্ছ ফাইবারের পর্দা। ফলে প্রবল গরম বা বর্ষায় মাথার উপর ঢাকনা রাখা নিয়ে চিন্তা ভাবনা করছেন পর্যটন দফতরের কর্তারা। আপাতত পুজোর মরসুমে হুড খোলা দোতলা বাসেই ফিরবে নস্টালজিয়া।
জামশেদপুরের বেবকোর তৈরি দোতলা হুডখোলা বাসে থাকবে সমস্ত আধুনিক সুবিধা। সেই সঙ্গে প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে যাত্রাপথকে আরও মসৃন করে তুলতে থাকছে বিনোদন সম্ভার। ওপরে ওঠার সিঁড়ি আরও চওড়া। বাসের আসন অনেক আরামদায়ক, থাকছে প্যানিক বাটন ও জিপিএস।
মঙ্গলবার ব্রিটেনের আদলে হুডখোলা দোতলা বাস পরিষেবার সূচনা করে মুখ্য মন্ত্রী বলেন, গোটা প্রক্রিয়াই হবে অনলাইনে। সপ্তমীর দিন থেকে পরিষেবা চালু হবে। প্রতি দু’ঘণ্টার ট্রিপে থাকছে কলকাতার বিশেষ জায়গাগুলো ঘুরিয়ে দেখানোর ব্যবস্থা। পরবর্তীতে যদি দেখা যায় এই ধরনের সাইট সিয়িং পরিষেবার চাহিদা ভালো, তাহলে আরও বাড়বে বাসের সংখ্যা, বলেন মুখ্য মন্ত্রী।
১৯২৬ সালে কলকাতার রাস্তায় প্রথম দোতলা বাস চালু হলেও শহরের পর্যটনের প্রসারে দোতলা বাসের ব্যবহার এই প্রথম। লন্ডনের ধাঁচে এবার থেকে শহর কলকাতাতেও পর্যটকদের শহরে ঘোরানো হবে। তাতে ইতিহাসের পাশাপাশি অন্যান্য সামাজিক আলেখ্যও উঠে আসবে। ১৯৯০ নাগাদ কলকাতার রাস্তায় আকছাড় দেখা মিলত লাল রঙের দোতলা বাসের। কমতে কমতে তা এসে ঠেকেছিল মাত্র একটিতে। গড়িয়া থেকে লাল দোতলা বাস যেতো হাওড়া। বহুদিন হয়ে গিয়েছে সেই বাসও গুমটিতে আশ্রয় নিয়েছে। শহর ঘুরিয়ে দেখাতে পর্যটন দফতর এই ধরনের বাসের প্রয়োজনীয়তার কথা জানাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত জামশেদপুরের বেবকো এই ধরনের বাস তৈরি করতে সক্ষম হয়। সেন্ট্রাল ইন্সস্টিটিউট অফ রোড ট্রান্সপোর্টের ছাড়পত্র পাওয়ার পরই এই বাস কেনার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয় নবান্ন। সেই উদ্যোগেরই প্রথম কিস্তিতে দুটি বাস শহর ঘোরাবে পর্যটকদের।
Comments are closed.