তীব্র মন্দার মুখে দেশ, অবিলম্বে চাই আর্থিক সংস্কার, বলছেন প্রাক্তন অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যম
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে উত্তাল গোটা দেশ। এর মধ্যে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা (Economic Crisis) নিয়ে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করলেন কেন্দ্রীয় সরকারের প্রাক্তন অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যম। তাঁর দাবি, তীব্র আর্থিক মন্দার মুখোমুখি হয়েছে ভারত।
মোদী সরকারের প্রথম আর্থিক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছিলেন অরবিন্দ। গত বছরের অগাস্ট মাসে তিনি ইস্তফা দেন। তাঁর নতুন বিশ্লেষণধর্মী লেখায় অরবিন্দ জানিয়েছেন, ভারত এখন ‘চার ব্যালান্স শিট’ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। প্রথমটি ব্যাঙ্ক, দ্বিতীয়টি পরিকাঠামো, তৃতীয় এনবিএফসি এবং চতুর্থ আবাসন শিল্প। এই চতুর্মুখী চ্যালেঞ্জে ভারতের আর্থিক বৃদ্ধি গতি হারাচ্ছে। তীব্র হচ্ছে অর্থনৈতিক সঙ্কট (Economic Crisis)।
অরবিন্দের সঙ্গে এই পেপারটি লিখেছেন ইন্টারন্যাশনাল মনিটরি ফান্ডের (আইএমএফ) ভারতীয় অফিসের প্রাক্তন প্রধান জন ফেলম্যান।
তাঁদের যৌথ অভিমত, ভারতে এখন বিশাল আর্থিক মন্দা চলছে। দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে বিশেষ পরিকল্পনা ও উদ্যোগ নেওয়া আশু প্রয়োজন। দেশের প্রাক্তন আর্থিক উপদেষ্টা তাঁদের পেপারকে ট্যুইন ব্যালান্স শিট (টিবিএস)-১ এবং টিবিএস-২ তে ভাগ করেছেন। টিবিএস-১ হল স্টিল, বিদ্যুৎ, ইনফ্রাস্ট্রাকচার সেক্টর ও সংস্থা, যাদের ২০০৪ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ব্যাঙ্ক ঋণ দেওয়ার পরেও বিনিয়োগে খারাপ পরিস্থিতি এসেছে। টিবিএস-২ তে মোদী সরকারের আমলে নোটবন্দির পর নন-ব্যাঙ্কিং ফিনান্সিয়াল কোম্পানি (এনবিএফসি) ও আবাসন শিল্প সংস্থার উপর প্রভাব বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
ওই পেপারে লেখা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী মন্দার সময় ভারতের দীর্ঘমেয়াদি বৃদ্ধি শ্লথ হচ্ছে বিনিয়োগ ও রফতানিতে নেতিবাচক পরিস্থিতির জন্য। তাঁদের বিশ্লেষণ, কনজিউমার গুডস প্রোডাকশনে বৃদ্ধি স্থির হয়েছে, উৎপাদন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ কমছে। আমদানি, রফতানি এবং সরকারি রাজস্ব নেতিবাচক পরিস্থিতির মুখে, যা ভারতের অর্থনৈতিক ‘অসুস্থতা’ বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে বলে নির্দেশ করছে। অরবিন্দ লিখেছেন, চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে ভারতের অর্থনীতির দিকে নজর দিলে দেখা যাবে, এই মন্দা ১৯৯১ সালের আর্থিক মন্দার মতো। যা ২০০০ থেকে ২০০২ সালের মন্দার চেয়েও এই পরিস্থিতি ভয়াবহ। সব মিলিয়ে গত কয়েকটি ত্রৈমাসিকে দেশের আর্থিক বৃদ্ধি কমার এটাই কারণ বলে জানাচ্ছেন তাঁরা। ওই দুই অর্থনীতিবেদের মতে, তাই এই সময়ে ক্ষুদ্র অর্থনৈতিক সংস্কার নয়, বৃহত্তর পদক্ষেপের মাধ্যমে আর্থিক সংস্কারে জোর দিতে হবে ভারতকে। তবে ব্যক্তিগত আয়করে ছাড় বা জিএসটি রেট বাড়িয়ে সমস্যার মোকাবিলা একেবারেই অসম্ভব বলে মনে করেন তাঁরা।
Comments are closed.