ইংরেজির পাশাপাশি উচ্চশিক্ষার পাঠ্যক্রমে আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহারের চিন্তা-ভাবনা করছে কেন্দ্র। মোট ২২ টি আঞ্চলিক ভাষাকে স্নাতকোত্তর স্তরে ব্যবহারের আলোচনা চলছে কেন্দ্রের নতুন শিক্ষাবিধিতে।
দেশের সমস্ত স্কুলে হিন্দি বাধ্যতামূলক করতে হবে, ২০১৯ সালের জুন মাসে কেন্দ্রীয় সরকারের এই সুপারিশে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। পরে যদিও কেন্দ্র পিছু হঠে জানায়, সেটি একটি প্রস্তাবিত খসড়া মাত্র। এবার নয়া শিক্ষানীতিতে দেশের আঞ্চলিক ভাষাগুলির উপর তাদের অঙ্গীকার রক্ষা করতে চাইছে মোদী সরকার। যদিও উচ্চশিক্ষার বিভিন্ন কোর্সে, বিশেষত প্রযুক্তি বিদ্যায় ইংরেজি থেকে আঞ্চলিক ভাষাগুলিতে শিক্ষাদান ও পরীক্ষা প্রণালী কতটা মসৃণ হবে তা নিয়ে প্রশ্নই থেকেই যাচ্ছে।
বর্তমানে উচ্চশিক্ষার সিংহভাগ বই থেকে শুরু করে পরীক্ষা গ্রহণ সবেরই মাধ্যম ইংরেজি ভাষা। কেন্দ্রের উচ্চশিক্ষার নতুন নীতিতে পরামর্শ, যেখানে সম্ভব হবে, উচ্চশিক্ষার মাধ্যম হোক মাতৃভাষা। এ প্রসঙ্গে কেন্দ্র, রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি আলোচনা করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বলে খবর।
বর্তমান উচ্চশিক্ষা খসড়ায় বলা হয়েছে, উচ্চশিক্ষা ও ডিগ্রি পাঠ্যক্রমগুলি যতদূর সম্ভব ভারতীয় ভাষার অথবা দ্বিভাষিক হওয়া উচিত। কেন্দ্র এই নীতিতে আরও জোর দিয়ে উচ্চশিক্ষায় মাতৃভাষার গুরুত্ব বাড়াতে চাইছে। তাদের মত, সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে শুধুমাত্র ভাষাগত সমস্যার জন্য অনেক পড়ুয়া উচ্চশিক্ষার পাঠ শেষ করতে পারেন না, অথবা অসুবিধায় পড়েন। এই অসুবিধার মুখোমুখি না হওয়ার জন্য দেশজুড়ে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের বাড়বাড়ন্ত। সেই সঙ্গে মাতৃভাষার গুরুত্ব কমছে।
কেন্দ্রের এই নতুন শিক্ষানীতির খসড়া আগামী মাসের মধ্যেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে উঠবে বলে খবর। প্রসঙ্গত, গত বছর জুন মাসে কেন্দ্রের নয়া শিক্ষানীতির খসড়ায় অ-হিন্দিভাষী রাজ্যগুলিতেও হিন্দি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার কথায় পশ্চিমবঙ্গ থেকে দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে প্রবল আন্দোলন শুরু হয়েছিল। এবার সেখান থেকে সরে এসে ২২ টি আঞ্চলিক ভাষাকে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহারের প্রস্তাব দিতে চলেছে কেন্দ্র।
Comments are closed.