বাবার মৃত্যুর খবর পেয়েও করেছিলেন শুটিং আজ তিনিই সকলের প্রিয় খলনায়িকা চড়ুই, পর্দায় ভিলেনের চরিত্রে অভিনয় করলেও বাস্তব জীবনে খুবই হাসিখুশি মিষ্টি একজন মেয়ে জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্বেতা মিশ্র, অর্থাৎ ‘ধুলোকণা’ ধারাবাহিকের চড়ুই
বাংলা ধারাবাহিক জগতে জনপ্রিয় ধারাবাহিকগুলির মধ্যে অন্যতম হল স্টার জলসার লীনা গঙ্গোপাধ্যায় লেখা ধারাবাহিক ধূলোকণা। এই ধারাবাহিকের একটি ভিলেন চরিত্র হলো চড়ুইয়ের চরিত্র। আর এই চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় অভিনেত্রী শ্বেতা মিশ্রকে। ধারাবাহিকে আমরা সবসময় দেখতে পাচ্ছি যে চড়ুই এর মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি ঘুরপাক খাচ্ছে। তার গা জ্বলানো সংলাপ শুনলেই রাগে গজ গজ করে ওঠেন দর্শকেরা। আর এখানেই অভিনেত্রীর সাফল্য।
খুব অল্প সময়ের মধ্যেই অভিনয় জগতে নিজের জায়গা তৈরি করে নিয়েছেন শ্বেতা। তার ফ্যান এর সংখ্যা নেহাতই কম নয়। এর আগে বড় পর্দার ছবি প্রেম-টেমেও কেন্দ্রীয় চরিত্র দেখা গিয়েছিল অভিনেত্রীকে। এসব মিলিয়ে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই দর্শকের পছন্দের অভিনেত্রী হয়ে উঠেছেন শ্বেতা। আর দর্শকরা নিজেদের পছন্দের অভিনেত্রীর বাস্তব জীবন সম্পর্কে জানতে বরাবরই আগ্রহী হয়ে থাকেন। তাই আজ আপনাদের সামনে শ্বেতার বাস্তব জীবনের কিছু গল্প তুলে ধরব।
শ্বেতা হলো বহরমপুরের মেয়ে। অভিনয় যাত্রা শুরু হয়েছিল কালারস্ বাংলার জাহানারা ধারাবাহিকের হাত ধরে। বর্তমানে একজন অভিনেত্রী হলেও ছোট থেকে কখনোই সে তার ইচ্ছে ছিল না অভিনয় জগতে আসার। কোনদিনও মাথাতেই আনেননি অভিনেত্রী হওয়ার কথা। এরপর পড়াশোনার সূত্রে বহরমপুর ছেড়ে কলকাতায় আসেন। গ্রাজুয়েশন করার সময় থিয়েটার করতেন শ্বেতা। এরপর থিয়েটার করতে করতে অভিনয়ের প্রতি ভালো লাগা ভালোবাসা তৈরি হয়। এরপর ক্যামেরার পিছনে বহুদিন অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। এরপরই সুযোগ আছে কালার্স বাংলার জাহানারা ধারাবাহিকে অভিনয় করার। কিন্তু পর্দায় আমরা যেমন অভিনেত্রীকে বদমেজাজি ভিলেন চরিত্রে দেখতে পাই বাস্তবে কিন্তু অভিনেত্রী একদমই সাদাসিধে হাসিখুশি একজন। জীবনে অনেক চড়াই উতরায় পারিতেছেন অভিনেত্রী। তার জীবনে এমন অনেক দুঃখের গল্প আছে যা শুনলে আপনাদের চোখেও জল আসবে।
অভিনেত্রী সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন যখন তিনি কালার্স বাংলায় জাহানারার শুটিং করছিলেন সেই সময় তার বাবার মৃত্যুর খবর আসে তার কাছে। কিন্তু শুটিং ছেড়ে মাঝপথে বাবার কাছে যেতে পারেননি তিনি। ওই অবস্থাতেই শুটিং করে গিয়েছিলেন। নিজের দায়িত্ব থেকে পিছিয়ে আসেননি। বাবার মৃত্যু ১৩ দিন বাদে বাড়ি ফিরে বাবার সমস্ত কাজ নিয়ম মেনে শেষ করেছিলেন। সেই সময় অভিনেত্রীর পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন অভিনেত্রীর মা এবং তার জীবনসঙ্গী। পর্দায় লালনের জন্য চড়ুই পাগল হলেও বাস্তব জীবনের শ্বেতা সম্পর্কে রয়েছেন। একজন কাছের বন্ধুর সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক তার আর সেই সম্পর্কে দারুন খুশি অভিনেত্রী।খলনায়িকা হিসেবে তার চরিত্র দর্শক কতটা ভালোবাসে সেই প্রশ্ন করায় অভিনেত্রী জানান একবার শুটিংয়ে যাওয়ার সময় ট্রাফিক সিগনালে বসে ছিলেন গাড়িতে। পাশ থেকে একজন মহিলা তাকে দেখে চিনতে পেরে বলেছিলেন চড়ুই না? আপনি মরে যান না কেন? শ্বেতার মতে তার জীবনে সবথেকে পাওয়া সেরা কমপ্লিমেন্ট ছিল এটি। একজন খলনায়িকা চরিত্রে তখনই সাফল্য অর্জন করতে পারেন একজন অভিনেত্রী যখন তাকে দেখে দর্শক দু চারটে বাজে কথা বলবে। আর এটাই শ্বেতার জীবনের সেরা কমেন্ট।
Comments are closed.