সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নজির পাঞ্জাবে, মসজিদ নির্মাণে সাহায্যের হাত হিন্দু-শিখ সম্প্রদায়ের

দেশজুড়ে যখন অসহিষ্ণুতা ও সাম্প্রদায়িক হানাহানির একটা বাতাবরণ ধীরে ধীরে মাথা চারা দিচ্ছে সে সময়ে পরধর্ম সহিষ্ণুতা এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রিতীর এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করল পাঞ্জাবের অখ্যাত মুম গ্রাম। এখানে মুসলিমদের ধর্মাচারণের জন্য মসজিদ নির্মাণে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন গ্রামেরই হিন্দু ও শিখ ধর্মাবলম্বীরা।
এই এলাকায় প্রায় চার হাজার শিখ, চারশো হিন্দু এবং চারশো মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস।

এই মসজিদ তৈরির মূল উদ্যোক্তা গ্রামের বাসিন্দা নাজিম রাজা খান। নাজিম পেশায় একজন রাজমিস্ত্রী। নাজিম জানিয়েছেন, এলাকায় প্রায় চারশো মুসলিম ধর্মাবলম্বী মানুষ বসবাস করলেও এতদিন এখানে তাঁদের ধর্মাচরণের জন্য কোনও মসজিদ ছিল না। প্রায় দেড় বছর আগে গ্রামেই একটি মন্দির নির্মাণের কাজ করার সময় মসজিদ তৈরির বিষয়টি মাথায় আসে নাজিমের। মন্দির কর্তৃপক্ষের কাছে তিনি গিয়ে বলেন, গ্রামে নতুন মন্দির তৈরি হচ্ছে, পুরনো আরও একটি মন্দির রয়েছে গ্রামে। অথচ মুসলিমদের জন্য গ্রামে কোনও মসজিদ নেই। এমনকী এলাকার মুসলিমদের কাছে এত টাকা বা জমিও নেই যে তারা নিজ উদ্যগে কোনও মসজিদ তৈরি করতে পারবেন। তাই মন্দির কর্তৃপক্ষের কাছে নাজিম অনুরোধ জানান, মসজিদ তৈরির জন্য তাদের কিছুটা জমি দিতে। নাজিমের প্রস্তাবে রাজি হয় মন্দির কর্তৃপক্ষ। মন্দিরের পাশেই মসজিদ তৈরির জন্য প্রায় ন’শো স্কোয়ার ফুট জমি দেওয়া হয়।

এরপর মসজিদ নির্মাণে আর্থিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন এলাকার শিখ সম্প্রদায়ের মানুষজনও। যেখানে মসজিদটি তৈরি হচ্ছে তার ঠিক পাশেই রয়েছে একটি গুরুদওয়ারা। অর্থাৎ মাঝে মসজিদ, তার এক পাশে মন্দির এবং আরেক পাশে গুরুদওয়ারা। আর মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের জন্য মসজিদ তৈরি হচ্ছে হিন্দু এবং শিখদের সাহায্য নিয়ে। গুরু নানক, কবীর, রামকৃ্ষ্ণ পরমহংসের ভারতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এ আর এক অনন্য উদাহরণ। এটাই ভারত। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে যা বিশেষ উল্লেখযোগ্য।

Leave A Reply

Your email address will not be published.