৩০০ কর্মীর সংস্থা সরকারকে না জানিয়েই ছাঁটাই করতে পারবে, সংসদে নয়া বিল পেশ, তীব্র বিরোধিতা

বেসরকারি সংস্থাগুলিকে কর্মী নিয়োগ এবং ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে আরও অধিকার দিতে বিল পেশ হল সংসদে। বিল পাশ হলে কোনও সংস্থায় সর্বোচ্চ ৩০০ জন কর্মী হলে নিয়োগ বা ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে সরকারের অনুমতি লাগবে না। শনিবার লোকসভায় এই সংক্রান্ত বিল পেশ করেছেন কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রী সন্তোষ গাঙ্গওয়ার।

গত বছর বিলটি লোকসভায় পেশ হলেও বিরোধীদের সমালোচনার মুখে তা সংসদের শ্রম বিষয়ক স্থায়ী কমিটির কাছে পাঠানো হয়। সংসদীয় কমিটির পর্যালোচনার পরে বিলটি গত শনিবার আবার সংসদে পেশ করা হয়েছে।

শনিবার লোকসভায় ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিলেশনস কোড ২০২০, অকুপেশনাল সেফটি, হেলথ অ্যান্ড ওয়ার্কিং কন্ডিশনস কোড ২০২০ এবং কোড অন সোশ্যাল সিকিউরিটি ২০২০ মোট তিনটি বিল পেশ করেন কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রী সন্তোষ গাঙ্গোয়ার। এর মধ্যে ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিলেশনস কোড ২০২০ এ অবাধ ছাঁটাই ও ক্লোজারের সুযোগ আরও বৃদ্ধি করা হল বলে বিরোধীরা অভিযোগ করছেন। তাছাড়া নতুন বিলে কর্মীদের বন্‌ধ ও ধর্মঘটের অধিকারও খর্ব হচ্ছে বলে অভিযোগ।

আগের নিয়মে ১০০ জনের নীচে কর্মরত কোনও সংস্থায় ছাঁটাই বা ক্লোজার করতে হলে সরকারের অনুমতি নিতে হত না। এবার সেই সংখ্যা ৩০০ তে নিয়ে যাওয়া হল। নতুন বিলে ‘মাস ক্যাজুয়াল লিভ’কে ধরা হবে ধর্মঘট হিসেবে। শাস্তি হবে গণহারে। কর্মীরা ধর্মঘট করলে জরিমানা, জেলের মতো কঠোর শাস্তির সংস্থানও রয়েছে বিলে। সংসদের চলতি অধিবেশনেই তিনটি বিল পাশ করাতে বদ্ধপরিকর কেন্দ্র। লোকসভায় শ্রমমন্ত্রী জানান, ২৯টি শ্রম আইনকে একত্র করে চারটি কোডে এনে গত বছর ‘কোড অফ ওয়েজ বিল ২০১৯’ পাশ হয়েছে। এই তিনটি বিলকে পরে স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। সেখানে ২৩৩ টি সুপারিশের মধ্যে ১৭৪ টিই মেনে নেওয়া হয়েছে এবং তারপরে সংসদে পেশ করা হয়েছে। তাঁর দাবি, এই বিলে ব্যাপক আর্থিক বৃদ্ধির পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগও তৈরি হবে। তবে সরকারের যুক্তি মানতে নারাজ বিরোধীরা।

কংগ্রেস, বাম সহ বিরোধী দলগুলির বক্তব্য, নতুন বিলে শ্রমিকদের অবাধ ছাঁটাই ও ইচ্ছেমতো ব্যবসা তুলে দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। বিরোধীদের আশঙ্কা, নতুন বিলটি আইনে পরিণত হলে শ্রমিক নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে পড়বে। বিলগুলিকে ফের স্ট্যান্ডিং কমিটিতে পাঠানোর দাবি জানান তাঁরা। কংগ্রেসের মণীশ তিওয়ারি বলেন, বিল পেশের আগে শ্রমিক সংগঠনগুলির সঙ্গে আলোচনা করা উচিত ছিল। অন্তত ৩০ দিন এই বিলের খসড়া ওয়েবসাইটে রাখা উচিত। কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুরের কথায়, বিলগুলি পড়ার সময় দু’দিন দেওয়া হলেও সাংসদদের হাতে তা দেওয়া হয়েছে মাত্র দু’ঘণ্টা আগে। বিল পাশের ক্ষেত্রে সরকার এত তাড়াহুড়ো করছে কেন সেই প্রশ্নও তোলেন কংগ্রেস সাংসদ।

Comments are closed.