করোনা মোকাবিলায় অভিজিৎ ব্যানার্জির নেতৃত্বে রাজ্যের পরামর্শদাতা বোর্ডের সদস্যদের সম্পর্কে এই তথ্যগুলো জানেন?
করোনা এবং পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় গ্লোবাল অ্যাডভাইজারি বোর্ড গঠন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। লকডাউনের পর কীভাবে রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতি, স্বাস্থ্য পরিষেবা সহ রাজ্যের সার্বিক উন্নতি করা যাবে, এ ব্যাপারে সরকারকে পরামর্শ দেবে এই কমিটি। নোবেলজয়ী বাঙালি অর্থনীবিদ অভিজিৎ বিনায়ক ব্যানার্জির নেতৃত্বাধীন এই গ্লোবাল অ্যাডভাইজরি কমিটিতে রয়েছেন ডাঃ থমাস ফ্রিডেন, স্বরূপ সরকার, জিষ্ণু দাস, জেভিআর প্রসাদ রাও, সিদ্ধার্থ দুবে, ডাঃ সুকুমার মুখার্জি ও ডাঃ অভিজিৎ চৌধুরী। জেনে নিন, কোন কোন ক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন তাঁরা? কোন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেই বা তাঁরা যুক্ত ছিলেন বা রয়েছেন।
অভিজিৎ বিনায়ক ব্যানার্জি
অমর্ত্য সেনের পর আর এক বাঙলি অর্থনীবিদ অভিজিৎ বিনায়কের হাত ধরে দেশে এসেছে নোবেল পুরস্কার। এমআইটির ফোর্ড ফাউন্ডেশনের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক অভিজিত কলকাতার সাউথ পয়েন্ট স্কুলের ছাত্র ছিলেন।
আবদুল লতিফ জামিল পোভার্টি অ্যাকশন ল্যাবের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং কনসোর্টিয়াম অন ফিনান্সিয়াল সিস্টেম অ্যান্ড পোভার্টির সদস্য তিনি। এছাড়াও অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ ও উন্নয়ন বিষয়ক গবেষণা সংস্থা ন্যাশনাল ব্যুরো অফ ইকনমিক রিসার্চে-এর প্রেসিডেন্ট, কিইল ইনস্টিটিউট, আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ আর্টস অ্যান্ড সায়েন্স ও ইকোনমিক সোসাইটির সম্মানিত ফেলো অভিজিৎ বিনায়ক ব্যানার্জি।
স্বরূপ সরকার
দেশের স্বনামধন্য এপিডেমিওলজিস্ট স্বরূপ সরকার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের প্রাক্তন ডিরেক্টর অফ কমিউনিকেবল ডিজিস।
এইচআইভি, এইডসের মতো সংক্রামক অসুখ নিয়ে তাঁর গবেষণা ও কাজ তাৎপর্যপূর্ণ। WHO এর আগে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন কলকাতা মেডিকেল কলেজের এই প্রাক্তনী।
ডাঃ থমাস ফ্রিডেন
মার্কিন মুলুকের এক বিখ্যাত চিকিৎসক থমাস ফ্রিডেন আমেরিকার সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল (CDC) এর প্রাক্তন প্রধান। নিউ ইয়র্ক সিটির হেলথ কমিশনার হিসেবেও কাজ করেছেন। প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তাঁকে এজেন্সি ফর টক্সিক সাবস্ট্যান্সেস অ্যান্ড ডিজিস রেজিস্ট্রির অ্যাডমিনিস্ট্রেটর হিসেবে নিযুক্ত করেছিলেন। ২০১৭ সাল পর্যন্ত এই দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
জিষ্ণু দাস
বিশ্ব ব্যাঙ্কের ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ গ্রুপের মুখ্য অর্থনীতিবিদ জিষ্ণু দাসকে রাখা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর গ্লোবাল অ্যাডভাইজরি কমিটিতে। অধ্যাপক জিষ্ণু দাসের গবেষণা প্রধানত কম ও মধ্য আয়ের দেশগুলির স্বাস্থ্য ও শিক্ষার উন্নতিসাধন নিয়ে।
জেভিআর প্রসাদ রাও
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের প্রাক্তন সেক্রেটারি জেভিআর প্রসাদ রাও রাষ্ট্রসংঘের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ২০১৩ থেকে ১৭ সাল পর্যন্ত UNAIDS এর এশিয়া প্যাসিফিক রিজিওনের বিশেষ দূত হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯৯৭ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত তিনি ভারতের ন্যাশনাল এইডস কন্ট্রোল অর্গানাইজেশনের (NACO) ডিরেক্টর ছিলেন। এছাড়া একাধিক স্বাস্থ্য সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত জেভিআর প্রসাদ রাও।
সিদ্ধার্থ দুবে
লেখক তথা পাবলিক হেলথ পলিসি এক্সপার্ট সিদ্ধার্থ দুবে রাষ্ট্রসংঘের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। দারিদ্র্য, জনস্বাস্থ্য ও উন্নয়ন নিয়ে বেশ কিছু বিখ্যাত বই রয়েছে। ‘An Indefinite Sentence: personal history of outlawed love and sex,’ ‘In the Land of Poverty,’ ‘Sex, Lies and AIDS’ মতো বইয়ের লেখক সিদ্ধার্থ দুবের জন্ম কলকাতায়। ইউনিভার্সিটি অফ মিনেসোটা’র স্কুল অফ জার্নালিজম থেকে পাশ করার পর হার্ভার্ড স্কুল অফ পাবলিক হেলথ থেকে ১৯৯১ সালে এমএসসি পাশ করেন। নিউ ইয়র্কের ওয়ার্ল্ড পলিসি ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ফেলো ‘The Caravan’ এর সহ-সম্পাদক। এছাড়া বিখ্যাত পত্রপত্রিকায় নিয়মিত কলাম লেখেন।
ডাঃ সুকুমার মুখার্জি ও ডাঃ অভিজিৎ চৌধুরী
মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শদাতা কমিটিতে রয়েছেন রাজ্যের দুই চিকিৎসক সুকুমার মুখার্জি ও অভিজিৎ চৌধুরী। ইন্টারনাল মেডিসিন ও রেমেটোলজি স্পেশালিষ্ট সুকুমার মুখার্জির ৪৫ বছরের অভিজ্ঞতা করোনার বিরুদ্ধে রাজ্যের স্বাস্থ্য কাঠামো তৈরিতে সহায়তা করবে।
অন্যদিকে ডাঃ অভিজিৎ চৌধুরীর পূর্ব ভারতে লিভার ট্রান্সপ্লান্টেশনে অনন্য ভূমিকা রয়েছে। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ লিভার অ্যান্ড ডাইজেস্টিভ ডিজিস (IILDS) এর সরকারি কমিটির উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত রয়েছেন তিনি।
Comments are closed.