ঋতুস্রাব হয়নি, এই প্রমাণ পেতে ৬৮ জন ছাত্রীর অন্তর্বাস খুলে পরীক্ষা করার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠল গুজরাতের এক কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। গুজরাতের ভুজ এলাকার শাহাজানন্দ গার্লস ইনস্টিটিউটের এই ঘটনা গত বৃহস্পতিবারের। ইংরেজি সংবাদপত্র ‘আহমেদাবাদ মিরর’- এর এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, কলেজের আবাসিকারা ঋতুমতী অবস্থায় ধর্মীয় অনুশাসন ভেঙেছেন, অপবিত্র করেছেন কলেজের মন্দির থেকে হস্টেলের রান্নাঘর। এমনই অভিযোগ তুলে কর্তৃপক্ষের কাছে নালিশ জানান হস্টেলের প্রধান। এরপরই ওই ছাত্রীদের অন্তর্বাস খুলে পরীক্ষা করা হয়, তাঁরা ঋতুমতী কি না। অভিযোগের প্রেক্ষিতে থানায় কোনও এফআইআর দায়ের না হলেও কলেজ কর্তৃপক্ষের তৈরি করা কমিটি এই ঘটনার তদন্ত করছে বলে খবর।
ভুজের এই গার্লস কলেজটি ক্রান্তিগুরু স্বামীজি কৃষ্ণ ভার্মা কুচ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। ২০১২ সালে তৈরি হওয়া কলেজটি স্বামীনারায়ণ মন্দিরের শিষ্যদের দ্বারা চালিত হয়। ছাত্রীদের অভিযোগ, ঋতুমতী অবস্থায় মন্দির, রান্নাঘরে যাওয়া তো দূর অস্ত, একে অন্যের সঙ্গে মেলামেশাতেও প্রবল অনুশাসন কলেজ কর্তৃপক্ষের। আহমেদাবাদ মিরর-এর মুখোমুখি হয়ে এক ছাত্রী জানান, যে ছাত্রীরা এই অভিযোগ করেছেন, তাঁদের প্রথমে শ্রেণিকক্ষ থেকে বের করে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য করা হয়। আর এক ছাত্রী জানান, খোদ কলেজের অধ্যক্ষ তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। জানতে চাওয়া হয়, কারা কারা ঋতুমতী অবস্থায় ঘুরে বেড়িয়ে রীতিনীতি ভাঙছে। এর মধ্যে দু’জন ছাত্রী স্বীকার করে নেওয়ার পরও বাকি সমস্ত ছাত্রীকে বাথরুমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে শিক্ষিকারা তাঁদের জামা-কাপড় তো বটেই, এমনকী অন্তর্বাসও খোলার নির্দেশ দেন বলে অভিযোগ। অপর এক ছাত্রীর অভিযোগ, এই ইস্যুতে প্রতিনিয়ত তাঁদের উপর মানসিক অত্যাচার চালায় কলেজ কর্তৃপক্ষ। সমস্ত নিয়ম মানা সত্ত্বেও কেউ মিথ্যে বলছে কি না তা পরীক্ষা করতে এভাবেই জামা-কাপড় খুলে পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার যেভাবে কলেজ পড়ুয়াদের অপমান ও হয়রান করা হয়েছে তা সহ্যের সীমা অতিক্রম করে গিয়েছে বলে মন্তব্য করেন ওই ছাত্রী।
ছাত্রীদের আরও অভিযোগ, সংবাদমাধ্যমে খবর হওয়ার পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের এগজিকিউটিভ কাউন্সিলের সদস্য প্রবীণ পিন্দোরিয়া ছাত্রীদের কলেজ ছেড়ে দিতে বলেন। না ছাড়লে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেন তিনি। তাঁদের দিয়ে জোর করে লিখিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়, এমন কোনও ঘটনাই ঘটেনি।
ছাত্রীদের এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি পি এইচ হিরানি বলেন, আমাদের কিছু রীতিনীতি আছে। তবে ছাত্রীদের সঙ্গে যদি এমন কিছু হয়ে থাকে তা অনৈতিক। দ্রুত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Comments are closed.