প্রাক্তন এসিস্ট্যান্ট সাব ইনস্পেকটরের ছেলে কুখ্যাত গ্যাংস্টার জয়পাল ভুললার। বুধবার নিউটাউনের সাপুরজি আবাসনের নীচে কলকাতা পুলিশের এসটিএফের গুলিতে নিহত হয়েছে জয়পাল সহ তার সহকারী জসসি খারার।
কোনো এক সময় লুধিয়ানার পাঞ্জাব সরকারের স্পোর্টস ট্রেনিং সেন্টার স্পিড ফান্ড একাডেমির ছাত্র ছিল জয়পাল। হ্যামার থ্রোয়ার ছিল সে। সেখান থেকে কীভাবে গ্যাংস্টার হয়ে উঠল?
২০০৩ সালে অপরাধ জগতে হাতেখড়ি জয়পালের। এর আগে স্পোর্টস ট্রেনিং সেন্টার স্পিড ফান্ড একাডেমিতে তার সঙ্গে পরিচয় হয় আমনদীপ সিং ওরফে হ্যাপির। সেও ছিল সব ইনস্পেক্টরের ছেলে।
২০০৪ সালে হ্যাপি আর জয়পাল মিলে চিরাগ নামে এক আত্মীয়ের ছেলেকে অপহরণ করে। বড়লোক হওয়ার ইচ্ছায় মুক্তিপণ চায় তারা। কিন্তু সফল হতে না পেরে লুধিয়ানার জেলে ঠাঁই হয় হ্যাপি আর জয়পালের। জেলের মধ্যেই পরিচয় হয় রাজীব ওরফে রাজার সঙ্গে। জেল থেকে বেরিয়ে আসে জয়পাল। এরপর সে পরিচয় করে জাতীয়স্তরে হ্যামার থ্রোয়ার শেরার সঙ্গে। ২০০৯ সালে রাজাকে পুলিশ হেফাজতে থেকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করে জয়পাল, শেরা আর হ্যাপি।
এরপর এই চারজন মিলে নানা অপরাধমূলক কাজকর্ম শুরু করে। হোসিয়ারপুর কারখানায় বন্দুক চুরি করা থেকে শুরু করে পঞ্চকুল্লা ও মোহালিতে ব্যাংক ডাকাতি, চণ্ডীগড়ে বিজেপি নেতার গাড়ি ছিনতাই সবকিছুতে নাম জড়িয়ে যায় জয়পালের দলের। ২৭ টি থানার মামলায় ফের গ্রেফতার হয় জয়পাল। কিন্তু উপযুক্ত সাক্ষ্য প্রমাণের অভাবে জামিন পেয়ে যায় সে। জেলে রকির সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় জয়পালের। জেল থেকে বেরিয়ে সে রাজস্থানে মাদক ব্যবসা শুরু করে।
এরপর নিজেদের দলের মধ্যেই গন্ডগোলে জড়িয়ে পড়ে জয়পাল। নিজেদের মধ্যে রেষারেষির জেরে হ্যাপি আর শেরা খুন হয়।
২০১৭ সালে ব্যাঙ্কের টাকার গাড়ি থেকে ১.৩৩ কোটি টাকা লুঠ করে জয়পাল ও তার দলবল। এরপর পাকিস্তান থেকে ভারতে মাদক পাচার করার অভিযোগে গ্রেফতার হয় জয়পালের দলের ৩ জন। মধ্য প্রদেশ থেকে ধরা পরে জয়পালের আরও দুই সহযোগী। তারা দুই এএসআই খুনে অভিযুক্ত ছিল।
জয়পালের মাথার দাম ১০ লক্ষ টাকা ঘোষণা করা হয়। জসসির মাথার দাম ঘোষণা করা হয় ৫ লক্ষ টাকা।
গত মাসেই লুধিয়ানা পুলিশ ভগবান সিং ও দলবিন্দর সিং নামে দুই পুলিশের এএসআই কর্মীকে খুনের অভিযোগ আনে জয়পালের বিরুদ্ধে। কলকাতার গা ঢাকা দেয় জয়পাল ও তার দলবল। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। কলকাতা পুলিশের গুলিতেই মৃত্যু হল জয়পাল আর জসসির।
Comments are closed.