করোনাভাইরাসের কোপে ইতিমধ্যে বিধ্বস্ত বিশ্ব অর্থনীতি। সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক কার্যকলাপ একপ্রকার বন্ধ, রোজ চাকরি হারাচ্ছেন প্রচুর মানুষ। এখন অপেক্ষা এই অতিমারির অবসানের। কিন্তু করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে কাজের হাল কী হবে? কতটা নিরাপদ থাকবে আপনার চাকরি?
আপনার চাকরি কি আদৌ নিরাপদ?
করোনা প্যান্ডেমিকের জেরে বিধ্বস্ত বিভিন্ন সেক্টর। হয় কর্মী ছাঁটাই হচ্ছে, নয়তো বেতনে কোপ পড়ছে। সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকনমি (CMIE) এক রিপোর্টে বলছে, শুধু এ বছরের এপ্রিলেই ২ কোটি ৭০ লক্ষ মানুষ কাজ হারিয়েছেন। এদের প্রত্যেকের বয়স ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। এখানেই শেষ নয়, সিএমআইই জানাচ্ছে, বিশ্ব অর্থনীতি প্রবল অন্ধকারে থাকায় আগামী দিনে চাকরির বাজার আরও খারাপ হবে। স্বল্প সংখ্যক পদের জন্য তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামতে হবে চাকরিপ্রার্থীদের। অবসরের পর সামান্যতম সঞ্চয় রাখতেও হিমশিম খাবে যুব সম্প্রদায়।
নগদ অর্থের অভাব ও সঞ্চয়ে প্রভাব
সিএমআইই এর রিপোর্ট বলছে, ভারতের তরুণ জনসংখ্যার মধ্যে কর্মসংস্থান হ্রাস হলে স্বাভাবিকভাবেই সঞ্চয়ের উপর তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। কিছু পরিবার এই সময়ের মধ্যে নগদ অর্থের সংরক্ষণ করতে পারলেও কর্মসংস্থানের অভাবে তরুণ প্রজন্মের হাতে আর বড় অঙ্কের সম্পদ থাকবে না। এই সঞ্চয়ের অভাব দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলবে বর্তমানের নতুন প্রজন্মের উপর।
কাজের বাজার নিয়ে আরও সমীক্ষা
কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রিজ (CII)-এর এক রিপোর্ট অনুযায়ী, করোনার জেরে ৫২ শতাংশ ফার্ম ভবিষ্যতে তাদের কর্মী সংখ্যা কমাবে। লকডাউন শেষ হলে বা করোনার প্রভাব স্তিমিত হলে আরও বেশি সংখ্যায় মানুষ কর্মহীন হতে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সিআইআই। বলা হচ্ছে, ৪৭ শতাংশের বেশি ফার্মে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত চাকরি কমবে। লকডাউন শেষ হলে ৩২ শতাংশ ফার্মে কমতে পারে ১৫-৩০ শতাংশ কাজ।
কী করবেন?
করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে কতটা খারাপ জায়গায় অর্থনীতি যেতে পারে তা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। তবে সাফ বোঝা যাচ্ছে, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিপুল সংখ্যক চাকরিজীবীর ভবিষ্যৎ প্রশ্নের মুখে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উদ্ভুত পরিস্থিতিতে একমাত্র পথ, নিজের স্কিলে আরও শান দেওয়া। যাতে পরিবর্তিত পরিস্থিতির চাহিদা বুঝে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা যায়। প্রতিদ্বন্দ্বিতা ব্যাপক হবেই। কিন্তু তার মধ্যে করোনা পরবর্তী সময়ে দরকার চাহিদা বুঝে বাজারের পরিবর্তন এবং বিনিয়োগে বদল। কারণ কাজের বাজারে যে বদল আসবে তার সঙ্গে চাকরিজীবীদের খাপ খাওয়াতেই হবে।