১৯৩০ সালের পর সবচেয়ে বড় মন্দা দেখতে পারে বিশ্ব। অতিমারি করোনাভাইরাসের দাপটে ১৭০ টির বেশি দেশে মাথা পিছু আয় কমার আশঙ্কা প্রবল। বৃহস্পতিবার এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করলেন আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডারের (IMF) ম্যানেজিং ডিরেক্টর ক্রিস্টালিনা জর্জিয়াভা।
কোভিড-১৯ এর জেরে আমেরিকা, চিন, ইতালি সহ উন্নত অর্থনীতির দেশগুলি আজ চরম সঙ্কটে। প্রায় সব মহাদেশেই প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে ভয়াবহ অর্থনৈতিক পরিস্থিতির পূর্বাভাস দিল আইএমএফ। আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার ও বিশ্ব ব্যাঙ্কের বসন্তকালীন বৈঠকের সপ্তাহখানেক আগে ‘Confronting the Crisis: Priorities for the Global Economy’ শীর্ষক আলোচনায় জর্জিয়াভা বলেন, গত ৯০ বছরে এত বড় সংকটের মুখোমুখি হয়নি বিশ্ব। ১৯৩০ সালের মহা মন্দার পর বড় ধাক্কা পড়েছিল বিশ্বের আর্থিক বাজারে। ২০২০ সালে আবার করোনা অতিমারির হাত ধরে বিপুল আর্থিক সংকট আসতে চলেছে, পূর্বাভাস দিলেন আইএমএফ প্রধান।
তিনি জানান, করোনার আগের পরিস্থিতিতে ১৬০ দেশে মাথা পিছু আয় বৃদ্ধির আশা ছিল। কিন্তু এখন প্রায় ১৭০ টি বেশি দেশে মাথা পিছু আয় কমার আশঙ্কা করছেন তাঁরা৷
জর্জিয়াভা বলেন, যদি এই বছরের মাঝামাঝি এসে এই অতিমারির প্রকোপ কমে, তবে আগামী বছর আংশিক পুনরুদ্ধার হতে পারে বলে আশা করা যায়। তবে তিনি সতর্ক করেছেন, এই পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। তাঁর কথায়, আমি জোর দিয়ে বলছি কী হবে তা নিয়ে প্রচণ্ড অনিশ্চয়তা রয়েছে। কত দিন এই অতিমারি থাকবে, তাছাড়া আরও বেশ কিছু বিষয়ের ওপর নির্ভর করে পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ হতে পারে বলে মন্তব্য করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়াভা। তিনি আরও জানান, অর্থনীতি যে বিপুল ক্ষতির মুখে পড়ল, আগামী বছর এর সামান্য অংশ মেরামত হবে।
বিশ্ব অর্থনীতি যে গুরুতর অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে গিয়েছে তা স্পষ্টভাবে জানালেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্রাক্তনী। তিনি বলেন, বেশ কিছু দেশ ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে। সমস্ত দেশকে ব্যবসার লাইফলাইন শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিতে হবে। অর্থাৎ, ব্যাপক অংশের মানুষের হাতে ন্যূনতম ক্রয়ক্ষমতা যাতে থাকে তা সুনিশ্চিত করতে হবে সরকারগুলিকে। তা না হলে বাজারে চাহিদা তৈরি হবে না। ফলে ভাইরাসের প্রকোপ কমার পর উৎপাদন শুরু হলেও তা ধাক্কা খাবে। আইএমএফ প্রধান আরও জানান, করোনার প্রভাব কোনও নির্দিষ্ট সীমানার মধ্যে আর আটকে নেই। এই বিপর্যয় কোনও একটি নির্দিষ্ট দেশের নয়। বরং সারা পৃথিবীর। যে অংশে করোনা থাবা বসায়নি সেখানকার অর্থনীতিও ধাক্কা খেয়েছে।
Comments are closed.