‘পঞ্চয়েত-২’তে মজে ওয়েব সিরিজ প্রেমীরা। প্রধানজী, সচিবজী, প্রহ্লাদ, বিকাশদের মতো ‘ফুলেরবাসী’র হ্যাংওভার এখনও অনেকেই কাটিয়ে উঠতে পারেনি। তবে শুধু মুখ্য চরিত্রই নয়, সিরিজের পার্শ্ব চরিত্ররাও নিজেদের অভিনয় দক্ষতায় নজর কেড়েছে দর্শকের। মুখ্য চরিত্রের মতোই তাঁরাও জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে গিয়েছে। ‘পঞ্চায়েত-২’ সিরিজে ‘বিনোদ’ও তেমনই এক চরিত্র। ‘বিনোদের’ চরিত্রে অভিনেতা অশোক পাঠক সাধারণ গ্রামবাসীর যে সরলতা পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছেন তা এক কথায় অতুলনীয়। কিন্তু জানেন কী সিরিজের মতোই অশোকের জীবনও বৈচিত্রে ভরা। আসুন এক নিজরে পর্দার বিনোদকে চিনে নেওয়া যাক।
অশোক পাঠক ১১ বছর ধরে অভিনয় করছেন। পঞ্চায়েত-২ তে জনপ্রিয়তা পেলেও অশোক দীর্ঘ দিন ধরেই বলিউডে ছোট ছোট ভূমিকায় অভিনয় করে আসছেন। ‘বিট্টু বস’ নামে এক হিন্দি ছবিতে তিনি প্রথম সুযোগ পান। সেই শুরু। মজার বিষয় পঞ্চায়েত ২-তে অভিনয়ের সুযোগ এসেছিল কিছুটা আকস্মিক ভাবেই। সেই সময় অন্য একটি ওয়েব সিরিজে কাজ করছিলেন অশোক। তখনই ‘পঞ্চায়েত’এর অডিশনের কথা জানতে পারেন। একটি সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, কোনও প্রত্যাশা না রেখেই অডিশন দিতে চলে গিয়েছিলেন। তিনি নির্বাচিত হবেন না বলেই ধরে নিয়েছিলেন। কিন্তু বেশ কয়েকদিন পরেই নির্মাতাদের থেকে তাঁর কাছে ফোন আসে। তারপর তো বাকিটা ইতিহাস।
বিহারের এক নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান অশোক। রোজগারের জন্য তাঁর পরিবার হরিয়ানা চলে আসে। খুব ছোট থেকেই অশোক পারিবারিক ব্যবসায় সাহায্য শুরু করেন। দশম শ্রেণীতে পড়ার সময় থেকে সাইকেলে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তুলো বিক্রি করতেন ছোট্ট অশোক। দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়ার সময় তাঁর পরিবারের আর্থিক অবস্থা কিছুটা ভালো হয়। কলেজে ভর্তি হন তিনি। সেখানে থেকেই তাঁর অভিনয়ের হাতে খড়ি। কলেজেই থিয়েটার গ্রুপে অভিনয় করতে শুরু করেন। ধীরে ধীরে অভিনেতা হওয়ার ‘ভূত চেপে’ বসে অশোকের মাথায়।
মাত্র ৪০ হাজার টাকা নিয়ে মুম্বাইয়ে পাড়ি দেন। পরিচালক, প্রযোজকদের দরজায় দরজায় হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন একটা সুযোগের আশায়। বড় কিছু না হলেও ছোটো ছোটো রোল পেতে শুরু করেছিলেন তিনি। পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেই বর্তমানে মুম্বাইয়ের একটি এক কামরার পাকা ঠিকানা করতে পেরেছেন অশোক। সম্প্রতি একটি ছোটো ফ্ল্যাট কিনেছেন। আর ‘পঞ্চায়েত-২’তে ‘ক্রান্তি’ আনতে না পারলেও জীবনের লড়াইতে কার্যত বিপ্লব ঘটিয়েছেন অশোক।
Comments are closed.