ক্লায়েন্ট প্রোজেক্টের দায়িত্বে নেই এমন কয়েক হাজার কর্মীকে ছাঁটাই করার অভিযোগ উঠল তথ্যপ্রযুক্তি জায়ান্ট কগনিজেন্টের বিরুদ্ধে। সংশ্লিষ্ট আইটি কোম্পানির বিরুদ্ধে আইনি পথে যাওয়ার হুঁশিয়ারি আইটি কর্মী সংগঠনগুলির।
যে কর্মীদের প্রোজেক্ট থেকে কিছু দিনের জন্য সরিয়ে রাখা হয়, তবে নিয়মিতভাবে পারিশ্রমিক দেওয়া হয় তাকে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের পরিভাষায় বলা হয় বেঞ্চ। তবে সাধারণত বেঞ্চে থাকেন খুব কম কর্মী।
কর্ণাটক এবং চেন্নাইয়ের রাজ্য আইটি কর্মচারী ইউনিয়নের অভিযোগ, ভারত জুড়ে প্রায় ১৮ হাজার কর্মচারীকে বেঞ্চে রেখেছিল কগনিজেন্ট। এখন তারা গণ-ছাঁটাইয়ের পথ নিয়েছে। কগনিজেন্টের বহু কর্মীর কাছ থেকে এই সব অভিযোগ পেয়ে নড়েচড়ে বসেছে কর্ণাটক স্টেট আইটি/আইটিইএস এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (KITU)। এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, কার্যকরীভাবে কর্মশক্তি ব্যবহারের নামে কগনিজেন্ট থেকে বিপুল সংখ্যক ছাঁটাইয়ের খবর পাওয়া যাচ্ছে। এর ফলে দেশজুড়ে কয়েক হাজার আইটি পেশাদারের রুজি রোজগারে কোপ পড়তে চলেছে। বহু ক্ষতিগ্রস্ত কর্মী আমাদের কাছে আবেদন ও অভিযোগ নিয়ে আসছেন। আমরা কগনিজিন্টের এই বেআইনি পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হচ্ছি। এ ব্যাপারে আইটি ইউনিয়নটি কর্ণাটক সরকারের কাছে হস্তক্ষেপের আবেদন জানিয়েছে বলে খবর।
এদিকে চেন্নাইয়ের আইটি ইউনিয়ন নিউ ডেমোক্রেটিক লেবার ফ্রন্ট (NDLF) এরও একই অভিযোগ। তারা জানাচ্ছে, কগনিজেন্টের চেন্নাইয়ের অফিসে বহু কর্মীকে বেঞ্চে রাখার পর আগামী ৪১ দিনের মধ্যে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে। উল্লেখ্য, এ দেশে টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেস লিমিটেড বা TCS এর পর দ্বিতীয় বৃহত্তম তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা হল কগনিজেন্ট। ভারতে তাদের কর্মী সংখ্যা ২ লক্ষের বেশি এবং বিশ্বব্যাপী কাজ করেন প্রায় ৩ লক্ষ কর্মী। এঁদের সিংহভাগ কর্মরত চেন্নাইয়ের অফিসগুলিতে।
এই গণ-ছাঁটাইয়ের কথা অবশ্য অস্বীকার করে কগনিজেন্টের মুখপাত্র জানিয়েছেন, পারফরমেন্সের ভিত্তিতে কিছু কর্মীকে বসানো হচ্ছে। তাঁর কথায়, এটাই তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে নিয়ম। কর্মী সংগঠনগুলো যে বিপুল সংখ্যক কর্মী ছাঁটাইয়ের অভিযোগ করছে, তা উড়িয়ে দিলেও প্রকৃত সংখ্যাটা কত তা বলতে চাননি ওই মুখপাত্র। তিনি ব্যাখ্যা করেন, তৃতীয় পক্ষ যে অভিযোগ আনছে তা কোনরকম তথ্যের উপর ভিত্তি করে নয়।
এদিকে আইটি ইউনিয়নগুলি জানিয়েছে, শ্রম আইন অনুসারে একশোর বেশি কর্মী আছে এমন সংস্থা যদি কর্মী ছাঁটাই করতে চায়, সেক্ষেত্রে শ্রম দফতরের অনুমোদন নিতে হয়। কগনিজেন্ট এক্ষেত্রে ঘুরপথে ছাঁটাই করছে। কর্মীদের পদত্যাগ করতে বাধ্য করার মাধ্যমে তাদের কর্মী সংকোচনের লক্ষ্যপূরণ করছে।
মাসখানেক আগেই, চেন্নাইয়ে অল ইন্ডিয়া ফোরাম ফর আইটি/আইটিইএস এমপ্লয়িজ সেখানকার লেবার কমিশনকে এ বিষয়ে চিঠি দিয়েছিল। চিঠিতে ইউনিয়নের অভিযোগ ছিল, যেসব কর্মীদের প্রোজেক্টে কাজ ছিল না তাঁদের জোর করে পদত্যাগ করাচ্ছে কগনিজেন্ট।
Comments are closed.