দেশে কর্মসংস্থানের বেনজির আকাল, বিভিন্ন সেক্টরে চলছে টানা মন্দা। এর মধ্যে ২০২৫ সালের মধ্যে ভারতে ১০ লক্ষ নতুন কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিলেন মার্কিন ই-কমার্স জায়ান্ট অ্যামাজন।
ভারতে তিন দিনের সফর শেষ করেছেন অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও জেফ বেজোস। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল সাফ জানিয়েছেন, ভারতীয় বাজারে কোনও ‘উপরি সুযোগ’ পাবে না অ্যামাজন। দেশের খুচরো ব্যবসায়ীদের স্বার্থের দিকটাও দেখতে হবে। যদিও ভারতের খুচরো বাজারে বিনিয়োগ বাড়াতে কুণ্ঠা নেই অ্যামাজনের। শুক্রবারই ই-কমার্স সংস্থার তরফে ঘোষণা, ২০২৫ সালের মধ্যে ভারতে ১০ লক্ষ নতুন কর্মসংস্থানের ব্যাপারে উদ্যোগী হচ্ছে তারা। প্রযুক্তি, ইনফ্রাস্ট্রাকচার ও লজিস্টিক নেটওয়ার্কে বিপুল বিনিয়োগের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে অ্যামাজন। সেই সঙ্গে তৈরি হবে লক্ষ লক্ষ কর্মসংস্থান।
শুক্রবার এক প্রেস বিবৃতিতে অ্যামাজনের তরফে ঘোষণা, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তথ্যপ্রযুক্তি, দক্ষতা উন্নয়ন, খুচরো, লজিস্টিক, উৎপাদন সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ৭ লক্ষ চাকরি সুযোগ করে দেবে তারা। আগামী ছ’বছরে বিপুল বিনিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে এ দেশে।
অ্যামাজনের কর্ণধার জেফ বেজোস গত বুধবার জানান, ভারতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করছেন তাঁরা। সেই সঙ্গে আগামী পাঁচ বছরে ভারতে প্রায় ১০ লক্ষ চাকরি তৈরির কথা বলেছেন বেজোস। তিনি জানান, ভারতে খুচরো বাজার সহ বিভিন্ন জায়গায় প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছ। আগামী সময়ে ভারতে বিনিয়োগ বাড়াতে তাঁরা বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েছেন।
এদিকে ভারতের প্রত্যন্ত গ্রামঞ্চলে কর্মসংস্থান তৈরি ও দক্ষতা উন্নয়নে বিশেষ জোর দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ২০২২ সালের মধ্যে গ্রামাঞ্চলের ১০ কোটি যুবক যুবতীর কর্মসংস্থান ও দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। সেদিক থেকে অ্যামাজনের এই ঘোষণা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
দেশজুড়ে কর্মসংস্থানের অভাবের সময় অ্যামাজনের এই ঘোষণা উদ্দীপনা যোগাতেই পারত কেন্দ্রকে। কিন্তু সমস্যা অন্যত্র। বিশ্বের অন্যতম ধনী শিল্পপতি জেফ বেজোস এমন একটা সময় ভারত সফর করলেন যখন তাঁর সংস্থা অ্যামাজন ও ফ্লিপকার্টের বিরুদ্ধে অনৈতিক ব্যবসার অভিযোগে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কম্পিটিশন কমিশন অফ ইন্ডিয়া (সিসিআই)। মোবাইল ফোন, ইলেকট্রনিক্স দ্রব্য থেকে ব্র্যান্ডেড জামাকাপর বিশাল ছাড় দিয়ে ভারতীয় বাজারে বিক্রি করছে অ্যামাজন ও ফ্লিপকার্ট। দীর্ঘদিন ধরে তাদের এই ‘অনৈতিক’ ব্যবসার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে খুচরো ব্যবসায়ীদের সংগঠন। বেজোসের ভারত সফরের প্রেক্ষিতেই অবশ্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পিযূষ গোয়েল সাফ জানিয়েছেন, ভারতে এক বিলয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করে কোনও ‘বড়’ উপকার করছে না তারা। গোয়েলের ঘোষণা, ভারতে অ্যামাজনের ‘অনৈতিক ব্যবসা’ চলবে না।
Comments are closed.