গণতন্ত্রে বিক্ষোভ প্রদর্শনের আলাদা গুরুত্ব রয়েছে, ভারভারা রাওদের গ্রেফতারি মামলায় মত বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের  

গত বছর ৩১ ডিসেম্বর পুণের ভীমা কোড়েগাঁওয়ে দলিত-উচ্চ বর্ণের সংঘর্ষের ঘটনায় ইন্ধন জোগানো এবং প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ধৃত ভারভারা রাওস পাঁচ বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মীর গৃহবন্দি থাকার মেয়াদ আরও চার সপ্তাহ বাড়াল সুপ্রিম কোর্ট। তবে এই ঘটনার তদন্ত বিশেষ তদন্তকারী দলকে (সিট) দিয়ে করানোর আবেদন এদিন খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ শুক্রবার এই রায় দিয়েছে। কোর্ট এদিন জানিয়েছে, সরাসরি এই কেস নিয়ে কোনও মত এখনই কোর্ট জানাচ্ছে না, কারণ তাতে তদন্ত প্রভাবিত হতে পারে। তবে কোর্ট এদিন জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে পুলিশের তরফে যে প্রমাণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তাতে মনে হয় না ধৃতদের সাথে ওই ঘটনায় মাওবাদীদের জড়িত থাকার অভিযোগ ঠিক। তবে উল্লেখযোগ্যভাবে এদিন বিচারপতি চন্দ্রচূড়
কিছুটা ভিন্ন সুরে বলেন, গণতন্ত্রে বিক্ষোভ প্রদর্শনের আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। তাকে যদি পুলিশ দিয়ে দমিয়ে রাখার চেষ্টা হয়, তবে তা ঠিক নয়। প্রয়োজনে কোর্ট যদি মনে করে যে যথাযথ তদন্ত হচ্ছে না তাহলে হস্তক্ষেপ করতে পারে।
উল্লেখ্য, বিশিষ্ট এই পাঁচ মানবাধিকার কর্মীর গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতে আবেদন করেছিলেন ঐতিহাসিক রোমিলো থাপারসহ বেশ কয়েকজন।
মাওবাদীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার অভিযোগে প্রায় এক মাস আগে একই সঙ্গে দিল্লি, মুম্বই, রাঁচি, গোয়া, হায়দরাবাদ, ফারিদাবাদের মতো দেশের একাধিক শহরে ১০ জন বিশিষ্ট সমাজকর্মীর বাড়িতে অভিযান চালায় পুণে পুলিশ। গত ৩১ডিসেম্বর মহারাষ্ট্রের ভীমা-কোড়েগাঁওয়ে দলিত ও উচ্চ বর্ণের সংঘর্ষের ঘটনায়, মাওবাদীদের সঙ্গে যোগ আছে বলে গ্রেফতার করা হয় ভারভারা রাও, অরুণ ফেরেরা, গৌতম নওলাখা, সুধা ভরদ্বাজ, ভার্ণন গঞ্জালভেসের মতো কবি, লেখক আইনজীবীদের।  তাঁদের আরবান নকশাল তকমা দিয়ে পুলিশ দাবি করে, ধৃতদের সঙ্গে মাওবাদীদের সম্পর্ক রয়েছে। এবিষয়ে সম্পূর্ণ নিশ্চিত হয়ে তবেই তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এবিষয় প্রমাণের জন্য তাঁদের কাছে হাজার হাজার নথি ও চিঠি রয়েছে বলেও দাবি পুলিশের। পুলিশের দাবি, এই বৃহত্তর চক্রান্তের অংশ হিসাবে দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদেরও সংগঠিত করার চেষ্টা চলছিল, যাতে নির্বাচিত সরকার ফেলে দেওয়া যায়।  এই ঘটনায় জড়িত অভিযোগে এর আগে সুরেন্দ্র গ্যাডলিং, রোনা উইলসন, সুধীর ধাওয়ালে, সোমা সেন ও মহেশ রাওয়াত নামে আরও পাঁচ জনকে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাঁরা বর্তমানে জেলে রয়েছেন। এমনকী ধৃতরা সরকার ফেলে দেওয়ার জন্য চক্রান্ত এবং রকেট লঞ্চার কেনার জন্য মাওবাদীদের সঙ্গে চিঠি চালাচালি করেছেন বলেও দাবি পুণে পুলিশের।

Comments are closed.