২০১৯ লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বিজেপি বিরোধী দলগুলির জোটবদ্ধ হওয়ার প্রক্রিয়া। কংগ্রেস তো বটেই সিপিএম, তৃণমূল কংগ্রেস থেকে শুরু করে লালু প্রসাদের আরজেডি, চন্দ্রবাবু নাইডুর টিডিপি সবাই নিজের মতো করে বিজেপি সরকার হঠানোকেই লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে। এই জায়গায় দাঁড়িয়ে পাঁচ রাজ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিধানসভা ভোটের ঠিক আগে কর্ণাটকে উপনির্বাচনে বড়সড় ধাক্কা খেল বিজেপি।
কর্ণাটকের লোকসভা এবং বিধানসভা মিলে মোট ৫ টি আসনের উপনিবাচনে ৪ টিই জিতল কংগ্রেস-জেডিএস জোট। তার মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বল্লারি লোকসভা কেন্দ্রে বিতর্কিত রেড্ডি ভাইয়ের ঘনিষ্ঠ স্ট্রংম্যান বিজেপির বি শ্রীরারুমুলুর বোনকে প্রায় আড়াই লক্ষ ভোটে হারাল কংগ্রেস। কংগ্রেস-জেডিএস জোট ২ টি লোকসভা এবং ২ টি বিধানসভা আসন জিতেছে, বিজেপি জিতেছে মাত্র ১ টি লোকসভা আসন। কর্ণাটকের এদিনের ফলকে তাঁদের নৈতিক জয় বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী।
পাঁচ রাজ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে এদিন কর্ণাটকের ৫ টি আসনের এই ফল স্বাভাবিকভাবেই বাড়তি অক্সিজেন দেবে কংগ্রেসসহ সমস্ত বিরোধী দলকে। এবং স্বাভাবিকভাবেই রীতিমতো চাপে পড়ে গেলেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ জুটি। ইতিমধ্যেই কংগ্রেস সভাপতি বিভিন্ন রাজ্যে বিজেপি বিরোধী দলগুলির সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন। বহুদিন আগেই তৃণমূল নেত্রী ঘোষণা করেছেন, বিজেপিকে হঠানোই মূল লক্ষ্য এবং যেখানে যার শক্তি আছে, সেখানে সেই দল বিজেপির বিরুদ্ধে লড়বে। আগামী জানুয়ারি মাসে কলকাতার ব্রিগেডে বিজেপি বিরোধী দলগুলির সমাবেশ ডেকেছেন তৃণমূল নেত্রী। সিপিএমও নিজের মতো করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বিজেপিকে কেন্দ্র থেকে ক্ষমতাচ্যূত করাই প্রধান কর্তব্য। কয়েকদিন আগেই অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু দিল্লিতে রাহুল গান্ধীর সঙ্গে দেখা করে বিজেপি বিরোধী ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের বার্তাই দিয়েছেন।
মে মাসে কর্ণাটকে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও জোট সরকার গঠন করে কংগ্রেস এবং জেডিএস। তাই নানা দিক থেকেই এই উপনির্বাচন ছিল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বিজেপি ভালো রেজাল্ট করলে কর্ণাটকে সরকারের ওপর চাপ তৈরি করতে পারতেন অমিত শাহ এবং রাজ্যের বিজেপি নেতারা। কিন্তু সেখানে বিজেপি মুখ থুবড়ে পড়ায় একদিকে যেমন জোট সরকার অনেকটাই মজবুত হল, পাশাপাশি ৫ টি রাজ্যের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের কেন্দ্রের শাসক দল অনেকটাই ধাক্কা খেল।
Comments