৫-১১ মে, ৭ দিনে কলকাতায় কনটেইনমেন্ট জোন ৩০৫ থেকে বেড়ে ৩২৮, কোন বরো এবং ওয়ার্ড বেশি সংক্রমিত? দেখে নিন পুরো লিস্ট
রাজ্যে করোনা সংক্রমিত রোগীর হিসেবে কলকাতা সবচেয়ে এগিয়ে। একেবারে শুরুর দিন থেকেই কলকাতার আনাচে কানাচে বাড়ছিল সংক্রমিতের সংখ্যা। সেই অনুযায়ী কনটেইনমেন্ট জোন ধরে ধরে কমপ্লিট লকডাউন করা হয়। কলকাতা পুরসভার হিসেব অনুযায়ী কলকাতা পুলিশের জারি করা কনটেইনমেন্ট তালিকার তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে শহরের কয়েকটি এলাকাকে করোনা প্রবণতার মাপকাঠিতে শীর্ষে রয়েছে বলে ধরা যায়।
এর আগে আমাদের প্রতিবেদনে দেখা গিয়েছিল, আর্থিক অবস্থার উপর ভিত্তি করে শহরের বিভিন্ন কম রোজগারসম্পন্ন এলাকায় করোনাভাইরাসের প্রকোপ বেশি। পুরসভার ওয়ার্ড ধরে ধরে বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছিল মূলত শহরের মধ্যবর্তী এবং দক্ষিণ ঘেঁষা মধ্য কলকাতায়, যেখানে সাধারণভাবে কম আর্থিক সঙ্গতি সম্পন্নদের বাস, সেখানে করোনাভাইরাসে সংক্রমিতদের সংখ্যা বেশি।
৫ মে কলকাতা পুলিশ কনটেইনমেন্ট তালিকা প্রকাশ করেছিল। তখন শহরে কনটেইনমেন্টের সংখ্যা ছিল ৩০৫ টি। তারপর থেকে লাগাতার বিভিন্ন পরিবর্তন ও পরিবর্ধন হয়েছে সেই তালিকায়। সর্বশেষ তালিকা ১১ মে বা সোমবারের। সেদিন মোট কনটেইনমেন্টের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩২৮। দেখুন সোমবার প্রকাশিত কলকাতা শহরের কনটেইনমেন্ট এলাকার সম্পূর্ণ তালিকা Kolkata Containment Areas as on 11-05-2020
এই এক সপ্তাহের শুরুতে এবং শেষে প্রকাশিত কনটেইনমেন্ট লিস্টের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, ১১ মে কলকাতা পুরসভা এলাকার বরোওয়াড়ি বিশ্লেষণ বলছে, করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা সর্বাধিক ৭ নম্বর বরোতে। সেখানে মোট কনটেইনমেন্টের সংখ্যা ৪৯। এক সপ্তাহ আগে অর্থাৎ ৫ মে কলকাতা পুলিশের তালিকায় সবচেয়ে বেশি কনটেইনমেন্ট জোন ছিল সেই ৭ নম্বর বরোতেই। ৫ তারিখ সেখানে মোট ৫১ টি কনটেইনমেন্ট জোন ছিল। এক সপ্তাহের ব্যবধানে বরো ৭ এ কনটেইনমেন্টের সংখ্যা কমেছে ২ টি।
৫ মের তালিকায় সবচেয়ে কম কনটেইনমেন্ট জোন ছিল ১৪ এবং ১৬ নম্বর বরোতে। এই দুই বরোতে মাত্র ২ টি করে কনটেইনমেন্ট জোন। গত সোমবারের তালিকায় দেখা যাচ্ছে ১৪ নম্বর বরোতে কনটেইনমেন্ট জোন ২ ই আছে। কিন্তু ১৬ নম্বর বরোতে ১ টি কনটেইনমেন্ট জোন বেড়ে হয়েছে ৩।
এবার দেখে নেওয়া যাক, কলকাতার ওয়ার্ডভিত্তিক হিসেব। ৫ তারিখ প্রকাশিত লিস্টে সবচেয়ে বেশি কনটেইনমেন্ট ছিল জোন ছিল ৬৬ নম্বর ওয়ার্ডে, ১৫ টি। এক সপ্তাহ পর দেখা যাচ্ছে ৬৬ নম্বর ওয়ার্ডে কনটেইনমেন্ট জোন কমে হয়েছে ১২। ৬৫ নম্বর ওয়ার্ডে ৫ তারিখ কনটেইনমেন্ট এরিয়া ছিল ৭ টি। ১১ তারিখের তালিকায় দেখা যাচ্ছে তা বেড়ে হয়েছে ৯ টি।
৬৬ নম্বর ওয়ার্ড মূলত তপসিয়া এলাকা এবং জি জে খান রোডের দু’পাশের অঞ্চল। আবার ৬৫ নম্বর ওয়ার্ডে পড়ছে তিলজলা এলাকা, বন্ডেল রোড, ব্রাইট স্ট্রিট, পাম অ্যাভেনিউ, ব্রড স্ট্রিট, রাইফেল রেঞ্জ রোড, পিকনিক গার্ডেন্স এলাকা। দুই মিলিয়ে তপসিয়া থেকে কড়েয়া, তিলজলা হয়ে প্রায় পুরো পুরনো বালিগঞ্জ এলাকা।
এই এলাকায় বিক্ষিপ্তভাবে স্বচ্ছল পরিবারের বাস আছে ঠিকই কিন্তু মূলত এই এলাকা শ্রমজীবী মানুষের ঘনবসতি হিসেবেই পরিচিত। এবং দেখা যাচ্ছে, এই এলাকাগুলোতেই করোনাভাইরাস দাপট অন্য জায়গার তুলনায় অনেক বেশি।
তবে পুরো তালিকা বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, দক্ষিণ কলকাতার চেয়ে উত্তর ও মধ্য কলকাতার বরো এলাকাগুলোতেই করোনাভাইরাসের দাপট সামগ্রিকভাবে বেশি। কিন্তু এককভাবে এগিয়ে মূলত দক্ষিণ-মধ্য কলকাতার দুই ওয়ার্ড।
Comments are closed.