দৃষ্টান্ত! করোনা রোগীদের মুখে খাওয়ার তুলে দিতে মুশকিল আসান ইন্সপেক্টর আলি
পুলিশের চাকরিতে থাকায় অতিমারির ভয়াবহতার অভিজ্ঞতাও ভাগ করে নিলেন
কলকাতা পুলিশে কর্মরত। গত বছর জুন মাসে নিজে করোনা সংক্রমিত হয়েছিলেন। সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা থেকে কোভিড সংক্রমিতদের সাহায্যের জন্য এগিয়ে এলেন কলকাতা পুলিশের ইন্সপেক্টর নাজিম আলি।
কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে কার্যত কাবু তিলত্তমা। এই কঠিন সময় শহরের অনেক সহৃদয় ব্যক্তি কোভিডে গৃহবন্দি রুগীদের বাড়ির রান্না করা খাওয়ার বিনামূল্যে পৌঁছে দিচ্ছেন। কিন্তু এই কাজে, খাওয়ার ডেলিভারি একটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ডেলিভারির লোক নেই বলে অনেকে কাজ শুরু করেও মাঝপথে বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।
সেই সমস্যা মেটাতে উদ্যোগী হয়েছেন নাজিম আলি। জানালেন তাঁর নিজেরই গাড়ি এবং ড্রাইভার রয়েছে। কোভিড সংক্রমিতদের কেউ খাওয়ার, জল, প্রয়োজনীয় ঔষুধ পৌঁছে দিতে চাইলে তাঁকে একটা ফোন করলেই হবে। তিনি নিজের গাড়িতে ড্রাইভার দিয়ে সম্পূর্ণ বিনা খরচে ডেলিভারি করবেন। আপাতত নরেন্দ্রপুর এবং গড়িয়া এলাকার জন্য এই পরিষেবা শুরু করেছেন। ফেসবুকে একটি পোস্টও দিয়েছেন।
পেশায় পুলিশ অফিসার। চাকরিতে রাত-দিনের কোনও বাছবিচার নেই। তাঁর ওপর সদ্য ভোট গেছে। হাজারো ব্যস্ততার মধ্যেও এই ধরনের কাজের জন্য সময় বের করেছেন কীভাবে? দেখুন, আমার গাড়ি আছে, ড্রাইভারও রয়েছেন। তাই এভাবেই চেষ্টা করছি যেটুকু মানুষের পাশে থাকা যায়।
কথায় কথায় নিজের সংক্রমিত হওয়ার সময়ের এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন। এমনও দেখেছি, একটি পরিবারের মা বাবা ছোট বাচ্চা তিনজনই কোভিড পজেটিভ। বাবা আমার পাশের বেডে শুয়ে। মা অন্য হাসপাতালে, বাচ্চাটি অন্য কোথাও। তিনজনে তিনটে হাসপাতালে থাকায় নিজেদের মধ্যে কোনও যোগাযোগ নেই। ভাবুন অবস্থা! বলছেন কলকাতা পুলিশের ইন্সপেক্টর নাজিম আলি।
পুলিশের চাকরিতে থাকায় অতিমারির ভয়াবহতার অভিজ্ঞতাও ভাগ করে নিলেন। তাঁরই কয়েকজন পরিচিত অক্সিজেনের অভাবে প্রাণ হারিয়েছেন। এই সব দেখে কী চুপ করে বসে থাকা যায়?
কলকাতা পুলিশের ইন্সপেক্টরের মন্তব্য, দেখুন সমাজ থেকে অনেক নিয়েছি, নিচ্ছিও, সেখানে কিছু যদি ফিরিয়ে দিতে পারি।
প্রবাদ আছে, বিপদে মানুষ চেনা যায়। অতিমারির কলকাতায় এরকম মানুষের সংখ্যা কম নয় যাঁরা মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। তেমন মানুষদেরই তুলে ধরার চেষ্টা করছি আমরা। আপনি চেনেন এমন কাউকে? জানান আমাদের।
Comments are closed.