গত কয়েক মাস ধরে লাগাতার সোশ্যাল মিডিয়ায় মোদী সরকারের সমালোচনা করে এসেছেন চিত্র পরিচালক ও অভিনেতা অপর্ণা সেন। জেএনইউ হামলা হোক কিংবা সিএএ বা এনআরসি- যে কোনও ইস্যুতে সরব হয়েছেন। সেই বিরোধিতা করতে গিয়ে কি এবার নিজেই বেকায়দায় অপর্ণা? সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো ছবি ও খবর ছড়ানোর অভিযোগ উঠল তাঁর বিরুদ্ধে। অপর্ণা সেনকে আইনি নোটিস পাঠানো হল ২০ জানুয়ারি।
গত ১২ জানুয়ারি নিজের ট্যুইটার হ্যান্ডেল থেকে একটি ছবি শেয়ার করেন অপর্ণা। সেখানে দেখা যায়, কয়েকজন পুলিশ কর্মী রাস্তায় বসে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ও এনআরসি-র বিরোধিতা করছেন।
যদিও এমন কোনও ঘটনা হয়নি বলে দাবি করেছেন মামলাকারী জনৈক জয় চক্রবর্তী। রাজারহাটের বাসিন্দা জয় চক্রবর্তীর অভিযোগ, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কিংবা এনআরসি-র বিরুদ্ধে এমন কোনও আন্দোলন করেননি পুলিশকর্মীরা। যে ছবিটি অপর্ণা সেন তাঁর ট্যুইটার হ্যান্ডেল থেকে পোস্ট করেন তা একটি ফটোশপ করা ছবি। মাস কয়েক আগে দিল্লি পুলিশ ও আইনজীবীদের মধ্যে বেনজির গণ্ডগোল হয়। সেখানে কয়েকজন পুলিশকর্মী আইনজীবীদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছিলেন। সেখানকারই একটি ছবি বিকৃত করে এনআরসি ও নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে পুলিশকর্মীদের আন্দোলন বলে চাউর হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। অপর্ণা সেন এমনই একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন বলে অভিযোগ।
অপর্ণা সেনকে পাঠানো আইনি নোটিসে বলা হয়েছে, শুধু বাংলারই নয়, সারা দেশের তিনি গর্ব। তাঁর চিন্তাভাবনা ও মন্তব্য জনমানসে প্রভাব ফেলে। তাই কোনও খবর বা ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করার আগে তাঁর বাড়তি দায়িত্ববোধ থাকা উচিত। কিন্তু ১২ জানুয়ারি অপর্ণা সেনের ওই ট্যুইট এক শ্রেণির মানুষকে ভুলপথে চালিত করেছে, তাঁর ট্যুইট বার্তা উস্কানিমূলক বলে অভিযোগ করা হয়েছে আইনি নোটিসে। অপর্ণার শেয়ার করা ছবি সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মীদের পেশার উপরও প্রভাব ফেলতে পারে বলে দাবি করা হয়েছে। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ও এনআরসি-র বিরুদ্ধে তাঁর মতামত থাকতেই পারে, কিন্তু আবেগতাড়িত হয়ে সত্যাসত্য বিচার না করে যে ফটোশপ করা ছবি তিনি পোস্ট করেছেন, তা অত্যন্ত নিন্দনীয় বলে অভিযোগ মামলাকারীর। এই প্রেক্ষিতে ১৫ দিনের মধ্যে মধ্যে এই শো-কজ নোটিসের জবাব চাওয়া হয়েছে অপর্ণা সেনের কাছে। কেন তাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।
কয়েক মাস আগে দেশজুড়ে গণপিটুনি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে খোলা চিঠি দেওয়ার প্রেক্ষিতে অপর্ণা সেন, ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহ সহ ৫০ জন বিশিষ্টের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছিল বিহারের মুজফফরপুরে।
Comments are closed.