অন্তর্বাস পরে থিসিস পেপার পড়লেন ছাত্রী, পোশাক নিয়ে অধ্যাপকের খোঁচার জবাব আমেরিকার কর্নেল ইউনিভার্সিটিতে
নারী নির্যাতন বাড়ছে কেন? ১৩৫ কোটির ভারতে এমন মানুষের সংখ্যা বিরল নয়, যাঁরা মনে করেন, নারীর পোশাকই আসলে পুরুষকে উত্তেজিত করে তাঁদের নির্যাতনের শিকার করে তোলে। যেন পোশাক দেখে উত্তেজিত হওয়াটাও পুরুষের জন্মগত অধিকারের মধ্যেই পড়ে। কট্টর হিন্দুত্ববাদী কিংবা তীব্র মৌলবাদী ইসলামি সংগঠন, মহিলাদের পোশাক আশাকে পশ্চিমী প্রভাবকেই দায়ী করার মনোভাব পোষন করেন। কেবলমাত্র ভারতই নয়, এই অসুস্থ মানসিকতার বিকাশ যে বিশ্বের সর্বোৎকৃষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও সমানভাবে বিদ্যমান, তা সামনে এল নিউইয়র্কের কর্নেল ইউনিভার্সিটির একটি ঘটনায়। এক ছাত্রীর পোশাক নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেছিলেন জগদ্বিখ্যাত ইউনির্ভাসিটির এক অধ্যাপক। তার উত্তরে ছাত্রীটি কেবলমাত্র অন্তর্বাস পড়ে থিসিস পেপার পড়েন এবং সমর্থনে পাশে দাঁড়ান সহপাঠীরা। ঘটনা নিয়ে তোলপাড় পশ্চিম দুনিয়া।
গবেষণাপত্র পড়ার চূড়ান্ত দিনের আগে কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ে সেদিন বসেছিল, অনুশীলনের ক্লাস। সিনিয়র গবেষক লেটিশিয়া চাই গবেষণাপত্র নিয়ে তৈরি। তাঁর ডাক পড়ার পরই, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন মহিলা অধ্যাপক তাঁকে উদ্দেশ্য করে বলেন, তোমার পোশাকটা বড্ড ছোট। গোটা ক্লাসের সামনে তাঁকে এমনভাবে বলায় কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন চাই। দৌড়ে বেরিয়ে যান ক্লাস থেকে। পিছন পিছন সেই অধ্যাপকও। মাঝ রাস্তায় হতচকিত চাইকে থামিয়ে অধ্যাপক বলতে থাকেন, তোমার মা যখন জানতে পারবেন তোমার এই পোশাকের কথা, তিনি কত দুঃখ পাবেন ভেবে দেখেছো? তখনই চাই স্থির করেন, এর জবাব দিতে হবে। জবাব আসে থিসিস পেপার পড়ার দিন।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট জানাচ্ছে, থিসিস পেপার পড়ার দিন, চাইয়ের নাম ঘোষণা হতেই তিনি পরিধেয় সমস্ত পোশাক খুলতে শুরু করেন। সহপাঠীরা তাঁকে উৎসাহ দেন। শেষে কেবলমাত্র অন্তর্বাস পরেই থিসিস পেপার পড়েন লেটিশিয়া চাই। ১৫ মিনিট পর পেপার পড়া যখন শেষ হয়েছে, দেখা যায়, গোটা ক্লাসের সবাই অন্তর্বাস পড়ে বসে রয়েছে। গোটা ঘটনা ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে দুনিয়ায়।
পোশাক নিয়ে বিরূপ মন্তব্যের কথা অবশ্য অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত অধ্যাপক। তবে তখন যথেষ্ট দেরি হয়ে গিয়েছে। মহিলাদের পোশাক নিয়ে আপত্তির ঘটনা তৃতীয় বিশ্বের দেশে নতুন না হলেও, এই মনোভাব প্রথম বিশ্বের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয়েও এভাবে গেঁড়ে বসে আছে, তা নতুন বৈকি। তবে, চাইয়ের উপযুক্ত জবাবের পর পরিস্থিতির বদল হয় কি না, সেটাই এখন দেখার।
Comments are closed.