সিঙ্গুর নিয়ে তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা ব্যানার্জির অনশনের ১৩ বছর পূর্ণ হল বুধবার। তাঁর এই অনশনকে যাঁরা সমর্থন করেছিলেন, তাঁদের সবাইকে ট্যুইটারে ধন্যবাদ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
২০০৬ সালে বিধানসভা ভোটে বিপুল ভোটে জিতে শপথ গ্রহণের দিনই মহাকরণে রতন টাটাকে পাশে বসিয়ে হুগলি জেলার সিঙ্গুরে ন্যানো প্রকল্প করার কথা ঘোষণা করেন পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তার পরে জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয়। সে কাজ করতে গিয়ে সরকারি অফিসাররা পদে পদে বাধা পান। অনেক জমির মালিক কারখানার জন্য জমি দিতে অস্বীকার করেন। তাঁদের পাশে দাঁড়ান মমতা। এদিকে অনিচ্ছুক কৃষকদের নিয়ে জমি অধিগ্রহণের বিরোধিতায় তিনি আন্দোলন শুরু করেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, বামফ্রন্ট সরকার গায়ের জোরে জমি কেড়ে নিচ্ছে। কৃষকদের ৪০০ একর জমি ফেরানোর দাবিতে ২০০৬ সালের ৪ ডিসেম্বর অনশনে বসেন মমতা। দীর্ঘ ২৬ দিন অনশন করেন তিনি। ধারাবাহিক এই আন্দোলনের জেরে টাটা গোষ্ঠী একলাখি টাকার ন্যানো গাড়ির প্রকল্প সিঙ্গুর থেকে সরিয়ে গুজরাতের সানন্দে নিয়ে যায়। আর সিঙ্গুর আন্দোলন এবং পরে নন্দীগ্রাম আন্দোলনের উপর ভর করেই নিজেদের রাজনৈতিক ভিত শক্ত করেছিল তৃণমূল। যা এ রাজ্যের মসনদে বসতেও তাদের সাহায্য করে। সেই সময় তৃণমূল নেত্রীর সমর্থনে এগিয়ে এসেছিলেন সমাজের বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব। তাঁদের সবাইকে বুধবার ট্যুইটারে শুভেচ্ছা জানান মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা লেখেন, বলপূর্বক কৃষি জমি অধিগ্রহণ করা যাবে না- এই দাবি নিয়ে কৃষকদের স্বার্থে তাঁর অনশনকে সমর্থন করেছিলেন বিভিন্ন স্তরের মানুষ। তাঁদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে রাজ্যে ক্ষমতা দখলের পর সিঙ্গুরের কৃষকদের জমি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য অর্ডিন্যান্স জারি করে মমতা ব্যানার্জির সরকার। বিধানসভায় পাশ হয় সিঙ্গুর বিল। তা নিয়ে মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। শেষে সুপ্রিম কোর্ট বলে, ওই জমি কৃষকদের ফিরিয়ে দিতে হবে। ২০১৬ সালের ৩১ অগাস্ট সুপ্রিম কোর্ট ঐতিহাসিক রায়ে জানায়, ২০০৬ সালে সিঙ্গুরের জমি অধিগ্রহণ ছিল অবৈধ।
Comments are closed.