মমতা: ‘আমার মিটিংয়ে এসে ডিস্টার্ব করবেন না, অন্য কোনও রাজ্যে এমন উন্নয়ন দেখালে নাকখত দিয়ে বেরিয়ে যাব’
কেন মেজাজ হারালেন মমতা ব্যানার্জি?
গত ডিসেম্বরে উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগরের মমতার সভায় বেশ কয়েকজন প্ল্যাকার্ড হাতে হাজির হয়েছিলেন। মাঝেমধ্যেই সেই প্ল্যাকার্ড তুলে অভাব-অভিযোগের কথা জানাচ্ছিলেন তাঁরা। যা দেখে মেজাজ হারিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। বলেছিলেন, প্রয়োজনে আমাকে চিঠি লিখুন, নবান্নে জানান। রাজনৈতিক সভায় এসে এসব করছেন কেন? আপনারা কিন্তু তিন-চারজন গোটা সভাটাকে নষ্ট করছেন।
সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল সোমবার নদিয়ার রানাঘাটের সভায়। এদিন সভায় লোক হয়েছিল ভালোই। রাজ্যের একের পর এক উন্নয়নের কথা তুলে ধরে কেন্দ্রের বিজেপিকে নিশানা করছিলেন মমতা। হঠাৎই ছন্দপতন। ভাষণ থামিয়ে মমতার নজর দিলেন এক কোণার দিকে। প্রশ্ন ছুড়লেন,
‘এই কীসের ছবি তুলছো তোমরা ওখানে?’
সবার নজর ঘুরল সেদিকেই। দেখা গেল পোস্টার হাতে কয়েকজন কথা বলছেন। আর তাঁদের ছবি তুলছেন চিত্র সাংবাদিকরা। সেদিকে নজর দিয়েই মমতার মন্তব্য, ‘আমি আপনাদের একটা কথা বলি, কারোর কথা বলার থাকলে চিঠি দেবেন ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির ক্যাম্পে। কোনও অসুবিধা নেই। মিটিংয়ের পরে পুলিশকে দিয়ে দেবেন। এরপরেই ক্ষুব্ধ মমতার প্রতিক্রিয়া, ‘আমার মিটিংয়ের সামনে দাঁড়িয়ে এই ডিস্টার্ব করবেন না। এই যে ডিস্টার্ব করেন আমার ভালো লাগে না। সকাল থেকে আমি এই কাজটাই করে যাই।’
এরপরেই মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, মাত্র একমাস আগে একহাজার টাকা বেতন বাড়ানো হয়েছে আশা ও আইসিডিএস কর্মীদের। ৫০০ টাকা বাড়িয়েছি সহয়িকাদের জন্য। তারপরেই তৃণমূল সরকারের আমলে রাজ্যের উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরে তৃণমূল নেত্রীর চ্যালেঞ্জ, কোনও সরকার এত কাজ করেছে দেখাতে পারলে নাকখত দিয়ে রাজনীতি ছেড়ে দেব।
বিজেপির সোনার বাংলাকে স্লোগানকে কটাক্ষ করে মমতার দাবি, বাংলায় আর কোনও কাজ বাকি নেই। সবকিছুই হয়ে গিয়েছে। সোনার বাংলা আগেই ছিল, এখন তা বিশ্ব বাংলা হচ্ছে।
গোপালনগরের সভা থেকে মমতা বলেছিলেন, ‘বলারও একটা জায়গা আছে, কাজ করারও একটা লিমিট আছে। পরের মিটিংয়ে এসব দেখলে আমি আর সেই কাজ করব না। এটা খুব ভালো প্রবণতাও নয়। সবকিছুর একটা সিস্টেম থাকে। রাজনৈতিক মিটিংয়ে সরকারের কাজ করব না।’ এদিন আবার সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখে মেজার হারান তৃণমূল নেত্রী। এরপর সভার মাঝখানে আবার দেখা যায় কয়েকজন উঠে দাঁড়িয়েছেন। তাঁদের উদ্দেশে মমতার মন্তব্য, যাঁরা যেতে চান, ছেড়ে দিন! অনেক ক্ষণ সভায় আছেন, বাড়ি- ঘরে হয়ত কাজ আছে। ওনাদের ছেড়ে দিন। বাইরে এখনও ৩০- ৪০ হাজার দাঁড়িয়ে আছেন, তাঁরা ঢুকে যাবেন।
তবে সভা শেষে উঠে দাঁড়ানো ওই ব্যক্তিদের কী অসুবিধা রয়েছে তা প্রশাসনের কাছে লিখিত আকারে জমা দেওয়ার কথা জানিয়ে মঞ্চ ছাড়েন তৃণমূল নেত্রী।
Comments are closed.