অসমে এনআরসি: ১৯ লক্ষ মানুষ দেশের নাগরিক নন, তীব্র প্রতিক্রিয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের

এনআরসি তালিকা নিয়ে অসমজুড়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভের মধ্যেই তীব্র প্রতিক্রিয়া দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঠিক তালিকা প্রকাশের জন্য সরকারের উদ্যোগ নেওয়া উচিত বলে জানিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
চূড়ান্ত এনআরসি তালিকায় সাড়ে ১৯ লক্ষ মানুষের নাম বাদ গেল। ১৯৫২ সালের পর প্রথম অসমে এনআরসি প্রকাশিত হল শনিবার। আগে প্রকাশিত খসড়া এনআরসি তালিকায় বাদ পড়েছিল ৪১ লক্ষ মানুষের নাম। তখন থেকেই অলোড়ন শুরু হয়। অভিযোগ ওঠে, বহু প্রকৃত ভারতীয়র নামও এই খসড়া তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের সময়সীমা বাড়িয়ে দেওয়া হয়। চরম উত্তেজনার মধ্যে শনিবার সকাল ১০ টায় অনলাইনে প্রকাশিত হয় এনআরসি তালিকা। অসমের প্রায় ৩ কোটি ১১ লক্ষ মানুষের নাম স্থান পেয়েছে প্রকৃত নাগরিকের তালিকায়। বাদ পড়েছে সাড়ে ১৯ লক্ষ নাম। চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর কংগ্রেস সহ বিভিন্ন বিরোধী দল তো বটেই, শাসক দল বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরা পর্যন্ত ভুলে ভরা তকমা দিয়ে এনআরসি তালিকা বর্জনের ডাক দিয়েছেন।
এদিকে, এই এনআরসি তালিকা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভুলে ভরা তালিকা নিয়ে শনিবার এবং রবিবার ট্যুইট করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির আত্মীয় থেকে শুরু করে সেনা, সিআরপিএফ কর্মী, অনেকেরই নাম তালিকায় না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি, নাগরিকত্ব হারানো ১৯ লক্ষ মানুষের মধ্যে ১ লক্ষ গোর্খার নাম রয়েছে বলেও উষ্মা প্রকাশ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
অসমের অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা এতদিন ছিলেন এনআরসির বড় সমর্থক। তিনিও বলছেন, এই এনআরসি তালিকা অসমের লক্ষ্যপূরণে সহায়ক হবে না। কারণ, একদিকে প্রকৃত ভারতীয় নাগরিকদের নাম বাদ গিয়েছে, আবার বহু অনুপ্রবেশকারীর নামও ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। যে সফটওয়্যার সংস্থা এই তালিকা তৈরির দায়িত্বে ছিল তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে বিজেপিই।
যদিও কেন্দ্র জানিয়েছে, বাদ পড়া ১৯ লক্ষ মানুষ ১২০ দিনের মধ্যে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে আবেদন করতে পারবেন। তারপর তাঁরা হাইকোর্ট কিংবা সুপ্রিম কোর্টেও যেতে পারবেন।

Comments are closed.