বাংলাকে গুজরাত হতে দেব না। বিভাজনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করুন। উর্ত্তীর্ণ মুক্তমঞ্চে ‘বাংলা সঙ্গীত মেলা’ র উদ্বোধনী অনুষ্ঠান থেকে বার্তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির।
বুধবার উত্তীর্ণ মঞ্চে ‘সঙ্গীতমেলা’ এবং ‘বিশ্ববাংলা লোকসংস্কৃতি উৎসব’-এর উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকে মমতা বলেন, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সম্প্রীতির জায়গা হল সঙ্গীত। এখানে কোনও ভেদাভেদ নেই। সঙ্গীতের মঞ্চ কখনও বিভাজনে বিশ্বাস করে না। মমতার কথায়, সঙ্গীত যেমন গান, হারমোনিয়াম, তবলা, বাঁশি ইত্যাদি বাদ্যাংশের সমাহার। ঠিক তেমনই মানবজীবনকে ভাগ করা যায় না। আমাদের পদবি আলাদা, চেহারা আলাদা, গায়ের রং আলাদা। কিন্তু আমরা সবাই এই বিশাল পৃথিবীর একই পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। তাই এখানে বিভাজন হতে দেব না। তিনি আরও বলেন, বাংলার মাটিকে যতই বদনাম করার চেষ্টা হোক, একদিন বাংলাকেই স্যালুট করতে হবে সারা বিশ্বকে। বাংলাকে গুজরাত হতে দেব না, মন্তব্য মমতার।
প্রসঙ্গত, ২৪ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর, সাত দিন ধরে সঙ্গীত মেলা অনুষ্ঠিত হবে কলকাতার ১০টি ভেন্যুতে। তালিকায়, রবীন্দ্র সদন, শিশির মঞ্চ, রবীন্দ্র-ওকাকুরা ভবন, ফণীভূষণ বিদ্যাবিনোদ যাত্রামঞ্চ, হেদুয়া পার্ক, মধুসূদন মুক্তমঞ্চ, একতারা মুক্তমঞ্চ, বড়িশা ক্লাব ময়দান, দেশপ্রিয় পার্ক এবং রাজ্য সঙ্গীত আকাদেমি মুক্তমঞ্চ। পাশাপাশি ২৯ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চারুকলা পর্ষদ প্রাঙ্গন সংলগ্ন মুক্তমঞ্চে এবং ১ জানুয়ারি একতারা মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘বিশ্ববাংলা লোকসংস্কৃ্তি উৎসব’। বুধবার এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সরকারের তরফে ‘সঙ্গীত মহাসম্মান’ ও ‘সঙ্গীত সম্মান’ জানানো হয় ২২ জন শিল্পীকে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, প্রতি বছরের মতো এবছরও মেলায় জোর দেওয়া হবে লোকগীতির ওপর।
প্রয়াত অভিনেতা সৌমিত্র চ্যাটার্জিকে শ্রদ্ধা জানানো হয় এই মঞ্চে। সেই সঙ্গে কিংবদন্তি গায়ক ও সুরকার হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে গগনেন্দ্র প্রদর্শনশালায় প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে ২৪ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত।
তবে কোভিড বিধি মেনে যে কটি প্রেক্ষাগৃহে এই অনুষ্ঠান হচ্ছে তার প্রতিটিতেই, সিনেমা হলের মতো একটি করে আসন ছেড়ে বসার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। মেলায় অংশগ্রহণ করার কথা রয়েছে পাঁচ হাজারেরও বেশি সঙ্গীত শিল্পী ও যন্ত্র শিল্পীর। মমতার কথায়, ভয় ও সংশয় কাটিয়ে এবার আস্তে আস্তে বাইরে বেরতে হবে আমাদের। তবে অবশ্যই কোভিড বিধি মেনে চলতে হবে সবাইকে। মাস্ক ব্যবহার জরুরি। শীতকালে হাত- পা ধোয়া, জামাকাপড় স্যানিটাইজ করার দিকে সমান খেয়াল রাখার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন কোভিড পরিস্থিতিতে প্রচুর মানুষের আয় বন্ধ হয়েছে। শিল্পীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাই জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারির মধ্যে ৬৩০ টি মেলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাঁর সরকার। যেখানে প্রচুর শিল্পী ও ব্যবসায়ীর রোজগারের বন্দোবস্ত হবে।
Comments are closed.