করোনা: ১০৪ টি সেফ হাউস করছে রাজ্য, রোগী ফেরাবেন না বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে কড়া বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

করোনাভাইরাস সংক্রমণ ক্রমেই বাড়ছে। সংক্রমিতদের চিকিৎসার জন্য রাজ্যজুড়ে তৈরি হয়েছে ৭৭ টি কোভিড হাসপাতাল। এ জন্য বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালও নিয়েছে রাজ্য। পাশাপাশি রয়েছে সরকারি হাসপাতাল। এবার রাজ্য সরকার ১০৪ টি সেফ হাউস তৈরি করছে। এই সেফ হাউসগুলোতে মৃদু উপসর্গ আছে এমন সংক্রমিতদের রাখা হবে। সেখানেই ডাক্তার এসে তাঁদের দেখবেন, খেতে দেওয়া হবে বাড়ির খাবার। হাসপাতালে মূলত ভর্তি করা হবে সিরিয়াস রোগীদের। পরবর্তীতে এই পদ্ধতি সফল হলে রাজ্যজুড়ে আরও সেফ হাউস করা হবে বলে বুধবার জানান মুখ্যমন্ত্রী।

মমতা ব্যানার্জি বলেন, কোনও পরিবারে ১০ জন সংক্রমিতের মধ্যে হয়ত ১ জনের অবস্থা গুরুতর। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে বাকিদের সেফ হাউসে রাখা হবে। এই প্রসঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী বেসরকারি হাসপাতালগুলোকেও কড়া বার্তা দেন। রোগী ফেরানোর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শুনতে লজ্জা লাগে যদি কোনও সিনিয়র ডাক্তারকে চিকিৎসা করাতে বিভিন্ন নার্সিংহোমের দোরে দোরে ঘুরতে হয়। এটা অমানবিক। বৃহস্পতিবার বেসরকারি হাসপাতালগুলোর সঙ্গে বৈঠক করবেন মুখ্যসচিব। সেখানে রোগী ফেরানোর বিষয়ে বিশদে আলোচনা হবে। পাশাপাশি কোন হাসপাতালে কত বেড খালি আছে, সেই তথ্যও ঘণ্টায় ঘণ্টায় আপডেট করতে হবে বলে জানিয়ে দেন মমতা।

মুখ্যমন্ত্রী এদিন আরও একবার সকলকে হাত ধোয়া, ফিজিক্যাল ডিসট্যান্সিং মেনে চলা এবং বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পড়ার কথা বলেন। তিনি বলেন, করোনা লুকোবেন না। এটা কোনও ক্রাইম নয়। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, যাঁরা লুকিয়েছে, তাঁরা কিন্তু বিপদে পড়েছে। এই প্রসঙ্গেই মমতা আনেন দলীয় বিধায়ক তমোনাশ ঘোষের করোনা সংক্রমিত হয়ে পড়ার কথাও। তিনি বলেন, তমোনাশ যদি দুর্গাপুর থেকে ফিরেই ভর্তি হোত, তাহলে আজ হয়ত এতটা অসুস্থ হোত না। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আজ পরিস্থিতি এমনই যে ও বাঁচবে কিনা সেটাই বোঝা যাচ্ছে না। ওঁর অবস্থা খুব খারাপ। এছাড়াও মন্ত্রী সুজিত বোস এবং মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষের কথাও বলেন মুখ্যমন্ত্রী।

এদিন নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে ওঠে প্রধানমন্ত্রীর ডাকা ভিডিও মিটিংয়ে বাংলাকে বলতে না দেওয়ার প্রসঙ্গ। তৃণমূল এই ইস্যুতে আগেই সুর চড়িয়েছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী বলেন, একটা মিটিংয়ে গেলাম কি গেলাম না, তা দিয়ে বাংলার ভবিষ্যৎ ঠিক হবে না। তাঁর কথায়, প্রয়োজন মনে করেননি বলে ডাকেননি। তা নিয়ে ঝগড়া করার কোনও কারণ নেই।

এদিন লাদাখে মৃত ভারতীয় জওয়ানদের নিয়েও শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের দুই বাসিন্দা লাদাখে চিনের সেনার হাতে প্রাণ দিয়েছেন। তাঁদের পরিবারকে ৫ লক্ষ আর্থিক সাহায্য এবং সরকারি চাকরি দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ভারতকে দুর্বল ভাবলে খুব ভুল হবে। আমার দেশ প্রত্যাঘাত করতে জানে। এ বিষয়ে ভারত সরকারের নেওয়া যে কোনও পদক্ষেপের সঙ্গেই থাকবে তৃণমূল তথা বাংলা, এ কথাও সাফ জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।

Comments are closed.