ভারতেও আঘাত হেনেছে করোনাভাইরাস। নাওয়া খাওয়া ভুলে রোগীর চিকিৎসায় ব্যস্ত ডাক্তার থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যকর্মীরা। পুলিশ ব্যস্ত চিকিৎসা পরিষেবা নির্বিঘ্ন করতে। প্রধানমন্ত্রী দেশজুড়ে পুরোপুরি লকডাউনের ঘোষণা করেছেন। সব মিলিয়ে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় করোনা মোকাবিলায় ভারত।
মহামারি করোনাভাইরাসের তাণ্ডব শুরু হওয়ার সময় থেকেই নানা পদক্ষেপ নিয়ে চলেছেন মমতা ব্যানার্জি। কিন্তু সে তো বাকি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কিংবা দেশের প্রধানমন্ত্রীও করছেন, তাহলে মমতার নাম বিশেষ উল্লেখযোগ্য কেন?
উত্তর দিচ্ছেন অভিনেতা অনিন্দ্য চ্যাটার্জি। কী বলছেন টালিগঞ্জের এই তরুণ অভিনেতা? করোনাভাইরাস মোকাবিলাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে প্রথম দিন থেকে লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়াকে কুর্ণিশ। চুম্বকে এটাই অনিন্দ্য চ্যাটার্জির ট্যুইট।
কিন্তু অনিন্দ্যর মতো তরুণ অভিনেতা আচমকা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর এমন দরাজ প্রশংসা করলেন কেন? রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, তা জানতে আমাদের চোখ ফেরাতে হবে গত দু-তিন সপ্তাহে নবান্নের গতিপ্রকৃতির দিকে।
করোনাভাইরাস নিয়ে দেশের প্রত্যেকটি সচেতন মানুষ যা ভাবেন, মমতাও তার ভিন্ন কিছু ভাবেননি। তাহলে মমতা অনন্য কোথায়? উত্তর মিলছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যেখানে মুখ্যমন্ত্রীর এভাবে সামনে দাঁড়িয়ে অকুতোভয় নেতৃত্ব দেওয়া, মন জিতে নিয়েছে ঘরবন্দি ভারতের। তাঁরা বলছেন, বিপদের দিনে প্রশাসক মুখ্যমন্ত্রীর স্বভাবসিদ্ধ কঠোরতায় মিশেছে মমতার স্পর্শ। এই মানবিক যুগলবন্দিই মমতাকে অনন্য করেছে।
কঠোরভাবে কালোবাজারির পর্দাফাঁসের নির্দেশ দিচ্ছেন, তখন তিনি কড়া প্রশাসক। তেমনই হাতজোড় করে বাড়ির মা-বোনেদের দুরত্ব বজায় রাখতে, অতি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে না বেরোতে অনুরোধ করছেন। তখন তিনি বাড়িরই একজন। রাজনীতির উঠোন ডিঙিয়ে আম বাঙালির ঘরের ভিতর ঢুকে পড়াই মমতাকে আলাদা করেছে, বলছেন পর্যবেক্ষকরা।
খেলার স্টেডিয়াম রাতারাতি হাসপাতালে বদলে দেওয়া হোক, কিংবা সাংবাদিক বৈঠকে সবার সামনে এই লড়াইয়ের ফ্রন্ট লাইনের সৈনিক, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ প্রশাসনের প্রত্যেকটি যোদ্ধাকে ধন্যবাদ জানানো। স্বীকার করে নেওয়া পরিকাঠামোর ত্রুটি আছে, পাশাপাশি বলা, আমার বিশ্বাস তবুও আমরা পারব। কারণ আপনারা লড়াই করছেন। আমরা জিতবোই।
মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য লড়াইয়ের একেবারে প্রথম সারির সৈনিকদের বুকে তাজা অক্সিজেন ভরে দিয়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সবাইকে ফ্রি রেশন, আয়হীনদের জন্য হাজার টাকা অনুদান কিংবা গৃহহীনদের বিদ্যালয়ে আশ্রয় দেওয়ার সিদ্ধান্তে রাজনীতির চেয়েও বেশি আছে মানবিক মুখ। যা মানুষের চোখ এড়াচ্ছে না। ঠিক একই কারণে দেশজুড়ে প্রশংসা হচ্ছে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী তথা সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য পিনারাই বিজয়নেরও।
আর তাই, এই অভূতপূর্ব পরিস্থিতিতে, যখন গোটা দেশ ঘরবন্দি। তখন দেশবাসীর চোখ মারণ ভাইরাস মোকাবিলায় মমতা, বিজয়নের নেতৃত্বে কিছু মানুষের নাছোড় লড়াইয়ের দিকে।
Comments are closed.