রূপান্তরকামী হওয়ায় পরিবার মুখ ফিরেয়েছিল, শত বাধা অতিক্রম করে ‘পদ্মশ্রী’ পেলেন মানজাম্মা! রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষা করে তার দিন কাটতো

কর্নাটকের বল্লারী থেকে অনেকটা ভিতরের এক গ্রামে জন্মেছিলেন মানজাম্মা যোগাতি। রূপান্তরকামী হাওয়ায় পরিবারে ঠাঁই মেলেনি মানজাম্মার। শরীরে পুরুষ কিন্তু মনে মনে ছোট থেকেই নারীসত্তা কাজ করতো তার। এর জন্য ছেলেবেলা থেকেই বহু জনের কাছে বহু সময়ে নিগ্রহের শিকার হতে হয়েছে তাকে। সারাজীবন অনেক ওঠাপড়ার মধ্য দিয়ে গেছেন তিনি। সম্প্রতি ‘পদ্মশ্রী’র মত সম্মানে ভূষিত হলেন মানজাম্মা যোগাতি।

মঙ্গলবার একেবারে ভারতীয় পোশাকে শাড়ি পড়ে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছ থেকে ‘পদ্মশ্রী’ নেন তিনি। তার আসল নাম ছিল মঞ্জুনাথ শেট্টি। কিন্তু পরে যখন তিনি ধীরে ধীরে বুঝতে পারেন ভিতর ভিতর তিনি একজন সম্পূর্ণ নারী তখন থেকেই তিনি অবসাদে ভুগতে থাকেন। একবার এই কারণেই তিনি আত্মহত্যা করারও চেষ্টা করেছিলেন। এরপর তার বাড়ির লোক যখন বুঝতে পারেন তিনি একজন স্বাভাবিক রূপান্তরকামী মানুষ, তখন থেকেই তাকে দূরে ঠেলে দেন তারা। এমনকি শেষ পর্যন্ত নিজের পরিবারেই ঠাঁই হয়নি তার।

একটা সময় ছিল যখন মানজাম্মা ভিক্ষা করে দিন কাটাতেন। ভিক্ষা করেই পেট চালাতেন নিজের। তবে পরবর্তীকালে এক আত্মীয়ের সাহায্যেই হুলিজায়াম্মা মন্দিরে জায়গা হয়েছিল তার। পরে সেখান থেকেই সঙ্গীত এবং যোগ নৃত্যে পারদর্শিতা অর্জন করেছিলেন তিনি। এরপর কর্নাটকের জনপদ একাডেমীর সভাপতিত্বেরও দায়িত্ব পান তিনি।

রাজ্য ও জাতীয় স্তরে একাধিক পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। এবার তার ঝুলিতে যুক্ত হল ‘পদ্মশ্রী’র মত সম্মান। একদিন যারা তাকে অবহেলা করেছিলেন তারাই আজ তার সামনে সম্মানে মাথা নুইয়েছেন। এর আগেও তামিলনাড়ুর বাসিন্দা ২০১৯ সালে ভারতনাট্যম নৃত্যশিল্পী নর্থাকি নটরাজও ‘পদ্মশ্রী’র মত সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন।

Comments are closed.