তরুণ মজুমদারের সিনেমায় হাতেখড়ি বহু অভিনেতার, শোকবার্তা টলিপাড়ার শিল্পীদের

তরুণ মজুমদারের প্রয়ানে শোকস্তব্ধ শিল্পী মহল। শোকপ্রকাশ করেছেন রাজনৈতিক মহল থেকে শিল্পী মহলের ব্যাক্তিত্বরা। শোকজ্ঞাপণ করেছেন স্ত্রী সন্ধ্যা রায়। প্রবীণ পরিচালকের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর কান্নায় ভেঙে পড়েছেন সন্ধ্যা রায়। তিনি জানান, ওনার সঙ্কটজনক অবস্থার কথা শুনেই হাসপাতালে ছুটে গিয়েছিলেন, কিন্তু তাঁর সঙ্গে দেখা করা সম্ভব হয়নি। বহুদিন দেখা হয়নি, কান্নাভেজা গলায় জানিয়েছেন সন্ধ্যা রায়।

বহু অভিনেতার চলচ্চিত্র জগতে পা দেওয়া তাঁর চলচ্চিত্রের মাধ্যমে। তরুণ মজুমদারের সিনেমায় হাতেখড়ি হওয়া অভিনেতার অনেকেই ভারত বিখ্যাত হয়েছেন। এঁদের মধ্যে মৌসুমী চ্যাটার্জী, দেবশ্রী রায় সহ একাধিক নাম রয়েছে। তাঁর মৃত্যুতে দেবশ্রী রায় জানিয়েছেন, শিল্পী গড়ার কারিগর ছিলেন তরুণ মজুমদার। কান্না জড়ানো গলায় ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, উনি বাংলা সিনেমার স্তম্ভ। ওঁনার সঙ্গে কাজের অনেক স্মৃতি আছে। প্রথম ছবি ‘আলো’। এরপর ‘চাঁদের বাড়ি’। সম্প্রতি ‘ভালবাসার বাড়ি’র মতন জনপ্রিয় ছবি করেছিলেন ঋতুপর্ণা।

তাঁর সিনেমায় ছিল রবীন্দ্রসঙ্গীতের সফল প্রয়োগ। তাঁর বেশ কিছু সিনেমায় প্রায় সব গান ছিল কবিগুরুর রচনা। কোনও কোনও ছবিতে তিনি দ্বিজেন্দ্রলালের গান , নজরুল গীতিকেও ব্যবহার করেছেন। আলোর পিপাসা সিনেমায় গানের ধারা ছিল রাগপ্রধান। প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জি জানিয়েছেন, আমার ব্যক্তিগত গুরু ছিলেন তিনি। মাত্র ৭ বছর বয়সে তরুণ মজুমদারের সঙ্গে ছবি করেন প্রসেনজিৎ।

ওনার পরিচালনা দেখে অনেক পরিচালকরা শিক্ষা পেয়েছেন। ওনার ছবি দেখে অনেক কিছু শিখেছি, টালিগঞ্জের বড় মাপের পরিচালক ছিলেন তিনি। বাংলা মাটির গন্ধ লেগে আছে ওনার ছবিতে। রবীন্দ্র সঙ্গীতকে ছবির মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়ার সুকৌশল ছিল তাঁর। জানিয়েছেন পরিচালক হরনাথ চক্রবর্তী।

পরিচালক গৌতম ঘোষ বলেন, আমরা অভিভাবক হারালাম। শিক্ষিত বাঙালি সমাজের জন্য ছবি নির্মাণ করেছেনতিনি। তরুণ মজুমদারের একাধিক ছবির কথা উল্লেখ করে গৌতম ঘোষ বলেন, উনি যখন কাজ করতেন। প্রতিটি জিনিস প্রস্তুত না হওয়ার পর্যন্ত কাজ ছাড়তেন না। ওনার কাজ থেকে অনেক কিছু শিখেছি।

অভিনেতা ও রাজনীতিবিদ মিঠুন চক্রবর্তী বলেন, যাঁরা ওনার সঙ্গে কাজ করেছেন তাঁরা ভাগ্যবান। তাঁরা অনেক কিছু শিখেছেন। প্রয়াত তরুণ মজুমদারের দেহ গবেষণার স্বার্থে দান করা হবে এসএসকেমে। এই নিয়ে সিপিএম নেতা রবীন দেব জানিয়েছেন, পরিবারের সিদ্ধান্ত এখানে শেষ কথা। আমরা বলার কেউ নই। দেহদানকে সম্মান জানিয়ে প্রয়াত পরিচালকের রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষ বিদায় জানানো হবে। সোমবার সকালেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তরুণ মজুমদার। তাঁর দেহ নিয়ে যাওয়া হয় এনটিওয়ান স্টুডিওতে। সেখানে তঁকে শ্রদ্ধা জানাবেন সাধারণ মানুষ। তবে প্রবীণ পরিচালকের ইচ্ছা অনুযায়ী অনুরাগীদের ফুল আনতে বারণ করা হয়েছে।

 

 

Comments are closed.