শনিবার অষ্টমীর সন্ধ্যায় সোশ্যাল মিডিয়ায় হঠাৎই ছড়িয়ে পড়ে কিছু ছবি। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বিছানায় শুয়ে আছেন। ছবিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন, আর কেউ নন, রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান, রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়!
দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ বুদ্ধদেববাবু। বহু সিপিএম নেতাই সাম্প্রতিক সময়ে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ছবি দেখেননি। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য নিজেও সচেতনভাবেই চান না তাঁর অসুস্থতার ছবির বা খবরের প্রচার হোক। সেখানে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের অসুস্থ অবস্থায় এভাবে শুয়ে থাকার ছবি দেখে কষ্টে আর্তনাদ করে উঠেছেন লক্ষ-লক্ষ সিপিএম নেতা-কর্মী। তাঁদের মধ্যে প্রশ্ন উঠছে, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে দেখতে গিয়ে তাঁর অশক্ত চেহারার ছবি কেন প্রকাশ করলেন রাজ্যপাল? যে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য নিজেকে নিয়ে কোনও প্রচার চান না, তাঁর এই ছবি প্রকাশ্যে এনে কোন রুচিবোধের পরিচয় দিলেন রাজ্যপাল? যে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে অসুস্থ হয়ে নেতাদের শত-অনুরোধেও হাসপাতালে যেতে চাননি, শুধু লোক জানাজানি এড়িয়ে যেতে চান বলে, তাঁর এই ছবি প্রচার করে কি সৌজন্যের পরিচয় দিলেন রাজ্যপাল?
এই হাজারো প্রশ্নের মধ্যেই প্রিয় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, প্রিয় নেতা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ছবি প্রকাশ করা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দিলেন সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম।
রবিবার সকালে মহম্মদ সেলিম টেলিফোনে জানান, রাজ্যপাল সৌজন্যের খাতিরে বুদ্ধদাকে দেখতে যেতেই পারেন। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে রাজ্যপালের দেখতে যাওয়ার মধ্যে অন্যায়ের কিছু নেই। কিন্তু যেভাবে তিনি অসুস্থ বুদ্ধদার ছবি প্রচার করেছেন, তা অন্যায় এবং অনৈতিক। তিনি ঠিক কাজ করেননি। কোনও অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে গিয়ে তা প্রচার করা ঠিক নয়।
সম্প্রতি অসুস্থ অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের হাসপাতালের ছবি প্রচারিত হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। তা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন অভিনেতা কন্যা। মানুষের ব্যক্তি স্বাধীনতা মিডিয়ায় যেভাবে আক্রান্ত, তা আরও একবার প্রশ্নের মুখে পড়ল শনিবার, অষ্টমীর সন্ধ্যায়।
পার্টির অন্দরেও সারাজীবনই ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কোনওরকম প্রচার এড়িয়ে চলেছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সেখানে তাঁর এই ছবি রাজ্যপাল যেভাবে নিজের ট্যুইটার অ্যাকাউন্টে প্রচার করেছেন, তাতে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ আলিমুদ্দিন স্ট্রিট।
(রাজ্যপাল ধনখড় ট্যুইটে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের যে ছবিগুলি প্রকাশ করেছেন তা আমরা ব্যবহার করছি না)
Comments are closed.