চিনের এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্ক বা AIIB থেকে মোটা অঙ্কের ঋণ নিয়েছে ভারত সরকার। সংসদে সে কথা জানালেন খোদ কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর।
বুধবার সংসদে কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী জানান, দেশে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য গত কয়েকমাসে বেজিংয়ের এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্ক থেকে ৯ হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ নিয়েছে সরকার। মোট দুই দফায় ঋণ নেওয়া হয়েছে।
AIIB থেকে প্রাপ্ত তহবিল কীভাবে ব্যয় করছে কেন্দ্র সরকার এবং রাজ্যগুলিকে সেই তহবিলের কত শতাংশ দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন দুই বিজেপি সাংসদ, সুনীলকুমার সিংহ ও পিপি চৌধুরী। জবাবে বুধবার লোকসভায় বিবৃতি দিয়ে অনুরাগ ঠাকুর জানিয়েছেন, কোভিড ১৯ ক্রাইসিস রিকভারি ফেসিলিটিতে AIIB এর সঙ্গে দুটি ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে ভারত সরকার।
চলতি বছরের ৮ মে প্রথম চুক্তি স্বাক্ষর হয়, কোভিড ১৯ মোকাবিলা ও ভারতের স্বাস্থ্য পরিষেবা উন্নত করার লক্ষ্যে ৫০০ মিলিয়ন বা প্রায় ৩ হাজার ৬৭৬ কোটি টাকার। যদিও এই চুক্তি থেকে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৮৪৭ কোটি টাকা পাওয়া গেছে বলে জানান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
তিনি আরও জানান, ৭৫০ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ৫ হাজার ৫১৪ কোটি টাকার দ্বিতীয় চুক্তিটি স্বাক্ষর হয় গত ১৯ জুন। দেশের কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনার আওতায় প্রকল্পগুলোকে বাস্তবায়িত করতে প্রায় ৫ হাজার ৫১৪ কোটি টাকার চুক্তি হয়। অর্থাৎ, ভারত সরকার দ্বিতীয় ঋণ ১৫ জুন সীমান্তের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পরে নিয়েছে। বিরোধীদের দাবি, চিনের ব্যাঙ্ক থেকে আর্থিক সুবিধা পেয়েছে বলেই ভারত সরকার চিনের বিরুদ্ধে নরম মনোভাব দেখাচ্ছে।
পূর্ব লাদাখে ভারত-চিন সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় চিনা সৈন্য প্রবেশ নিয়ে গত মে মাস থেকেই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা রয়েছে। ১৫ জুন লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চিনা সেনার সঙ্গে হাতাহাতিতে এক কর্নেল সহ ২০ ভারতীয় জওয়ান প্রাণ হারিয়েছিলেন। বুধবারই রাজ্যসভায় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং জানান অরুণাচল প্রদেশের প্রায় ৯০ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা নিজেদের বলে দাবি করেছে চিন। লাদাখ থেকে অরুণাচল, একের পর এক জায়গায় চিনের সঙ্গে সীমান্ত সংঘাত বাঁধছে ভারতের। দেশে চলছে বয়কট চায়না কর্মসূচি। বাতিল হচ্ছে চিনা অ্যাপ, বিনিয়োগ। এই পরিস্থিতিতে চিনা ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ! প্রশ্ন ওঠা ঠেকানো যাচ্ছে না।
Comments are closed.