গুজরাত সফরের প্রথম দিন, শুক্রবার সর্দার প্যাটেলের ১৪৫ তম জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে কেভাডিয়ায় স্ট্যাচু অফ ইউনিটির সামনে দাঁড়িয়ে বিরোধীদের তীব্র আক্রমণ করলেন নরেন্দ্র মোদী। আর সেজন্য প্রধান মন্ত্রী তুলে আনলেন প্রতিবেশী দেশের পার্লামেন্টে পাকিস্তানের মন্ত্রীর মন্তব্যকে। ওই দিকে উদ্দেশ্য করে মোদী বলেন, বিরোধীদের মুখোশ খুলে গেছে। তাঁদের স্বরূপ আজ দেশবাসীর কাছে উন্মোচিত।
বিশ্বের উচ্চতম স্ট্যাচুকে পিছনে রেখে প্রধান মন্ত্রী বলেন, আজ প্যারেড দেখতে দেখতে একটি ছবি চোখের সামনে ভেসে উঠছিল… পুলওয়ামার ছবি। দেশবাসী কখনও ভুলবে না যখন ভারত মা তাঁর সন্তানকে হারিয়ে কাঁদছিল… কিছু মানুষ সেই শোকের অংশীদার ছিলেন না। তাঁরা তখন পুলওয়ামার ঘটনার ফায়দা তুলতে মগ্ন।
নরেন্দ্র মোদীর কথায়, এই দেশ কখনও ভুলতে পারবে না সেই সময় কী কী ধরণের কমেন্ট করা হয়েছে। তারপরেই প্রধান মন্ত্রী বলেন, কদিন ধরে প্রতিবেশী দেশ থেকে খবর পাচ্ছি… যেভাবে সেখানকার পার্লামেন্টে হামলার কথা স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে, তাতে সত্যিটা বেরিয়ে পড়েছে। রাজনীতি এক নয়া অধোগতির সাক্ষী হল। পুলওয়ামার ঘটনা নিয়ে রাজনীতি তার সবচেয়ে বড়ো উদাহরণ।
এ বছর ফেব্রুয়ারিতে পুলওয়ামা হামলার বর্ষপূর্তিতে রাহুল গান্ধী প্রশ্ন ছুঁড়েছিলেন, হামলায় আখেরে কার লাভ হল? পুলওয়ামা হামলার তদন্তেরই বা কী হল? বিজেপি সঙ্গে সঙ্গে জবাব দেয়। এবার প্রধান মন্ত্রী নিজে সেই ঘটনার কথা টেনে আনলেন।
লোকসভা ভোটের সপ্তাহখানেক আগে পুলওয়ামায় ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় মৃত্যু হয় ভারতীয় নিরাপত্তারক্ষীদের। তারপরেই ভারতীয় বায়ু সেনার এয়ার স্ট্রাইক, গোটা পরিস্থিতিকে রাজনৈতিক রঙ দেয়। ভোট বিশেষজ্ঞরা বলেন, জাতীয়তাবাদের সেই তুফানে বাজিমাত করেন নরেন্দ্র মোদী। যদিও মোদী যে দেশবাসীর এক এবং একমাত্র পছন্দ, ভোটের ফলে তা আবার স্পষ্ট হল বলেই দাবি করে থাকেন বিজেপি নেতারা।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, জাতীয়তাবাদের হাওয়ায় খেলা ঘোরানো নরেন্দ্র মোদীর অঘোষিত লক্ষ্য। কিন্তু তার কোনও গ্রহণযোগ্য অ্যান্টিডোট বিরোধীরা দিতে না পারার ফল ব্যালক বাক্সে প্রতিফলিত হয়েছে। মানুষ তাঁদের গ্রহণ করেনি। কিন্তু প্রশ্ন হল, সর্দার প্যাটেলের জন্ম বার্ষিকীতে দাঁড়িয়ে বিরোধীদের পুলওয়ামার কথা মনে করিয়ে নতুন করে আক্রমণ কেন? বিহারে দ্বিতীয় দফায় ভোটের বাকি ৯৬ ঘণ্টা।
Comments are closed.