বৈদিক জ্ঞানের অভাবই বিশ্বব্যাপী বিরোধ এবং ধ্বংসের কারণ। পরিবেশগত সমস্যার মূলেও রয়েছে বেদ চর্চার ঘাটতি। শুক্রবার এমনই মন্তব্য করলেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। এমনই খবর প্রকাশিত হয়েছে নিউজ পোর্টাল theprint-এ।
শুক্রবার দিল্লিতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং অশোক সিংহল ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে আয়োজিত মহাযজ্ঞ অনুষ্ঠানে যোগ দেন সঙ্ঘ প্রধান। সেখানে তিনি বলেন, বিজ্ঞান ও বৈদিক জ্ঞানের মধ্যে প্রায়ই বিভেদের চেষ্টা হয়। কিন্তু বিজ্ঞান ও বৈদিক জ্ঞানের মধ্যে আসলে কোনও বিরোধ নেই।
দিল্লির বিড়লা মন্দিরে আয়োজিত ৬ দিন ব্যাপী মহাযজ্ঞের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে মোহন ভাগবত আরও বলেন, আমাদের পূর্বপুরুষরা কঠিন পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে বেদের জ্ঞান আত্মস্থ করেছিলেন। আরএসএস প্রধানের দাবি, পূর্বপুরুষদের এই কঠিন পরিশ্রমের ফলেই ভারত অন্তত ৩ হাজার বছর বিশ্বগুরু হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ছিল।
তাঁর মতে, দুনিয়া চালাতে দরকার বেদের জ্ঞান। তার অভাবই আমাদের যুদ্ধ বিগ্রহ এবং পরিবেশগত অবনমনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আরও একবার নতুন করে বেদের জ্ঞানকে সারা বিশ্বের সামনে তুলে ধরার প্রাসঙ্গিকতা তৈরি হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন মোহন ভাগবত।
এই লক্ষ্য অর্জন অবশ্য কেবলমাত্র হিন্দুদের দ্বারা সম্ভব নয়। আরএসএসের সরসঙ্ঘচালক বিশেষ গুরুত্ব দেন গোটা পৃথিবীর মানুষকে এই লক্ষ্য পূরণে এগিয়ে আসার উপর। তিনি বলেন, বৈদিক জ্ঞান এবং বিজ্ঞানের মধ্যে কোনও বিরোধ নেই। দুটোরই ভিন্ন উদ্দেশ্য এবং প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তাঁর মতে, যা কিছু দেখতে পাওয়া যায় এবং প্রমাণ করা যায়, বিজ্ঞান তাই বিশ্বাস করে। কিন্তু তারপর থেকে শুরু হয় বৈদিক জ্ঞানের সাম্রাজ্য।
মোহন ভাগবত বলেন, আপনি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে আত্মার উপস্থিতি প্রমাণ করতে পারবেন না। কিন্তু আত্মা বলে যে কিছু নেই, তা প্রমাণ করতে পারবেন কি? না, পারবেন না। একজন মানুষের মৃত্যুর পর কী হয়, তার উত্তর বিজ্ঞানে নেই। এই উত্তর পেতে হলে আমাদের এই ক্ষুদ্র ধারণা থেকে বেরোতে হবে। আরএসএস প্রধানের মতে, বেদ চর্চা করলে যে বিজ্ঞানকে অস্বীকার করতে হবে কিংবা উল্টোটা, তা একেবারেই নয়। আমাদের বেদ এবং বিজ্ঞান, একইভাবে চর্চা করে যেতে হবে। কারণ এই দুয়ের মধ্যে আসলে কোনও বিরোধ নেই।
গত বুধবার থেকে দিল্লির লক্ষী-নারায়ণ মন্দির তথা বিড়লা মন্দিরে শুরু হয়েছে মহাযজ্ঞের অনুষ্ঠান। গত ৩ দিন ধরে সেখানে চলে বৈদিক মন্ত্রোচ্চারণের মধ্যে দিয়ে আহুতি। অনুষ্ঠানে আরএসএস প্রধানের পাশাপাশি হাজির হয়েছিলেন একাধিক বিজেপি নেতা, সাংসদ। বিজেপি সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহেরও সেখানে উপস্থিত হওয়ার কথা।
Comments are closed.