করোনা থাবায় বিপর্যস্ত বিশ্ব অর্থনীতির আঁচ সরাসরি এসে পড়েছে তথ্য প্রযুক্তি শিল্পেও। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা পরবর্তী বিশ্ব দেখবে এক অন্য ধারার অর্থনীতি। কিন্তু পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে কেমন হবে তথ্য প্রযুক্তি তালুকের কাজ কারবার? এবার তারই সুলুক সন্ধান করলেন ইনফোসিসের প্রাক্তন সিএফও মোহনদাস পাই।
কী বলছেন মোহনদাস পাই?
করোনা পরবর্তী বিশ্বে যেভাবে প্রভাবিত হবে অর্থনীতি, তার অভিঘাত থেকে বাঁচতে পারবে না দেশের তথ্য প্রযুক্তি শিল্পও। মোহনদাস পাই বলছেন, এ বছর নয়া নিযুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা নেই এবং উঁচু পদে কাজ করা তথ্য প্রযুক্তি আধিকারিকদের বেতন ২০ থেকে ২৫ শতাংশ কমার আশঙ্কা রয়েছে। কিন্তু ছাঁটাইয়ের সম্ভাবনা কম। সেক্ষেত্রে কেউ চাকরি ছেড়ে দিলে সেই চেয়ারে নয়া নিযুক্তির সম্ভাবনাও নেই বলে মনে করছেন ইনফোসিসের প্রাক্তন কর্তা।
পাশাপাশি তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ পাই বাহবা দিচ্ছেন ভারতের তথ্য প্রযুক্তি সংস্থাগুলোকে। তিনি বলছেন, যেভাবে টোটাল ওয়ার্ক ফোর্সের ৯০ শতাংশ কর্মীকে বাড়ি থেকে কাজ করার সুযোগ ও পরিকাঠামো রাতারাতি তৈরি করে দিয়েছে সংস্থাগুলো, তা অভিনন্দনযোগ্য।
পাশাপাশি আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ করেছেন এই আইটি বিশেষজ্ঞ। তিনি বলছেন, ওয়ার্ক ফ্রম হোম সফল হওয়ায়, অদূর ভবিষ্যতে আর অফিসে ফেরার সম্ভাবনা নেই মোট কর্মীর অন্তত ২৫ থেকে ৩০ শতাংশের। তাঁরা এভাবেই বাড়িতে বসে কাজ করে যাবেন। এতে দু’ধরনের সুবিধা পাবে সংস্থা।
লকডাউন উঠে যাওয়ার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও কঠোর সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং নিয়মাবলী মেনে চলতে হবে। সেজন্য দুই কর্মীর মধ্যে দুরত্ব বাড়াতে হবে। ফলে অফিস স্পেস ঢেলে সাজানো হবে। সেক্ষেত্রে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ কর্মী বাড়ি থেকে কাজ করলে, অফিসের মধ্যে কর্মী সংখ্যা কমবে। তাতে সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং নর্মস আরও ভালোভাবে পালন করতে সুবিধা হবে।
মোহনদাস পাই মনে করেন, এ বছরের বাকি সময় আইটি সংস্থাগুলো নতুন কর্মী নেওয়ার পথে যাবে না। তার প্রধান কারণ পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পশ্চিমের দেশগুলোর অর্থনীতির অবস্থার উপর নির্ভর করবে ভারতে আইটি শিল্পের ভবিষ্যৎ। তাই সেদিক দিয়ে নিশ্চিত না হয়ে নতুন লোক নেবে না সংস্থাগুলো। পাশাপাশি, ৭৫ হাজার থেকে ১ লক্ষ কিংবা তারও উপরে মাসিক বেতন পান যে আইটি আধিকারিকরা, তাঁদের অন্তত ২০ থেকে ২৫ শতাংশ বেতনে কোপ পড়তে পারে। তবে ছাঁটাইয়ের পরিস্থিতি এখনই দেখছেন না তিনি।
Comments are closed.