২০ বছর পর ভোটের রাজনীতিতে ফিরছেন মুকুল? বাদ শুভ্রাংশু!
মুকুল রায়ের জন্য নদিয়া জেলায় ৩ টি আসন রাখা হয়েছে
সেটা ২০০১ সাল। তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি ডাক দিয়েছেন হয় এবার, নয় নেভার। বামফ্রন্টের বিরুদ্ধে তৃণমূলের লড়াই শুরুর আমলে উত্তর ২৪ পরগনার জগদ্দল থেকে ঘাসফুল প্রতীকে একবার দাঁড়িয়েছিলেন। সেই শেষ। তারপর কেটে গিয়েছে ২ দশক। ফের কি ভোটে দাঁড়াচ্ছেন মুকুল রায়? বিজেপির দিল্লি নেতৃত্ব সূত্রে তেমনই খবর।
২০০১ সালে জগদ্দল কেন্দ্র থেকে হেরেছিলেন তৃণমূল প্রার্থী মুকুল। তারপর থেকে আর ভোট-মুখো হননি। বরং সংগঠনের কাজেই ডুব দেন মমতা ব্যানার্জির তৎকালীন ডান হাত। তারপর ২০০৬, ২০০৯, ২০১১ থেকে ২০১৯…ঘাসফুল ছেড়ে পদ্মফুলে গেলেও মুকুলের নেপথ্য নায়কের ভূমিকার পরিবর্তন হয়নি। সংগঠনকে হাতের তালুর মতো চেনেন বলে মনে করে একসময় মুকুলকে নিজেদের শিবিরে টেনে নেয় বিজেপি। সেখানে মুকুলের দেওয়া প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক থেকে বারাকপুরের অর্জুন সিংহরা ভোট লড়েন এবং জেতেন। কিন্তু মুকুল রায় ভোটে লড়েননি। ২০ বছর পর একুশের ভোটে বদলে যেতে চলেছে মুকুলের সেই নেপথ্যের নায়কের ভূমিকা।
[আরও পড়ুন: বঙ্গ ভোটে ধোনি-যোগ! খড়গপুরে হিরণের বিরুদ্ধে হেলিকপ্টার শট নিয়ে তৈরি প্রদীপ]
মুকুল রায়ের জন্য নদিয়া জেলায় ৩ টি আসন রাখা হয়েছে। সূত্রের খবর, মুকুল রায়কে কৃষ্ণনগর উত্তর, কৃষ্ণনগর দক্ষিণ এবং করিমপুর আসনের মধ্যে একটি বেছে নিতে বলা হয়েছে। রাজনৈতিক মহল মনে করছে সেক্ষেত্রে মুকুলের পক্ষে সুবিধেজনক কৃষ্ণনগর উত্তর আসনটি। সেখানে লোকসভায় বিপুল ভোটের লিড আছে বিজেপির। এখানে অবশ্য একটি কিন্তু আছে। এই আসনে তৃণমূল প্রার্থী জনপ্রিয় অভিনেতা কৌশানি মুখার্জি। তাই লড়াই খুব সহজ হবে না।
এখন প্রশ্ন হল, মুকুল রায়ের মতো সিনিয়ার নেতাকে ভোটে দাঁড় করাচ্ছে কেন বিজেপি? সূত্রের খবর, একুশের ভোটে বঙ্গ বিজেপির প্রার্থী নিয়ে অসন্তোষ যেভাবে গণ বিক্ষোভের চেহারা নিয়েছে তা দেখে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ শাহ-নাড্ডারা। জানা গিয়েছে, দিল্লির বৈঠকে প্রকাশ্যে কৈলাস বিজয়বর্গীয়র কাজ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিএল সন্তোষের মতো নেতারা। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সেই ক্ষোভেরই আঁচ এবার পোহাতে হবে দিলীপ-মুকুলকে।
যদিও বিজেপি সূত্রে খবর, দিলীপ ঘোষ ভোটে দাঁড়াচ্ছেন না। কারণ, বিজেপির রাজ্য সভাপতিরা যে রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন, তাঁরা কেউই ভোটে লড়ে আসেননি। বরং মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর উপনির্বাচনে জিতে এসেছেন। উদাহরণ, অসম এবং কর্ণাটক। দিলীপের ক্ষেত্রেও একই ফর্মুলা বলে সূত্রের খবর।
এদিকে ৬৬ বছরের মুকুল রায় ভোটে লড়লে টিকিট পাওয়ার আশা নেই ছেলে শুভ্রাংশুর। বিজেপি পরিবারতন্ত্রের নিশানা করে মমতা ব্যানার্জির পরিবারকে। তাই মুকুলের পাশাপাশি তাঁর ছেলেকে টিকিট দিলে পরিবারতন্ত্রের অভিযোগের তির ঘুরে যাবে বিজেপির দিকেই। তাই মুকুল লড়লে শুভ্রাংশু বাদ।
তাহলে শুভ্রাংশু রায়কে টিকিট দিয়ে মুকুলকে সংগঠনের কাজে লাগাচ্ছে না কেন বিজেপি? সূত্রের খবর, প্রার্থী নিয়ে গোলমালে ক্ষুব্ধ কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব চায় মুকুল শুধু নিজের কেন্দ্র নিয়েই ব্যস্ত থাকুন। বাকিটা দল দেখে নেবে।
সবমিলিয়ে এতদিন সংগঠনের চাণক্য নামে পরিচিত মুকুল রায়কে নামতে হবে নিজেকে জেতাতে। হার-জিত পরের কথা কিন্তু ভোট মুখী বঙ্গে ২০ বছরের ব্যবধানে মুকুল রায়ের ভোট ময়দানে নামার তাৎপর্য আলাদা, বলছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
Comments are closed.