গত তিনমাস জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময় নাকি আরও কিছু অপেক্ষা করছে মাইসোরের হাল্লারা গ্রামের নাপিত মল্লিকার্জুন শেট্টি ও তাঁর পরিবারের জন্য?
একঘরে হওয়ার পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা জরিমানার খাঁড়া ঝুলছে তাঁর কাঁধে!
কী অপরাধ?
৪৭ বছর বয়সী মল্লিকার্জুন তাঁর সেলুনে ‘নীচুজাত’এর মানুষের চুল, দাড়ি কাটেন। এই অপরাধে গত তিন মাস গ্রামে একঘরে হয়ে দিন কাটাচ্ছে নাপিতের পরিবার।
মল্লিকার্জুন জানান, মাস তিনেক আগে জনৈক মহাদেব নায়েক সহ গ্রামের উঁচু জাতের কয়েকজন মিলে তাঁর সেলুনে হাজির হন। তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয়, সেলুনে নীচুজাতের লোকেদের চুল, দাড়ি কাটা হয়? মল্লিকার্জুন জানান, তিনি জাত দেখে চুল, দাড়ি কাটেন না। ক্ষুব্ধ নায়েক সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা জানায়, নীচুজাতের কেউ চুল কাটাতে এলে ৩০০ টাকা এবং দাড়ি কাটাতে এলে ২০০ টাকা করে নিতে হবে। এই পরামর্শ না মানলে ব্যবসায় ক্ষতি হবে। মল্লিকার্জুন জানান, যা পারিশ্রমিক তাই নেবেন। অভিযোগ, এরপরেই শুরু হয় সামাজিক বয়কট। হুমকি, হুঁশিয়ারিতে অতিষ্ঠ হয়ে পুলিশের কাছে গিয়ে আরও বিপদ বাড়ে। গ্রামে পুলিশ ঘুরে যাওয়ার পর আর কেউই মল্লিকার্জুনের সেলুনে যায় না। নাপিতের ২১ বছরের ছেলেকে জোর করে মফ খাইয়ে উলঙ্গ করে ছবি তোলা হয় বলেও অভিযোগ। তাকে দিয়ে নায়েক সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে খারাপ কথা বলিয়ে নেওয়া হয়। মল্লিকার্জুন ফের পুলিশের কাছে যাবেন বললে সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ফাঁস করার হুমকি দেওয়া হয়। পাশাপাশি, মহাদেব নায়েকের নির্দেশ মেনে পাঁচ হাজার টাকা দিতে বলা হয়। তারপরেও মল্লিকার্জুন মাথা নোয়াননি। এখন এই জরিমানার অঙ্ক পৌঁছেছে ৫০ হাজার টাকায়! অবশেষে লুকিয়ে তহশিলদার মহেশ কুমারের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়ে এলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
একঘরে ও আয়শূন্য, পেট চলবে কীভাবে? উত্তর খুঁজছেন মল্লিকার্জুন।
Comments are closed.