এবার সাইকেল যাত্রার জন্য তৈরি হবে আলাদা রাস্তা, শহরে পরিবেশ দূষণ রোধে নয়া পদক্ষেপ রাজ্য সরকারের

অবশেষে শহর কলকাতার রাস্তায় সাইকেলের জন্য আলাদা পথ (সাইকেল বে) হতে চলেছে। কেএমডিএ সূত্রের খবর, খুব শীঘ্রই এই সাইকেল বে চালু করা হবে। রাজ্য সরকার মনে করছে, এতে শহরের দূষণ অনেকটাই কমবে। পৃথিবীর অনেক বড় শহরেই সাইকেলের জন্য আলাদা পথ করা আছে, সেখানে অন্য কোনও যানবাহনের প্রবেশ নিষিদ্ধ। আমাদের দেশেরও অনেক শহরে অনেকে সাইকেল ছেড়ে গাড়ি ব্যবহার করেন। কেন্দ্রীয় সরকারের দু’একজন মন্ত্রীও অফিসে যাতায়াত করেন সাইকেলে চেপে।
কলকাতায় সাইকেল বে হবে শুনে খুশি কলকাতা সাইকেল সমাজের অন্যতম পদাধিকারী শতঞ্জীব গুপ্ত। কলকাতার দূষণ নিয়ে আর পাঁচটা নাগরিকের মতো উদ্বিগ্ন কলকাতা সাইকেল সমাজও। এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা গত কয়েক বছর ধরে শহরে যাতায়াতের জন্য সাইকেলের প্রয়োজনীয়তার দাবিতে লড়াই করে চলেছে। শতঞ্জীব এবার কলকাতার বাইসাইকেল মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি বলেন, সত্যিই যদি কলকাতা শহরে সাইকেল বে তৈরি হয়, তার থেকে খুশির খবর আর কী হতে পারে। আমরা এই নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রচার এবং আন্দোলন করে চলেছি।
নেদারল্যান্ডসের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা (বিওয়াইসিএস) ফিফটি বাই থার্টি নামে একটি আন্দোলন চালাচ্ছে। সেটিকে তাদের একটি বৃহৎ উদ্যোগও বলা যেতে পারে। তারা চায়, ২০৩০ সালের মধ্যে পৃথিবীর বড় শহরগুলিতে অন্তত ৫০ শতাংশ মানুষের যাতায়াতের মাধ্যম হোক সাইকেল। সেই উদ্যোগেরই একটি অংশ হল বাইসাইকেল মেয়র। সাইকেল ব্যবহার সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা, সরকারি, বেসরকারি নানা উদ্যোগকে এই উদ্যোগে সামিল করা, সাইকেলে যাতায়াতে সকলকে উৎসাহিত করা ইত্যাদি হল বাইসাইকেল মেয়রের কাজ। এর আগে বরোদা, মুম্বই, জয়পুর, বেঙ্গালুরু প্রভৃতি অনেক শহর এই উদ্যোগে যুক্ত হয়েছে। ওই সব শহরে বাইসাইকেল মেয়র হয়েছেন। এবার কলকাতার পালকেও যুক্ত হল বাইসাইকেল মেয়র। হাওড়া শহরও কিছুদিনের মধ্যে বাইসাইকেল মেয়র পাবে।
পেশায় চিত্র সাংবাদিক ও তথ্যচিত্র নির্মাতা শতঞ্জীব নিজেও কর্মস্থলে যাতায়াত করেন সাইকেল চেপে। কলকাতা সাইকেল সমাজের কর্তা শতঞ্জীব নেদারল্যান্ডসের ওই সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেন আবেদন করার জন্য। টেলিফোনে ইন্টারভিউ হয়। তাতে তিনি বাইসাইকেল মেয়র পদে নির্বাচিত হন। শতঞ্জীব বলেন, সাইকেল কেবল দূষণ রোধ করে না, তা চালালে শরীরম সাস্থ্যও ভালো থাকে। পৃথিবীর বহু বড় শহরে যখন সাইকেল ব্যবহার ক্রমশ বাড়ছে, তখন কলকাতার ৬২ টি রাস্তায় সাইকেল চালানো নিষিদ্ধ। আমরা চাই, খুব দ্রুত আমাদের প্রিয় শহরে আলাদা করে সাইকেল বে হোক, সরকারি উদ্যোগে সাইকেলকে জনপ্রিয় বাহন করা হোক।
প্রসঙ্গত, এর আগে নিউ টাউনে সাইক্লিং জোন তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যদিও তা এখনও তেমন জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি। তবে খাস কলকাতার এমন উদ্যোগ এই প্রথম।

Comments are closed.