বেকবাগানের ঋতবাণের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, বসের চেয়ে সে নিজে অনেক পারদর্শী। কিন্তু বন্ধু মহলে এমন কথা বললেও, অফিস পরিসরে কখনওই এই দাবি করেনি বছর ৩০ এর আইটি ইঞ্জিনিয়র ঋতবাণ। কিন্তু জানেন কি, শুধু ঋতবাণই নয়, দেশের প্রতি ১০ জনের মধ্যে সাড়ে ৯ জন কর্মী ভাবেন, বসের চাইতে তাঁদের যোগ্যতা বেশি।
আন্তর্জাতিক কর্পোরেট সার্ভে প্ল্যাটফর্ম ক্রোনোসের সম্প্রতি করা দ্য গ্লোবাল স্টেট অফ ম্যানেজার্স সার্ভেতে দেখা যাচ্ছে, ভারতের ৯৫ শতাংশ কর্মীই ভাবেন, তাঁরা তাঁদের বসেদের চেয়ে বেশি যোগ্য। এর মধ্যে ৪৭ শতাংশ কর্মী মনে করছেন, সবসময়ই তাঁরা তাঁদের বসদের চেয়ে এগিয়ে। আর ৪৮ শতাংশ ভারতীয় কর্মী মনে করেন, কখনও কখনও তাঁদের যোগ্যতামান ছাপিয়ে যায় ঊর্ধ্বতনকে। আর এভাবেই ক্রোনোসের সমীক্ষায় বিশ্বের সবচেয়ে আত্মবিশ্বাসী কর্মীর মর্যাদা পেয়েছেন ভারতীয় কর্মীরা। আর গোটা বিশ্বে প্রতি ১০ জন কর্মীর মধ্যে ৭ জন ভাবেন, তাঁরা যোগ্যতায় তাঁদের বসেদের থেকে এগিয়ে। এই সমীক্ষায় সবচেয়ে পিছিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। প্রতি ১০০ কর্মীর মধ্যে মাত্র ৫৯ জন আমেরিকান মনে করেন, তাঁরা বসেদের চেয়ে যোগ্যতায় এগিয়ে।
শুধু আত্মবিশ্বাসই নয়, ক্রোনোসের সমীক্ষায় ভারতীয় কর্মীরা দুনিয়ার সবচেয়ে সন্তুষ্ট কর্মী হিসেবে উঠে এসেছেন। বার্ষিক মূল্যায়নের সময় প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৮ জন গ্রেডিং ম্যানেজার কর্মীদের প্রতিটি ক্ষেত্রে হয় A কিংবা নিদেন পক্ষে B গ্রেড দেন। ফলে কর্মীদের মধ্যে সন্তুষ্টির বাতাবরণ বজায় থাকে। পাশাপাশি অন্যান্যদের চেয়ে তরুণ ভারতীয় কর্মীদের মধ্যে উচ্চপদের আকাঙ্খা বেশি। ফলে ক্রমে পদোন্নতির সম্ভাবনাও তুলনামূলকভাবে বেশি।
তবে এই সমীক্ষায় ভারতীয় কর্মীশক্তির একটি অন্য দিকও প্রকাশ পেয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের দাবি, অধস্তন কর্মীরা যখন নিজেদের ঊর্ধ্বতন আধিকারিকের চেয়েও যোগ্য বলে মনে করেন, তখন সর্বপ্রথম দেখা হয় বস এবং তাঁর অধস্তনের বয়সের ফারাককে। ভারতীয় কর্মীদের মধ্যে এই ফারাক যথেষ্টই বেশি বলে মনে করেন তাঁরা। প্রথম বিশ্বের দেশগুলোতে এই ফারাক তুলনামূলকভাবে কম বলেই জানাচ্ছেন তাঁরা। যদিও আমেরিকার ক্ষেত্রে এই হিসেব খাটে না।
Comments are closed.