রাতে ১২ ঘণ্টার কারফিউ জারি করে ৩১ মে পর্যন্ত লকডাউন! এবার রেড জোন চিহ্নিত করবে সংশ্লিষ্ট রাজ্য, নির্দেশিকা কেন্দ্রের

দেশ যখন আস্তে-আস্তে স্বাভাবিক হওয়ার পথে, কেন্দ্র যখন বলছে করোনা নিয়েই কাটাতে হবে জীবন তখন রাতে ১২ ঘণ্টার বেনজির কারফিউ জারি হল গোটা দেশে। ১৭ তারিখ পর্যন্ত দেশে জারি ছিল তৃতীয় দফার লকডাউন। রবিবার রাতে নতুন যে গাইডলাইন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জারি করেছে, তাতে লকডাইন ৩১ মে পর্যন্ত শর্তসাপেক্ষ জারি করা হয়েছে। তার মধ্যে সবচেইয়ে গুরুত্বপূর্ণ সন্ধে ৭ টা থেকে সকাল ৭ টা পর্যন্ত কারফিউ জারি থাকবে দেশজুড়ে।
সোমবার সকাল থেকে দেশে শুরু হয়ে গেল এই নতুন নিয়ম। তা অনুযায়ী সন্ধে ৭ টা থেকে সকাল ৭ টা পর্যন্ত ঘরের বাইরে বেরোনো যাবে না। স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে ১৪৪ ধারার মতো আইনি নোটিস জারি করবে।
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বাড়ি ফিরতে গিয়ে সম্প্রতি পথ দুর্ঘটনার কবলে পড়ছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। দেখা যাচ্ছে, দুর্ঘটনাগুলো ঘটছে মূলত রাতে। চতুর্থ দফার লকডাউন নির্দেশিকায় নাইট কারফিউ জারির বিষয়টি এর সঙ্গে সম্পর্কিত কি, এই প্রশ্ন উঠছে।
এছাড়াও একাধিক নির্দেশিকা রয়েছে চতুর্থ দফার লকডাউনে। কী আছে সেই গাইডলাইনে?

 

কী কী বন্ধ? 

লকডাউন ফোরের গাইডলাইন অনুযায়ী, বন্ধ থাকছে বিমান চলাচল। তবে বিমানের মাধ্যমে জরুরি পরিষেবা, যেমন এয়ার অ্যাম্বুলেন্স চলাচল করতে পারে। আকাশ পথে পণ্য পরিবহণেও ছাড়। তবে সাধারণ যাত্রী পরিবহণ সম্পূর্ণ বন্ধ।
চলবে না সাধারণ ট্রেন, মেট্রো রেল। স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি, কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে। তবে অনলাইনে এই কাজগুলো করা যেতে পারে।
হোটেল, রেস্তরাঁ, লজ বন্ধ। তবে রেস্তরাঁগুলো হোম ডেলিভারি পরিষেবা দিতে পারে।
সিনেমা হল, শপিং মল, জিমন্যাশিয়াম, স্যুইমিং পুল, বিনোদন পার্ক, প্রেক্ষাগৃহ, বার, পাব প্রভৃতি আগের মতোই বন্ধ থাকবে।
দর্শক শূন্য অবস্থায় স্পোর্টস কমপ্লেক্স এবং স্টেডিয়াম খোলা যেতে পারে।
রাজনৈতিক, ধর্মীয় সহ সমস্ত জমায়েত বন্ধ।
প্রার্থনা কেন্দ্র বা মন্দির-মসজিদ-গির্জা আগের মতোই বন্ধ।

 

শর্তসাপেক্ষে কী কী খোলা? 

ক. রাজ্যগুলোর সহমতি সাপেক্ষে এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে বাস চালানো।
খ. জেলার মধ্যে বাস বা প্যাসেঞ্জার ভেহিকেলের শর্তসাপেক্ষে যাতায়াত।
কোনটা রেড জোন, কোনটা গ্রিন বা অরেঞ্জ, তা নিয়ে এতদিন কেন্দ্র-রাজ্য বিভ্রান্তি ছিল। এবার গাইডলাইনে তা ঠিক করার ভার রাজ্যগুলোর হাতেই তুলে দিয়েছে কেন্দ্র। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নির্দেশিকা মেনে তা করতে পারবে রাজ্যগুলো।
কনটেইনমেন্ট জোনে কেবলমাত্র জরুরি পরিষেবার অনুমতি মিলবে। সেখানে বাড়ি বাড়ি নজরদারি ও কন্টাক্ট ট্রেসিংয়ের কাজ লাগাতার চালিয়ে যেতে হবে।
লকডাউন ফোরের গাইডলাইনে স্পষ্ট বলা হয়েছে, ৬৫ বছরের বেশি বয়সী মানুষ, সন্তানসম্ভবা মহিলা এবং ১০ বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের ঘরের মধ্যেই থাকতে হবে। একমাত্র জরুরি প্রয়োজন এবং স্বাস্থ্যের প্রয়োজন ছাড়া তাঁরা বাইরে বেরোতে পারবেন না।

এদিকে সোমবার সকালে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের জারি করা তালিকায় দেখা যাচ্ছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে মোট ৫,২৪২ জন করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন। যা বিগত দিনের তুলনায় সবচেয়ে বেশি। সারা দেশে করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা গিয়ে পৌঁছল ৯৬,১৬৯ এবং মৃত ২০২৯।

Comments are closed.