২০২০ অর্থ বছরে ছাপা হয়নি একটিও ২ হাজারের নোট, ব্যাপক কাটতি বৃদ্ধি ৫০০ টাকার নোটের, বলছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বার্ষিক রিপোর্ট
নোটবন্দির সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করেছিলেন, ৫০০ ও হাজারের পরিবর্তে আসছে নয়া ২ হাজারের নোট। প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, নয়া নোটে শূন্য হবে দুর্নীতি-কালোবাজারি। তালা পড়বে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে। পিঙ্ক রঙা ২ হাজারি নোট নিয়ে কার্যত তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল দেশে। কোনও সংবাদমাধ্যম তাতে মাইক্রো চিপ থাকার দাবি পর্যন্ত করে বসেছিল। কিন্তু আরবিআইয়ের সর্বশেষ বার্ষিক রিপোর্ট বলছে গত ১ বছরে দেশে একটিও ২ হাজারের নোট ছাপাই হয়নি!
আরবিআইয়ের বার্ষিক রিপোর্ট বলছে, এ বছর মার্চে শেষ হওয়া আ্রর্থিক বছরে ২ হাজার টাকার নোটের সংখ্যা এবং মূল্যমান কমেছে। অথচ বাজারে কাটতি বেড়েছে ৫০০ টাকার নোটের। রিপোর্টে আছে, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে একটিও ২ হাজারের নোট ছাপা হয়নি। যেখানে ১২০০ কোটি ৫০০ টাকার নোট ছাপা হয়েছে। ২০১৮-১৯ আর্থিক বছরে শেষবার ৫ কোটি ২০০০ টাকার নোট ছেপেছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।
কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের হিসেব থেকে জানা যাচ্ছে, ২০১৯ সালে মার্চে বাজারে থাকা ৩২,৯১০ লক্ষ ২ হাজার টাকার নোটের মূল্যমান ছিল ৬,৫৮,১৯৯ কোটি টাকা। যা ২০২০ সালের মার্চে এসে দাঁড়ায় ২৭,৩৯৮ লক্ষ নোট, যার মূল্যমান ৫,৪৭,৯৫২ কোটি টাকা। বর্তমানে বাজারে থাকা কারেন্সি নোটের ক্ষেত্রে ২ হাজার টাকার নোটের অংশীদারি এসে ঠেকেছে ২২.৬ শতাংশে। যা ২০১৯ সালে ছিল ৩১.২ শতাংশ এবং ২০১৮ সালে তা ছিল ৩৭.৩ শতাংশ। অর্থাৎ ২ হাজার টাকার নোটের ব্যাপক অবমূল্যায়ন হয়েছে।
অন্যদিকে ৫০০ টাকার নোটের রমরমা বেড়েছে তাৎপর্যপূর্ণ হারে। ২০১৯ সালে বাজারে ৫০০ টাকার নোট ছিল ১০.৭৫ লক্ষ কোটি টাকার। ২০২০ সালে তা বেড়ে হয়েছে ১৪.৭২ লক্ষ কোটি টাকা। একইভাবে ২০১৯ সালে বাজারে ছিল ২,১৫,১৭৬ লক্ষ ৫০০ টাকার নোট। ২০২০ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২,৯৪,৪৭৫ টিতে। সামগ্রিকভাবে কারেন্সি মার্কেটে বেড়েছে ৫০০ টাকার নোটের অংশীদারি। ২০১৯ সালে বাজারে মোট ব্যাঙ্ক নোটের ৫১ শতাংশ ছিল ৫০০ টাকার। এক বছর পর বাজারে সামগ্রিক ব্যাঙ্ক কারেন্সির মধ্যে ৫০০ টাকার নোটের অংশীদারি বেড়ে হয়েছে ৬০.৮ শতাংশ।
ঢাক ঢোল পিটিয়ে যে ২ হাজারের নোট বাজারে আনা হল, আচমকা তা ছাপা বন্ধ হল কেন? তাহলে কি ফের নোটবন্দির পথে যাবে কেন্দ্র? আরবিআইয়ের বার্ষিক রিপোর্টে সেই প্রশ্নের উত্তর নেই।
Comments are closed.