নাতনির বিয়েতে ৭ অক্সিজেন সিলিন্ডার দান, অভিনব উপহার ঠাকুমার
নাতনির বিয়েতে অক্সিজেন সিলিন্ডার ও চাল দান ঠাকুমার
নাতনির বিয়ে বলে কথা। কী উপহার দিয়ে নাতনিকে চমকে দেওয়া যায়, ভাবতে বসেছিলেন অশীতিপর বৃদ্ধা। অনেক ভেবেচিন্তে নাতনি সুইটির বিয়ে উপলক্ষে স্থানীয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, থানা ও ক্লাবের হাতে সাতটি অক্সিজেন সিলিন্ডার ও ৭০ জন শ্রমিক পরিবারের হাতে চালের বস্তা তুলে দিলেন ঠাকুমা নিভারানি মজুমদার।
গত মঙ্গলবার ছিল জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ির আনন্দপুরের বাসিন্দা সজল মজুমদারের মেয়ে সুইটির বিয়ে। সেই বিয়ের অনুষ্ঠানে সজলবাবুর মা নিভারানি মজুমাদারের ইচ্ছেয় আলাদাভাবে একটি মঞ্চ তৈরি করেন তিনি। সেখানে ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালের আধিকারিকদের হাতে দুটি অক্সিজেন সিলিন্ডার তুলে দেন ওই বৃদ্ধা। তাছাড়া স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতি, থানা, ক্লাব কর্তৃপক্ষ, সব মিলিয়ে মোট সাতটি অক্সিজেন সিলন্ডার দান করেছেন নিভারানি দেবী।
শুধু তাই নয়, নাতনির বিয়ে উপলক্ষে ৭০ টি শ্রমিক পরিবারের হাতে পাঁচ কুইণ্টাল চালও তুলে দেন সুইটির ঠাকুমা। পাত্রী সুইটি মজুমদার ও পাত্র কঙ্কন বিশ্বাস তাঁদের বিয়েতে ঠাকুমার এমন অভিনব উপহারে আপ্লুত। সুইটির কথায়, এটা আলাদা ধরনের তৃপ্তি। এই অভিনব উপহার নিয়ে কী বলছেন ঠাকুমা? নিভারানি দেবীর কথায়, ছেলেকে বলেছিলাম, নাতনির বিয়েতে দুঃস্থদের জন্য কিছু করব। কোভিড পরিস্থিতি আমাদের নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছে। আমার ছেলে কথা রেখেছে। লক্ষাধিক টাকা সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। ময়নাগুড়ির মানুষ এই অক্সিজেন সিলিন্ডারগুলো প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারবেন। মানুষের জন্য এটুকু করতে পারে আমি দারুণ খুশি।
নিভারানি দেবীর ছেলে সজলবাবুর একটি মুদিখানার দোকান রয়েছে। তাঁর কথায়, মেয়ের বিয়েতে এরকম কিছু একটা করব এই ইচ্ছে মা ও আমার বহুদিন আগেই ছিল। বর্তমান পরিস্থিতিতে মানুষের জন্য কিছু করতে পেরে আমরা ভীষণ খুশি।
এই বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালের বিএমওএইচ, ময়নাগুড়ির বিডিও, পঞ্চাইয়েত সমিতির সভাপতি প্রমুখ। বিডিও শুভ্র নন্দীর কথায়, বিয়ের অনুষ্ঠানে এমন উদ্যোগ আগে কখনও দেখিনি। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শিবম রায়বসুনিয়া বলেন, এই বিয়েতে না এলে খুব ভুল করতাম। এমন উদ্যোগ নেওয়ার জন্য শ্রদ্ধা জানাই নিভারানি মজুমদারকে।
Comments are closed.