অর্থনীতির মানদণ্ডে ভারতকে ছাপিয়ে যেতে চলেছে বাংলাদেশ! মাথাপিছু জিডিপির বিচারে করোনা কালে নয়া দিল্লিকে টেক্কা দিয়ে এগিয়ে যাবে ঢাকা। মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার বা IMF ৩১ মার্চ, ২০২১ পর্যন্ত বর্তমান অর্থবর্ষে ভারতে মাথাপিছু ডিজিপির হার ১০.৩ শতাংশ সঙ্কোচনের পূর্বাভাস দিয়েছে। তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাপার হল, প্রতিবেশী বাংলাদেশের অর্থনীতি একই সময় বৃদ্ধির পথে এবং তা ভারতকে পিছনে ফেলে দিচ্ছে। IMF জানাচ্ছে, বর্তমান অর্থ বছর শেষে শেখ হাসিনার দেশের অর্থনীতি ৩.৮ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাবে।
এই অর্থ বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে ভারতের জিডিপি তলানিতে পৌঁছে প্রায় ২৪ শতাংশ সঙ্কুকিত হয়েছে। বাকি সময়ের জন্যও পূর্বাভাস বিশেষ আশাপ্রদ নয়। এই পরিস্থিতিতে আগামী অর্থবর্ষে হাল ফেরার আশা করছে বিশ্ব অর্থনীতি। IMF জানাচ্ছে, ২০২১ সালে ভারত ফিরবে বৃদ্ধির হাইওয়েতে। জিডিপি পৌঁছবে পজিটিভ ৮.৮ শতাংশে, যা চিনের চেয়েও বেশি। কিন্তু এ বছরের পূর্বাভাস মোটেও স্বস্তিজনক নয়।
মঙ্গলবার প্রকাশিত ওয়ার্ল্ড ইকনমিক আউটলুকে IMF জানিয়েছে, এই অর্থ বছরে (যা শেষ হচ্ছে ২০২১ সালের ৩১ মার্চ) ভারতের মাথাপিছু জিডিপি কমে দাঁড়াবে ১,৮৭৭ মার্কিন ডলারে। যেখানে একই সময় বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপির সম্ভাব্য বৃদ্ধি ১,৮৮৮ মার্কিন ডলার।
এই রিপোর্টেই বলা আছে, দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত হতে চলেছে তৃতীয় সবচেয়ে গরিব দেশ। ভারতের পর কেবলমাত্র নেপাল ও পাকিস্তান। বাংলাদেশ, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ভারতের আগে।
রিপোর্টেই আছে বিশ্ব অর্থনীতি এ বছর ৪.৪ শতাংশ হারে সঙ্কোচিত হবে। আগামী বছর তা ৫.২ শতাংশ বৃদ্ধির গতিতে ফিরতে পারে।
অর্থনীতিবিদরা অবশ্য বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়া নিয়ে চিন্তিত নন। তাঁরা বলছেন, ভারতের অর্থনীতির যা বহর, তাতে বৃদ্ধির হাইওয়েতে ঢোকা মাত্রই তা হুহু করে এগোতে শুরু করবে। বাংলাদেশের পক্ষে যা সম্ভব নয়। কিন্তু মাথাপিছু জিডিপিতে বাংলাদেশের ভারতকে পিছনে ফেলা থেকে শেখার আছে অনেক কিছু, এমনটাই বলছেন অর্থনীতিবিদরা। তাঁরা নজর দিচ্ছেন বাংলাদেশের দ্রুত বেড়ে চলা রফতানি ক্ষেত্রের উপর। এই একটি মানদণ্ডে বর্তমানে নয়া দিল্লিকে পিছনে ফেলে দিচ্ছে ঢাকা। এই প্রসঙ্গে একটি পরিসংখ্যান পেশ করছেন অর্থনীতিবিদরা। তাঁরা বলছেন, মাত্র ৫ বছর আগে ভারতের মাথাপিছু জিডিপি বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপির ৪০ শতাংশেরও বেশি ছিল। আজ সেই বাংলাদেশ ভারতকে টপকে গেল স্রেফ রফতানি নীতির উপর ভর করে।
Comments are closed.