রবিবার কলকাতা বন্দরের ১৫০ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মঞ্চে দাঁড়িয়ে সিন্ডিকেট এবং কাটমানি ইস্যুতে রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস সরকারকে কটাক্ষ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
এদিনের অনুষ্ঠানে প্রথমে তিনি কলকাতা বন্দরের ইতিহাস এবং তার গুরুত্ব বর্ণনা করেন। তারপরে তিনি ঘোষণা করেন, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নামে কলকাতা বন্দরের নামকরণ করা হচ্ছে। মোদী বলেন, শ্যামাপ্রসাদের তৈরি অনেক নীতি এবং প্রতিষ্ঠানকে অবহেলা করা হচ্ছে। দেশের কৃষকদের যাতে সাহায্য করা যায় এবং সরাসরি তাঁদের সাহায্যের টাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে দেওয়া যায় সেই উদ্দেশ্যে কেন্দ্রীয় সরকার প্রধানমন্ত্রী কৃষক সম্মান নিধি প্রকল্প চালু করেছে। কিন্তু দেশের অন্যান্য রাজ্যগুলিতে এই প্রকল্প চালু হলেও, পশ্চিমবঙ্গ সরকার এখানে তা চালু হতে দেয়নি। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের না করে তিনি বলেন, ভবিষ্যতে এই রাজ্যে এই প্রকল্প চালু হবে কিনা তিনি তা জানেন না।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, দেশের মানুষের স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতির কথা মাথায় রেখে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প চালু করা হয়েছে গোটা দেশে এবং এই প্রকল্পের টাকা সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে যাচ্ছে। এই প্রকল্পও এ রাজ্যে চালু করতে দেওয়া হয়নি। মোদীর কথায়, এই দুই প্রকল্পের মাঝে কোনও দালাল, সিন্ডিকেটের বা কাটমানির বিষয় নেই, সরাসরি প্রাপকরাই এই টাকা পাচ্ছেন। এরপরেই প্রধানমন্ত্রীর কটাক্ষ, যেখানে কাটমানি এবং সিন্ডিকেটের কথা থাকে না সেই প্রকল্পগুলো চালু করলে মনে হয় লাভ থাকে না! সে কারণেই তা চালু করতে দেওয়া হয় না।
প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের সরাসরি কোনও প্রতিক্রিয়া তৃণমূলের তরফে পাওয়া না গেলেও, ঘুরিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব ট্যুইটার অ্যাকাউন্টে তিনি লিখেছেন, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মত বাঙালির নামে কলকাতা বন্দরের নামকরণ করা হচ্ছে এটা ভালো কথা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী কেন নতুন কোনও বন্দরকেন্দ্রিক প্রকল্প বা বন্দর উন্নয়নের কথা ঘোষণা করলেন না? বলেছেন, নয়া বিনিয়োগ এবং নয়া কর্মসংস্থান যদি হতো তাহলে তা রাজ্যের যুবকদের কাছে যুব দিবসের সেরা উপহার হত। পাশাপাশি, কেন্দ্রের কাছে বিভিন্ন প্রকল্প বাবদ রাজ্যের প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে, সেই টাকা এবং সাইক্লোন বুলবুলের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার জন্য রাজ্যের তরফে কেন্দ্রের কাছে যে ৭ হাজার কোটি টাকা সাহায্য চাওয়া হয়েছে সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী কেন এদিন চুপ ছিলেন সেই প্রশ্নও তুলেছেন অভিষেক।
Comments are closed.