এবার পোস্ট অফিসের গ্রাহকদের জন্য একগুচ্ছ নতুন নিয়ম চালু করল কেন্দ্রীয় সরকার। এখন থেকে পোস্ট অফিসের সেভিংস অ্যাকাউন্টে ন্যূনতম ৫০০ টাকা ব্যালান্স না থাকলে দিতে হবে ১০০ টাকা পেনাল্টি। পাশাপাশি পোস্ট অফিসে নতুন অ্যাকাউন্ট খুলতে গেলে এখন থেকে ন্যূনতম ৫০০ টাকা দিতে হবে। আগে মাত্র ২০ টাকা জমা রেখেই নতুন অ্যাকাউন্ট খোলা যেত।
এছাড়াও পোস্ট অফিসের গ্রাহকদের জন্য কয়েকটি নতুন নিয়ম বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। এনএসসি বা পিপিএফের মতো স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পে কাঠামোগত পরিবর্তন আনা হচ্ছে, তাতে মধ্যবিত্ত গ্রাহকরা বিপাকে পড়বেন বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
কী কী নতুন নিয়ম আসছে পোস্ট অফিসে সঞ্চয়ে?
আগে পোস্ট অফিসে সেভিংস অ্যাকাউন্ট খুলতে মাত্র ২০ টাকা লাগত। এখন তা বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ন্যূনতম ৫০০ টাকায়। অ্যাকাউন্টে কমপক্ষে ৫০০ টাকা না থাকলে ১০০ টাকা পেনাল্টি দিতে হবে। এই নিয়ম আগে ছিল না। তাছাড়া কোনও অ্যাকাউন্টে টাকা না থাকলে তা অচিরে বন্ধ করে দেওয়া হবে। ‘সাইলেন্ট অ্যাকাউন্ট’ অর্থাৎ, যে অ্যাকাউন্টগুলিতে নিয়মিত লেনদেন হয় না, সেগুলোও বন্ধ করে দেওয়া হবে।
পোস্ট অফিসের চেক বই নিতে গেলে প্রথম দশ পাতা বিনামূল্যে মিলবে। তারপর থেকে ২ টাকা করে দিতে হবে প্রতি পাতার জন্য।
পিপিএফে বছরে ৫০০ টাকা জমা না রাখলে সেই অ্যাকাউন্ট ডিসকন্টিনিউড হিসেবে চিহ্নিত হবে। সেই অ্যাকাউন্ট বন্ধ না করে নতুন অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন না সংশ্লিষ্ট গ্রাহক। তারপরও ৫০ টাকা ডিফল্ট ফি দিতে হবে।
আগে পোস্ট অফিসে মান্থলি ইনকাম স্কিমে ১০০ টাকা ও তার গুণিতকে টাকা রাখা যেত। এখন এক ধাক্কায় তা বেড়ে হচ্ছে ১ হাজার টাকা। টাইম ডিপোজিটের ক্ষেত্রেও আগে যেখানে ন্যূনতম ১০০ টাকা জমা করা যেত, এখন তা হয়ে যাচ্ছে ১ হাজার টাকা।
পোস্ট অফিসে রেকারিং ডিপোজিটের ক্ষেত্রে আগে ১০ টাকায় অ্যাকাউন্ট খুলতে পারতেন গ্রাহকরা। তা এখন ১০০ টাকা করা হচ্ছে। আগে যেখানে পাঁচ টাকার গুণিতকে টাকা জমা করা যেত এখন থেকে হচ্ছে ১০ টাকা।
আগে ন্যাশনাল সেভিংস সার্টিফিকেট (এনএসসি) কেনা যেত ১০০ টাকা থেকে। এবার তা শুরু হচ্ছে ১ হাজার টাকা থেকে।
গ্রামাঞ্চলের মানুষের বড় ভরসার জায়গা পোস্ট অফিস। ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার চেয়ে বহু মানুষ এখনও ডাকঘরের সঞ্চয় প্রকল্পে অনেক বেশি আস্থা রাখেন। কিন্তু সেই পোস্ট অফিসের প্রকল্পগুলিকে এমনভাবে বদলে ফেলা হচ্ছে তাতে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত গ্রাহকদের অসুবিধা বাড়বে। মোদী সরকারের আমলে পোস্ট অফিসে কয়েক দফা সুদ কমানো হয়েছে, এবার নিয়ম বদলের ফলে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়বেন গ্রামীণ মধ্যবিত্তরা।
Comments are closed.