প্রণব মুখোপাধ্যায়ের ভারতরত্ন পাওয়ার অনুষ্ঠান এড়িয়ে গেলেন সনিয়া, রাহুল, মনমোহন! উপস্থিত মোদী সহ বিজেপি নেতৃত্ব

ভারতরত্ন পেলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার তাঁর হাতে সম্মান ফলক তুলে দেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানে গরহাজির সনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী সহ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সহ মন্ত্রিসভার অন্যান্যরা।

ভারতরত্নের জন্য দেশের প্রথম এবং একমাত্র বাঙালি রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের নাম ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই জল্পনা শুরু হয়েছিল। প্রকাশ্যেও এর বিরোধিতা করেছিলেন কেউ কেউ। বিতর্কের শুরুটা ২০১৮ সালের জুন মাসে। ভোটের মুখে আরএসএসের আমন্ত্রণ গ্রহণ করে নাগপুরে সঙ্ঘের সভায় যোগ দিয়ে বক্তৃতা করেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। যা ভালো ভাবে নেয়নি কংগ্রেস। কংগ্রেসের বক্তব্য ছিল, ভোটের মুখে নাগপুরে সঙ্ঘের অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করে আসলে বিজেপিকেই সুবিধে করে দেওয়া হবে। কিন্তু বারণ শোনেননি প্রণব মুখোপাধ্যায়। সেই সময় প্রণববাবুর সমালোচনা করেছিল অন্যান্য বিরোধী দলও। ভারতরত্নের মতো সম্মানের পিছনে রাজনৈতিক অঙ্ক থাকার অভিযোগ করেছিলেন জেডিইউ নেতা দানিশ আলি। নাগপুরে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের সভায় যোগ দেওয়ার জন্যই প্রণব মুখোপাধ্যায়কে এই সম্মান দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছিলেন তিনি। তাৎপর্যপূর্ণভাবে কংগ্রেসের তরফে এই দাবি খণ্ডনও করা হয়নি।

বৃহস্পতিবার ভারতের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ফলক প্রণববাবুর হাতে তুলে দেওয়ার মুহূর্তে অনুপস্থিত ছিলেন সনিয়া-রাহুল। এমনকী দেখা যায়নি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকেও। রাজনৈতিক মহলের অনুমান, নাগপুরে সঙ্ঘের অনুষ্ঠানে যাওয়ার পর থেকেই দলের সঙ্গে দুরত্ব তৈরি হয় প্রণববাবুর। কংগ্রেসের তরফে ভারতরত্ন সম্মান প্রদান অনুষ্ঠানে গরহাজির থেকে সেই দুরত্বের বার্তাই আরও স্পষ্ট করে দেওয়া হল, বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।

তবে ভারতরত্ন সম্মান প্রদান অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, উপ রাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নায়ডু, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ প্রমুখ। হাজির ছিলেন বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণীও। কংগ্রেসের তরফে পাঠানো হয়েছিল আনন্দ শর্মা, শশী থারুর, সুস্মিতা দেবদের, যাঁরা ধারে ও ভারে কেউই মনমোহন-রাহুল-সনিয়ার কাছাকাছি নন।

বৃহস্পতিবার প্রণব মুখোপাধ্যায়ের পাশাপাশি প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পী ভূপেন হাজারিকা এবং আরএসএসের প্রয়াত নেতা নানাজি দেশমুখকেও ভারতরত্ন সম্মানে ভূষিত করা হয়।

Comments are closed.