প্রয়াত প্রণব মুখার্জি, দিল্লির সেনা হাসপাতালে জীবনাবসান, বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর

প্রয়াত প্রণব মুখার্জি। বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। কিছুদিন আগেই বাড়িতে পড়ে গিয়ে মাথায় চোট পেয়েছিলেন। তারপর তাঁকে ভর্তি করা হয় দিল্লির আর আর হাসপাতালে। সেখানে মাথায় অস্ত্রোপচারের আগে তাঁর কোভিড টেস্ট হলে, সেখানেও পজিটিভ আসে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। চলে গেলেন প্রথম বাঙালি রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি।

বর্ণময় জীবন বাঙালি রাজনীতিবিদ প্রণব মুখার্জির। ১৯৩৫ সালের ১১ ডিসেম্বর বীরভূমের মিরিটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন প্রণব মুখার্জি। তারপর দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হন তিনি। চাকরি করেছেন স্কুল শিক্ষকতার, অধ্যাপনাও করেছেন। তারপর পুরোদস্তুর রাজনীতিতে ডুব দেন। ইন্দিরা গান্ধী থেকে শুরু করে রাহুল গান্ধী, কংগ্রেসের প্রায় প্রতিটি প্রজন্মকেই চোখের সামনে দেখেছেন প্রণব বাবু। ছিলেন অর্থমন্ত্রীর মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে। সামলেছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্বও। কংগ্রেসের ক্রাইসিস ম্যানেজার প্রণব মুখার্জি দেশের রাষ্ট্রপতি হন ২০১২ সালে। ২০১৭ সালে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন। ২০১৮ সালে প্রণব বাবু হাজির হয়েছিলেন আরএসএসের সদর দফতর নাগপুরে। সেখানে বক্তৃতাও করেন। তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। সেই ঘটনার পর থেকেই কংগ্রেস প্রণববাবুর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করতে শুরু করে। এমনকী কদিন আগে প্রণব মুখার্জি যখন অসুস্থ হয়ে আরআর হাসপাতালে ভর্তি হন, সেদিন রাহুল গান্ধী ট্যুইট করে সুস্থতা কামনা করেছিলেন ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির।

তবে রাজনৈতিক জীবনে থাকাকালীন প্রণব মুখার্জি ছিলেন ডান-বাম সব শিবিরেরই ভরসার লোক। কংগ্রেসের ক্রাইসিস ম্যানেজার প্রণববাবু ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতিও। একটা সময় কংগ্রেস ছেড়ে পৃথক দল তৈরি করলেও পরবর্তীতে কংগ্রেসেই ফেরেন তিনি। ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পর্বে কংগ্রেস-তৃণমূল জোটের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন প্রণব মুখার্জি। গত বছর তাঁকে দেশের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ভারতরত্ন দেওয়া হয়।

Comments are closed.