অস্ট্রেলিয়ায় কারমাইকেল কয়লা খনি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই পরিবেশ কর্মী ও স্থানীয় আদিবাসীদের সঙ্গে বিবাদ চলছে আদানি গোষ্ঠীর। এবার সামনে এল আরও এক চাঞ্চল্যকর খবর। প্রকল্পে বাধাদানকারী পরিবেশকর্মীদের অন্যতম বেন পেনিংসের পরিবারের উপর নজর রাখতে বেসরকারি গোয়েন্দা নিয়োগ করেছিল গৌতম আদানির সংস্থা! কিন্তু কী কারণে নজরদারি?
অস্ট্রেলিয়ান পরিবেশকর্মী বেন পেনিংসের নয় বছরের মেয়ে স্কুলে যাচ্ছে। স্কুল পর্যন্ত তার পিছু নিয়ে ছবি তোলা হয়েছে। সমাজকর্মীর স্ত্রীর ফেসবুকে নিয়মিত ট্রোল করা হচ্ছে, নজরে রাখা হচ্ছে তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ায় গতিবিধি। আর গোটা ঘটনা ঘটেছে সবার চোখের আড়ালে। এভাবেই অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডে আদানিদের কয়লা খনির বিরুদ্ধে সরব হওয়া সমাজকর্মী ও তাঁর পরিবারের গতিবিধির উপর নজর রাখত আদানি গোষ্ঠী নিযুক্ত প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটর। চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে আদালতে জমা দেওয়া নথি থেকে!
অস্ট্রেলিয়ার কারমাইকেল প্রোজেক্টের বিরুদ্ধে প্রচার চালানো, কাজে হস্তক্ষেপ এবং ষড়যন্ত্রের অভিযোগে আগেই পরিবেশকর্মী বেন পেনিংসের বিরুদ্ধে মামলা করেছে আদানি গোষ্ঠী। সেই মামলার শুনানি চলাকালীন তাঁর পরিবারের পিছনে গোয়েন্দা লাগানো হয়েছিল বলে জানা যাচ্ছে।
(আদালতে জমা দেওয়া ছবি)
The Guardian এ প্রকাশিত প্রতিবেদন বলছে এই মামলায় আদানিদের আইনজীবীর নির্দেশে সমাজকর্মী ও তাঁর পরিবারকে চোখে চোখে রাখেন এক প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটর। গোপনে তোলা হোত তাঁদের ছবি। আদালতে সে কথা নিজেই জানিয়েছেন প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটর গ্যারি অ্যান্ডু স্যুইট। The Guardian এ প্রকাশিত ওই খবরে আরও জানানো হয়েছে, সম্প্রতি অজি সমাজকর্মীর বাড়িতে তল্লাশি চালাতে কুইন্সল্যান্ড সুপ্রিম কোর্টের কাছে অনুমতি চায় আদানি গোষ্ঠী। যা পত্রপাঠ খারিজ করে দেয় আদালত। তারপরই গোয়েন্দা লাগিয়ে সমাজকর্মীর স্ত্রী, সন্তানের ঠিকুজি জোগাড় করে ফেলে আদানি গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্বকারী ল’ ফার্ম। গোটা মে মাস জুড়ে চলে পরিবেশকর্মীর পরিবারের উপর নজরদারি। আদালতে হলফনামায় জানিয়েছে প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটর সংস্থাটি। জমা দেওয়া হয়েছে সমাজকর্মীর স্ত্রী-কন্যার ছবিও। কিন্তু কী উদ্দেশ্যে এই নজরদারি? আদানি গোষ্ঠী কি এই নজরদারিতে সম্মতি দিয়েছিল? গার্ডিয়ানকে জবাব দেয়নি গৌতম আদানির সংস্থা।
পড়ুন: আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে এবার অস্ট্রেলিয়ায় আদিবাসীদের বিক্ষোভ! কয়লাখনির জমি অধিগ্রহণের বিরোধিতা
এদিকে গোয়েন্দা লাগিয়ে তাঁর পরিবারের উপর নজরদারির খবর প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বেন পেনিংস। অভিযোগ করেছেন আদানি গোষ্ঠী ও কুইন্সল্যান্ড সরকারের আঁতাত নিয়েও। তাঁর স্ত্রীর আশঙ্কা, হয়ত এবার বাড়িতে তল্লাশি চালানো হবে। কিংবা, রাস্তায় বেরলেই গোপনে তোলা হবে তাঁদের ছবি।
Comments are closed.